প্যালেস্টাইন: ঊর্ধ্বমূল্য ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ

প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডে প্রতিবাদ গড়ে উঠছে, বিশেষ করে এর পশ্চিম তীরে অবস্থিত হেবরন, রামাল্লাহ, বেথেলহেম এবং নাবলুস এর মতো বড় শহরগুলোতে। বিক্ষোভকারীরা জীবনধারণের ঊর্ধ্বমূল্য ও প্যালেস্টাইন তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি নিয়ে প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ ঘোষনা করেছিলো যে পশ্চিম তীরে জ্বালানী ও পেট্রলের দাম সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে শতকরা ৮ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। এ ঘোষনার পরই আন্দোলন শুরু হল। অতঃপর সবকিছুর দাম দ্রুত বেড়ে গিয়েছিল, যদিও ফিলিস্তিনিদের বেতন ও মজুরি তেমন বাড়েনি।

আবান ইদ্রীস হেবরনে একটি আন্দোলন দেখেছেন এবং টুইটারে লিখেছেন যে [আরবী]:

@abanidrees: في مدينة الخليل شلل تام في حركةالمرور بعد إحتجاجات اليوم ضد الغلاء والمطالبة بإسقاط حكومة فياض حيث لا تكاد سيارة تتحرك في الشارع
জীবনধারণের উচ্চমূল্যের বিরুদ্ধে ফায়্যাদ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনের পর হেবরনের ট্রাফিক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। রাস্তায় গাড়িগুলো একেবারেই নড়ছিল না।

ব্লগার ওলা আল তামিমি ও হেবরন থেকে টুইটারে লিখেছিলেন [আরবী]:

@OlaAlTamimi: شارع عين سارة أكبر شوارع الخليل مغلق بالشاحنات وأجساد الناس .. وبدأت بعض الناس بالتحرك باتجاه مقر الأمن الوطني ومبنى المحافظة
হেবরনের সবচেয়ে বড় সড়ক আইন সারাহ এখন ট্রাক ও মানুষে বোঝায়। কিছু বিক্ষোভকারী জাতীয় নিরাপত্তা সদরদপ্তরগুলো ও পৌরসভা ভবনের দিকে যেতে শুরু করেছে।

ওলা বলেছেন [আরবী]:

@OlaAlTamimi:أول مرة بتاريخ الخليل بتصير مظاهرة وما في حدا بنضرب من أجهزة الأمن الوقائي
হেবরন শহরে এই প্রথম একটি আন্দোলন হলো যেখানে কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মার খায়নি।

আন্দোলনে সক্রিয় একজন প্যালেস্টাইন শিল্পী হাফেয ওমর টুইটারে লিখেছিলেন [আরবী]:

@hafezomar:لأول مرة منذ العام ١٩٣٦ يتظاهر الفلسطينيون من أجل لقمة العيش!! العار لمن يريدنا أن ننسى فلسطين جريا وراء رغيف الخبز…

১৯৩৬ এর পর এই প্রথম ফিলিস্তিনিরা জীবনধারণের ব্যয় নিয়ে আন্দোলনে নামলেন! যারা চায় যে আমরা ভুলে যাই যে আমরা প্যালেস্টাইন ও এক টুকরো রুটির জন্য আন্দোলনের কথা, তাদের ধিক…।

প্যালেস্টাইন প্রতিবাদকারীরাও টুইটারে মজার মজার স্লোগানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। রানা বাকের টুইট করেছেন [আরবী]:

@RanaGaza: من أجمل الشعارات التي رفعت اليوم في فلسطين ضد حكومة ‎‫فياض‬‏ و غلاء الأسعار: “صرت أنزل ع السوق أعمل Like و أروح.” ‎‫‬‏
আজ ফিলিস্তিনে ফায়্যাদ সরকার এবং ঊর্ধ্বমূল্যের বিরুদ্ধে অন্যতম একটি ব্যানার ছিল এই যেঃ “আজকাল যখন বাজারে যাই,আমি শুধু পছন্দ করি এবং বাড়িতে চলে আসি!”

আরেকটি ব্যানারের ছবি তুলেছেন লামেস সুরাদিঃ

@লামেস৭”

@লামেস৭: নাবলুস থেকে সবচেয়ে সুন্দর মন্তব্যটি,”যদি আপনারা গরীবদের পাশে না দাঁড়ান, তবে আপনারা বন্দীদের পাশেও নেই; অনুগ্রহ করে আমাদের জবাব দিন যে, কেন আপনারা ক্ষমতায় আছেন!”

টুইটার ব্যবহারকারী আইপ্যালেস্টাইন আত্ম-বলিদানের চেষ্টা করতে যাওয়া হুসেইন কাহ্বাজি নামের একজন লোকের সম্পর্কে লিখেছেন [আরবী]:

@PFLP67: مواطن قام بسكب البنزين على جسده وجسد ابنته البالغة من العمر 5 سنوات وحاول إحراق نفسه لكن المواطنين منعوه بالقوة.
এক নাগরিক তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের কারণে নিজের গায়ে গ্যাসোলিন ঢেলে দেন এবং গায়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু অন্য লোকেরা এসে জোরপূর্বক তাকে থামায়।

কিছু রিপোর্ট বলে যে কাহ্বাজির মেয়েটি ক্যান্সারে ভুগছিলো এবং প্রকৃতপক্ষে তার চিকিৎসা চলছিলো জর্ডানে এবং মেয়ের কাছে যাওয়ার মতো অর্থ তার কাছে ছিল না।

একজন প্যালেস্টাইন প্রতিবাদ জানাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করছে এধরণের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। সতেরো বছর বয়সী এহাব আবু আল-নাদা নিজের গাঁয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ২ রা সেপ্টেম্বর গাজায় মারা যায়। হয়তো সে তিউনিসিয়ার মোহাম্মেদ বউয়াযিযি এর অনুকরণে তা করেছিলো। এহাব আবু আল-নাদাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল এবং পরিবারের খরচ বহনে তার বাবাকে সাহায্য করতে তাকে দৈনিক তের ঘণ্টা কাজ করতে হত মাত্র ত্রিশ শেকেলের (প্রায় ৭.৪ মার্কিন ডলার) জন্য।

এই ঘটনাটি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলো, বিশেষ করে এহাবের বাবার সাথে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ এর একটি ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর; এহাবের মৃত্যুর পর ২,০০০ মার্কিন ডলারের “জরুরী সাহায্য” দেওয়ার জন্য হানিয়েহ তার বাবার সাথে দেখা করতে যান।

অনেকে ধারণা করছেন যে এই নতুন আন্দোলনটি যদি এভাবে চলতে থাকে তবে তা অন্যান্য ছোট ও বড় শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। জন লিনডন প্রশ্ন করেছেনঃ

@জনলিনডন১: গাজায় আত্ম-বলিদান; হেবরনে ফায়্যাদ এর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হছে; পূর্ব তীরের বড় শহরগুলোতে আন্দোলন। বসন্ত কি #ফিলিস্তিনে দেরিতে আসছে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .