তুরস্কঃ অনশন ধর্মঘটীদের প্রতি নিরবতায় কুর্দিরা ক্ষুব্ধ

তুরস্কের শত শত কুর্দি রাজবন্দী অনির্দিষ্টকালের জন্য এক অনশন ধর্মঘট শুরু করেছে। এই অহিংস বিক্ষোভ আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম এবং মানবাধিকার কর্মীদের নজরে এড়িয়ে গেছে। একজন একটিভিস্ট, এই বিক্ষোভের ঘটনায় আওয়াজ তুলেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, অনশন ধর্মঘটকারীরা দাবিগুলো হচ্ছে:

@হেভালো: কুর্দিশ ওয়ার্কাস পার্টির (পিকেকে)-এর বিদ্রোহী কুর্দি নেতাদের মুক্তি প্রদান, যাতে তারা শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে পারে।

@হেভেলো:জনসম্মুখে কুর্দি ভাষা ব্যবহারের স্বাধীনতা প্রদান।

@হেভেলো: তুরস্কের কুর্দিদের রাজনৈতিক পুনর্বাসন প্রশ্নের মুখে।

অনশন ধর্মঘট শুরু হবার পর ইতোমধ্যে ৪০ দিন পার হয়ে গেছে এবং অনশন ধর্মঘটরত কারাবন্দী আর তাদের দাবী সম্বন্ধে প্রচার মাধ্যমে খুব খুব সামান্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আল জাজিরার দি স্ট্রিম এই অনশন ধর্মঘটের কিছু উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রদর্শন করেছে, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি সাড়া প্রদান করা অন্য সব প্রচার মাধ্যম এই ঘটনায় নিশ্চুপ থেকেছে।

সুইডিশ লেফট পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্যরা এই অনিদৃষ্ট ধর্মঘটের সাথে যোগ দিয়েছে, যা ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে তুরস্কের কুর্দি রাজবন্দীরা শুরু করেছে।

গ্লোবাল টাইমস সংবাদ প্রদান করেছে যে তুরস্কের মূলধারার সংবাদপত্র এই অনশন ধর্মঘট সম্বন্ধে সংবাদ প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের অভিযোগের আশঙ্কায় শঙ্কিত।

তুরস্কের প্রচার মাধ্যমে আরো যে বিষয়টি অপমানজনক, সেটি হচ্ছে মূলধারার কোন সংবাদ মাধ্যমে এই ঘটনাটিকে তুলে ধরেনি। কেউ একজন দাবী করতে পারে যে তুরস্কের বেশীর ভাগ জনতা এই অনশন ধর্মঘট সম্বন্ধে সচেতন নয়। সরকার, সাংবাদিকদের প্রথমে হুমকি প্রদান করে এবং এরপর তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনে, যদি তারা মানবাধিকার বিষয়, আরো বিশেষ করে কুর্দি সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিয়ে সংবাদ প্রদান করে।

এই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় কুর্দ নাগরিকদের ক্ষুব্ধ করেছে। নেচিরিয়ান বলছে, কুর্দিদের নিয়ে কেউ ভাবে না। সায়া প্রশ্ন করেছে রাজনৈতিক বন্দীদের অনশন ধর্মঘটের সংবাদের বিষয়ে প্রচার মাধ্যম সৃষ্ট শূন্যতা পূরণে সেই সমস্ত কার্যক্রম কোথায়?

সম্প্রতি লেবানন নিউজে এই অনশন ধর্মঘট সম্বন্ধে রাফায়েল তেহলান একটি প্রবন্ধ লিখেছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন:

কুর্দিরা হচ্ছে এক বিস্মৃত এক জাতি। বলা যায় তারা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্রহীন জাতি। তারা দশকের পর দশক ধরে সামাজিক, সংস্কৃতি এবং জাতীয় অধিকারের জন্য লড়াই করছে। কিন্তু বেশীর ভাগ সময় কেউ এই বিষয় নিয়ে ভাবেনি। সম্প্রতি কুর্দিশ ওর্য়াকার্স পার্টি (পিকেকে) তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ শুরু করেছে যা কিনা খবরের শিরোনামে পরিণত হয়েছে। যেমনটা সাংবাদিকরা বলে থাকেন, যা আসলে রক্ত ঝরায় তা হচ্ছে শিরোনামগুলো।

মূল ধারার সাংবাদিক এবং প্রচার মাধ্যমের সংবাদ না থাকা সত্ত্বেও, সাধারণ কুর্দিরা টুইটার, ফেসবুক এবং অন্য সব সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ব্যবহার করেছে এই অনশন ধর্মঘট সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য, যেটিকে অনেকে পিকেকে বিদ্রোহী নেতাদের ভবিষ্যতের প্রতি মৌলিক ধারণা হিসেবে বিবেচনা করছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .