প্রায় ৪৫-৫০জন মানুষকে স্বল্পসময়ের নোটিশে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে ২০১২ সালের জুন মাসে। তারা হাঙ্গেরীর রাজধানী বুদাপেস্ট শহরের ফ্যাহের রোড এবং তেরেবেসি রোড বরাবর পরিত্যাক্ত বনাঞ্চলে কোনমতে বসতি বানিয়ে বসবাস করতো। কোন কোন বাসিন্দা (সেখানে) তাদের কুঁড়েতে কয়েক দশক ধরে বসবাস করছে, কেউ কেউ স্বনির্ভর খামার গড়ে তুলেছে, কেউ কেউ আবার স্ক্র্যাপ (পরিত্যাক্ত) লোহা সংগ্রহ এবং বিক্রি করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। বছরখানেক আগে গুজব ছড়িয়েছে যে শহরটি ঐ এলাকায় একটি বিনোদনমূলক পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
বাসিন্দারা এটল্যাটসজো.এইচইউ’র সাংবাদিকদের কাছে বলেছে যে রেডক্রস এবং দি বাপটিস্টের সমাজকর্মীরা তাদেরকে এই উচ্ছেদের বিষয়ে জানিয়ে তাদেরকে আশ্রয়ের স্থান দিতে চেয়েছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলন এ ভারোস মিন্দেনকি (সকলের জন্যে শহর) জোরপূর্বক উচ্ছেদকে অবৈধ হিসেবে সমালোচনা করে বলেছে যে (এই) লোকদেরকে বিদ্যমান বর্তমানের চেয়ে আরো খারাপ বাসস্থান দেয়া হবে।
ক্যাত্তোস মিরসা (দ্বৈতমান) ব্লগ জুন মাসের বিষয়টি সম্পর্কে লিখেছে [হঙ্গেরীয় ভাষায়]:
[…] একের পর এক সব পৌরসভা বস্তিগুলো ভাঙ্গার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছে। অথচ তারা কিন্তু তাদেরকে বিকল্প কোন কিছু দিতে পারছে না। এইসব লোকেরা অলস নয়। তাদের অধিকাংশই কাজ করে এবং তাদের বস্তিগুলো তারা নিজেরাই বানিয়েছে, যদিও তারা সেখানে সাদামাটাভাবেই বসবাস করে। বিকল্প হিসেবে তাদের যে গৃহহীন আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলো কিন্তু তাদের স্বাধীন একটি জীবন যাপনের সুযোগ দিবে না। বরং সেগুলো তাদের প্রচলিত ব্যবস্থার ভিতরে চিরতরে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইবে মাত্র। বর্তমানে স্বাধীন জীবন শুরু করার একটি সুযোগ দেয়ার মতো হাঙ্গেরিতে এমন কোন গৃহসংস্থান নীতিমালা নেই। আর তাই জনগণ এইসব বস্তি নির্মাণ করে রাষ্ট্র কাঠামোর বাইরে [সেই সুযোগ] তৈরি করার চেষ্টা করছে। […]
এ ভারোস মিন্দেনকি জুন মাসে [হাঙ্গেরিয় ভাষায়] সেই অঞ্চল থেকে জোরপূর্বক জনগণকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত করেছে। (তারা এখানে ‘তেরেবেসি বনাঞ্চল’ এর কিছু ছবি ভাগাভাগি করেছে।) তাদের ব্লগে তারা লিখেছে [হাঙ্গেরিয় ভাষায়] যে ঐ পৌরসভাটি এই ৫০জনের জন্যে একটি জায়গা খূঁজে বের করতে স্থানীয় সমাজকর্মীদের দু’সপ্তাহ সময় দিয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে যে গৃহহীন আশ্রয়গুলো যথাযথ বিকল্প নয়। কারণ গৃহহীনেরা সেখানে মাত্র দুই বছর পর্যন্ত সেখানে থাকতে পারবেন এবং কোনো আয় ছাড়া তাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা থাকবে না।
এটল্যাটসজো.এইচইউ’র তদন্ত [হাঙ্গেরিয় ভাষায়] দেখিয়েছে যে একটি রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগে সাহায্য করার জন্যে সমাজকর্মীদেরকে জেলা এক্স পৌরসভার “এই সমস্যা সমাধান করতে” বলা হয়েছে। ডেপুটি মেয়র তিবর ওয়েবার এটল্যাটসজো.এইচইউ’র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিনিয়োগকারী সিদি গ্রুপ সেখানে ৯০০ অ্যাপার্টমেন্ট, অফিস এবং কিছু বিনোদনমূলক এলাকা নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে যা এখন অনুমোদনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন নাগরিক অধিকার বিক্ষোভ এবং মিডিয়ার বর্ধিত মনযোগ উচ্ছেদটিকে দীর্ঘায়িত করেছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা আইনী এবং সমঝোতার প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। বাসিন্দাদের অনেককেই আশ্রয়স্থল সরানো হয়েছে। কেউ কেউ এখনো সেখানে রয়ে গিয়েছে। তবে প্রক্রিয়াটি এখন আর থামানো যাবে না।