অ্যাঙ্গোলা: ভোটারদের নিরবতাও কথা বলে

নির্বাচনের দিন (৩১শে আগস্ট,২০১২) অ্যাঙ্গোলা থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে জানা যায় যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভোটের সময় কোন গুরুতর অনিয়ম হয় নি। যদিও অনেক নাগরিক প্রকৃত ভোটদানের সমস্যা, নিবন্ধীকৃত পর্যবেক্ষক গণের সমস্যা, ভুল ভোট কেন্দ্রে জনগণকে নিয়োজিত করা, ব্যালট বাক্স জালিয়াতি করা ইত্যাদি নানা সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। নিচের নিবন্ধে সেগুলো তুলে ধরা হল।

নির্বাচনের প্রাক্কালে গ্লোবাল ভয়েসেস তার প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা এবং ভোটের সাথে সম্পর্কিত সংগঠনের বিষয়ে গুরুতর সন্দেহ প্রকাশ করেছিল যার ফলশ্রুতিতে ভোটারদের মধ্যে ভোট প্রদানের বিষয়ে ঔদাসীন্য পরিলক্ষিত হয়। এম সি কে-এর সমালোচনামূলক র‍্যাপ সঙ্গীত ও সাইলেন্সিও ট্যাম্বেম ফালা (নিরবতাও কথা বলে) [পর্তুগীজ] তে ভালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

অ্যাঙ্গোলান টিভিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পাঠ করা ফলাফল অনুযায়ী প্রায় ১০ মিলিয়ন ভোটারের ৫৭% ভোট প্রদান করেছে, যে ২০০৮ সালের ভোটদানের হার থেকে কম। ঐ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮৭% (কোন কোন প্রদেশে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকার অংক ৭৫% এর ও বেশি [পর্তুগীজ] ছিল। প্রাদেশিক ফলাফলে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকার উচ্চ মাত্রা পরিলক্ষিত হয় এঙ্গোলার রাজধানী লুয়ান্ডায়।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে [পর্তুগীজ] হোসে এডোয়ারডোর ক্ষমতাসীন দল এমপিএলএ পেয়েছে ৭৪.৪৬% ভোট, ইউনিটা ১৭.৯৪% , এবং সিএএস এ- সিই ৪.৫৩%।

সংগঠনের বিষয়ে অভিযোগ, জালিয়াতির অভিযোগ:

প্রতিবেদনে জানা যায় কোন কোন দূরবর্তী নির্বাচন কেন্দ্র সকালের দিকে ছিল খুবই নিরব এমনকি মানব বর্জিত। লুয়ান্ডার বিমানবন্দরের কাছের একটি নির্বাচনী কেন্দ্রে নাগরিক প্রতিবেদক এইচ কোরোয়াডো হতাশ ভোটারদের দৃশ্য চিত্রায়িত করেন- সেখানে সকাল ৭টায় ভোটকেন্দ্র চালু হলেও ১০টা পর্যন্ত অনেকেই ভোটদান করতে পারেন নি। অনেকেই ভোর ৬ টায় সেখানে উপস্থিত হন। নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটারদের জানান যে তাদের “উপকরনের অভাব” আছে।

এস এম এস ও ইমেইলের মাধ্যমে এলিকোএস এঙ্গোলা [পর্তুগীজ] নামের ওয়েব সাইটে ভোটাররা জানিয়েছে যে তাদেরকে দূরবর্তী ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছেঃ

A Rádio Nacional de Angola relatou que na Huíla, um jovem não votou porque o nome dele não saiu na mesma província e veio sair em Luanda, e segundo o jovem: não conhece Luanda.

ন্যাশনাল রেডিও অব এঙ্গোলার প্রতিবেদনে জানা যায় যে হুইলাতে একজন তরুণ ভোট দান করতে পারেন নি কারন তাঁর নাম ঐ প্রদেশে অন্তর্ভুক্ত না করে লুয়ান্ডাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, ঐ তরুণের মতে তিনি লুয়ান্ডা চেনেন না।
Polling station in Benguela. Photo by Jesse Lufendo on Facebook

বেনগুইয়েলার ভোটকেন্দ্র। ছবি- জেসে লুফেন্দোর ফেসবুক (অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত)

একই ওয়েবসাইটে ব্যালট বাক্সে সম্ভাব্য জালিয়াতি ও অন্যান্য অনিয়মের বিষয় উপস্থাপন করা হয়ঃ

Agentes não identificados que se faziam acompanhar num carro de marca toyota com a matricula ld 64-69 ea que se fizeram a escola 9064 estão a carregar as urnas para local incerto. Chegaram ao local e depois de conversar com a policia presente no local e o presidente da mesa lhes foi permitido o acesso a partir da porta dos fundos, estou a testemunhar isso agora e é muito grave. Joaquim Pereira, Grafanil

অজ্ঞাত প্রতিনিধিরা টয়োটা ৬৪-৬৯ গাড়িতে চড়ে ৯০৬৪টি বিদ্যালয়ে আসে এবং অজ্ঞাত স্থানে ব্যালট বাক্স নিয়ে যায়। তাঁরা দৃশ্যপটে এসে  সেখানে উপস্থিত পুলিশের সঙ্গে কথা বলে, ঐ কেন্দ্রের সভাপতি তাদের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেয়, আমি এখন এটা দেখছি এটা খুবই গুরুতর। জ্যাকুইম পেরেইরা, গ্রাফানিল।
Rapper Luaty Beirão after voting. Photo by Pedrowski Teca on Facebook

ভোটের পর র‍্যাপ গায়ক লুয়াটি বেইরাও। ছবি- পেদ্রোস্কি টেকার ফেসবুক থেকে

ভোট প্রদানের প্রমাণ স্বরূপ নেট নাগরিকরা তাঁদের কালি লাগানো আঙ্গুলের ছবি টুইটারফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

দেশের কোন কোন ভোট কেন্দ্রে প্রত্যাশিত সময়ের আগেই ভোটদান শেষ হয়ে যায়। যে জায়গাগুলোতে বিদ্যুৎ ছিল না সে জায়গাগুলোতে মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফ্ল্যাশ লাইট ও মোবাইল ফোনের আলো দিয়ে ভোট গণনা করা হয়।

ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাস্টেলো পেড্রো লিখেন [পর্তুগীজ]:

A falta de luz nas assembleias de votos é uma grande verdade, quase em todo país, porque eu acabo de chegar em casa estive a trabalhar como delegado e onde trabalhei havia mais de 40 mesas e os votos terminaram às 17 horas por falta de luz.

বড় সত্য হল দেশের প্রায় সবখানের ভোট কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুতের অভাব ছিল, কারন আমি এই মাত্র বাড়ি ফিরলাম, একজন প্রতিনিধি হিসাবে আমি কাজ করেছি এবং আমার কর্মক্ষেত্রে ৪০ টিরও বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল যেখানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে বিকাল ৫ টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়ে যায়।

পর্যবেক্ষকের অপর্যাপ্ততা

সাংবাদিক বারনাবি ফিলিপস (@বারনাবিফিলিপস) টুইটারে মন্তব্য করেন যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কেবল সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমুনিটি (এস এ ডি সি) এর ৪ জন পর্যবেক্ষক এঙ্গোলার ১৮ টি প্রদেশের জন্য নিযুক্ত ছিল। আরেকজন সাংবাদিক লুইস রেডভারস (@লুইসরেডভারস) টুইট করেনঃ

আজ লুয়ান্ডায় ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে কোন এসএডিসি বা এইউ পরযবেক্ষককে দেখলাম না।

তিনি বলেন:

ইউনিটা মুখপাত্র আমাকে বলে যে প্রায় ১,০০০ জন দলের প্রতিনিধি ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণের জন্য কোন অনুমতিপত্র পায় নি। #এঙ্গোলা

ইউরোপীয় সংসদ সদস্য আনা গমেজ তাঁর নিজের ব্লগ কউসা নোসসা ( আমাদের কারন) এ লিখেন [পর্তুগীজ] যে “ঝুকি নিয়ে অ্যাঙ্গোলা গিয়ে কোন মানেই হয় না কেননা শুরু থেকেই এ প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রত্যাশিতভাবে দ্বিধা- দ্বন্দ্ব ছিল”:

Sendo as missões de observação eleitoral bastante dispendiosas, é entendimento do PE que só vale a pena enviá-las (a par de outras acções de apoio democrático) a países onde há, da parte das autoridades e forças da oposição, real motivação para um genuíno processo de transição ou consolidação democrática. (…) a UE concluiu, pela experiência de 2008 e posterior atitude governamental, que não havia nas autoridades angolanas vontade de ter observação independente

যদিও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন অনেক ব্যয় সাপেক্ষ তারপরেও ইপি [ইউরোপীয় পার্লামেন্ট] উপলব্ধি করে যে  দেশগুলোতে তাঁদের সেখানে পাঠানো ( অন্যান্য গণতান্ত্রিক সমর্থনসহ), যে দেশগুলোতে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী শক্তি, গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য প্রকৃত প্রণোদনা থাকলেই কেবল তা অর্থবহ হতে পারে। (…) ই ইউ পরিশেষে বলে যে ২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপে এঙ্গোলান কর্তৃপক্ষের স্বাধীন পর্যবেক্ষণের অনিচ্ছাই প্রকাশ পায়।

এসএডিসি পর্যবেক্ষক ও তাঞ্জানীয় বিদেশ মন্ত্রী বার্নার্ড মেম্বে (@বারনারডমেমবে) ভোটের সময় টুইট করে বলেন যে এসএডিসি আগামী ২ তারিখ রবিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। (এসএডিসি ২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রশংসা করে, যা ই ইউ এর সমালোচনার শিকার হয়)

এ পোস্টে ভানিয়া নেগ্রাও অবদান রাখেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .