জর্ডানের নাগরিকরা এখনো এক অন্ধকারে রয়ে গেছে, যেখানে আজ [২২ আগস্ট, ২০১২] দেশটির সরকার ইন্টারনেট স্বাধীনতার উপর নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। প্রথমত সরকার কোন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রশাসনকে প্রদান করেছে, আর এখন নতুন এক প্রকাশনা আইন জারি করা হল, যে বিষয়টি ইন্টারনেটের উপর আরো নিয়ন্ত্রণ এবং সেন্সরশিপ আরোপ করার অনুমতি প্রদান করে, যা কিনা খসড়া আইন হিসেবে অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।
সংবাদপত্র আল ঘাদ-এর [আরবী ভাষায়] সূত্রানুসারে, জর্ডান সরকার প্রকাশনা এবং সংবাদপত্র আইনের সংশোধনের অনুমতি প্রদান করেছে, যে আইনের অধীনে একটি ওয়েবসাইটের মালিকেরও, ঠিক অন্য সব প্রকাশনার মতই সরকারী নিবন্ধন এবং লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে। একই সাথে এই সমস্ত ওয়েবসাইটে পাঠকদের প্রকাশিত লেখা এবং মন্তব্যের দায়ভার মালিকদেরই নিতে হবে।
এখন এই খসড়া আইনকে আইনে পরিণত করতে সংসদের অনুমোদন প্রয়োজনঃ
জর্ডানের ব্লগার মোয়ি বেশ কিছু ধারাবাহিক ভিডিও পোস্ট করেছে, যে সব ভিডিওতে দেশটির ইন্টারনেটে সেন্সরশিপ আরোপের সাম্প্রতিক উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে।
মোয়ির পোস্টের শিরোনাম “না” এবং তার পোস্টের ভেতরে যে লেখা রয়েছে তা পাঠ করুন:
একটি লাইনও লিখবেন না, দেখুন এবং বিচার করুন!
ভিডিওগুলো এখানে প্রদান করা হল :
এটা হচ্ছে সেন্সর করা মোয়ি:
http://www.youtube.com/watch?v=39v0lYNo6RY&feature=player_embedded
এখানে সেন্সর করা সারাহ:
http://www.youtube.com/watch?v=f2DrrsMK6lM&feature=player_embedded
আর সেন্সর করার পর এই হচ্ছে ওমর :
http://www.youtube.com/watch?v=8Rxf1y2YSwE&feature=player_embedded
ফেসবুকে জর্ডানের প্রাক্তন তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মারওয়ান জুমা জর্ডান সরকারের উদ্দেশ্য এক চিঠি লিখেছেন। তাতে তিনি বলেছেন:
এই বিষয়ে কথা বলা আমার এক দায়িত্ব! এই কারণে নয় যে আমার পরিচালিত কোম্পানী জর্ডানে প্রথম ইমেইল চালু করে, অথবা এটি ছিল জর্ডানের সমৃদ্ধ এক উদ্যোগের অন্যতম এক প্রতিষ্ঠাতা, আর এ কারণে নয় যে সম্প্রতি আমি তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলাম, বরঞ্চ এর কারণ হচ্ছে আমাদের এই খাতে যে ঘটনা ঘটছে, মূলত ইন্টারনেটকে সেন্সর করার কারণে, খুব সাধারণ ভাবে বলা যায়, এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত, যদি না কেউ নিছক নির্বোধ হয়ে থাকে!
সেন্সরশিপ প্রত্যাখান করার পেছনে তার কারণসমূহ হচ্ছেঃ
১. এটা কাজ করবে না!
যে সমস্ত রাষ্ট্র বিভিন্ন সাইট বন্ধ করতে চেয়েছে তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়েছে! এর জন্য তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে এবং তা মোটেও কাজ করেনি!
জুমা এর সাথে যোগ করেছে:
২. ইতোমধ্যে এই বিষয়ক আইন তৈরি করা হয়েছে! !
জর্ডানে সাইবার অপরাধ বিষয়ক আইন চালু করা হয়েছে যা অপ্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে পর্নোগ্রাফি বিস্তার বিষয়টির মোকাবেলা করার জন্য, এক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে কঠোর অর্থদণ্ড এবং জেল দুটোই রয়েছে। এবং এটি হচ্ছে এখনকার জন্য প্রকৃত হুমকি। আর ইতোমধ্যে বিষয়টি মোকাবেলার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন এখন বিষয়গুলোকে জটিল করা?
এবং সে আরো উল্লেখ করেছে:
৩. আমরা এর সীমানা টানবো কোথায়?
প্রথমে বিষয়টি পর্নোগ্রাফি দিয়ে শুরু হয়েছে এবং এরপর তা অন্য সাইটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে অথবা এমন একটি বিষয়ে পরিণত হবে যা অনেকটা আক্রমণাত্মক! আমরা একটা রহস্যময় [প্যান্ডোরার] বাক্স খুলতে যাচ্ছি যা কিনা বন্ধ করা অসম্ভব হবে। আর যদি আমরা কোন সাইট বন্ধ করতে চাই, তাহলে কি আমরা সেই সব ইমেইল বন্ধ করে দেব, যে সব ইমেইলে অশ্লীল ছবি বা ভিডিও উপাদান রয়েছে? অথবা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দেব, যা কিনা নগ্নতা প্রদর্শন করে? আমরা কোথায় এর সীমানা টানব?
সে উপসংহার টেনেছে:
আসুন আমরা ইন্টারনেটকে উন্মুক্ত এবং অবাধ করে রাখি, আর তথ্য প্রযুক্তি খাতে অগ্রদূত হিসেবে জর্ডানের অবস্থানকে অটুট রাখি এবং উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ রাষ্ট্র হিসেবে জর্ডানের ভাবমূর্তি রক্ষা করি।
জুমার অবশিষ্ট যুক্তি জানার জন্য উপরের লিঙ্কটি যাচাই করুন।
একই সাথে ইন্টারনেট সেন্সর করার সরকারি প্রচেষ্টা বিরুদ্ধে এবং ফিল্টার করা ও বাক স্বাধীনতার বিষয়ে সচেতনতার লক্ষ্যে ৭ওর ইয়া নেট [আরবী ভাষায়] (ইন্টারনেট, তুমি মুক্ত) নামক একটি নতুন ব্লগ চালু করা হয়েছে।
এর সাম্প্রতিক এক পোস্টে, সাইটটি বলছে: