মালয়েশিয়ার একটি রাজ্য শীঘ্রই জল ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে। মালয়েশিয়ার সমৃদ্ধ রাজ্য সেলাঙ্গর জাতীয় শিরোনামে পরিণত হয় যখন জল সুবিধা বণ্টনকারী সংস্থা সেয়াবাস ঘোষণা করে যে তারা জল সঞ্চয় নিরাপদ স্তরে রাখতে রেশনিং ব্যবস্থা শুরু করতে চায়। সেয়াবাস এবং সেলাঙ্গর রাজ্য সরকারের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মতানৈক্য দেখা দেয়, সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে দেখা যায় অধিকাংশ বাঁধ আসলে পূর্ণ, সেয়াবাস পরিশোধিত জলের অভাবজনিত সমস্যা টিকিয়ে রেখেছে।
সেলাঙ্গরে ক্ষমতাসীন জোটের একজন রাজনীতিবিদ টনি পুয়া বিশ্বাস করেন যে এই সমস্যা একটি জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু। তিনি আরো বিশ্বাস করেন যে সেয়াবাস এই ব্যবস্থা নিচ্ছে যাতে অন্য পানি শোধনাগার প্লান্ট অনুমোদন পায় যেটা তাঁদের কোম্পানির জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে:
সম্পূর্ণ “ জল- রেশনিং” হুমকি সেলাঙ্গর এর জনগণকে আতঙ্কিত করার একটি কৌশল যাতে মানুষ ল্যাংগাট ২ প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জোর করে করা হচ্ছে , এ প্রকল্পের কথিত পরিশোধিত জলের নিচু স্তরের কারনে বলা যায় অকার্যকর হবে।
পুঞ্চাক নিয়াগা’র ৭০% মালিকানায় পরিচালিত সেয়াবাস একটি আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পিত প্রয়াস। প্রথমত সেলাঙ্গরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে বারিসন ন্যাশিওনাল কে সাহায্য করা যাতে করে রাজ্যের জল অধিকার তাদের চিরস্থায়ী নিয়ন্ত্রণে আসে।
বি.জো আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করেছেন:
দিন শেষে, সেয়াবাসের আরও শক্তিশালি কেস এবং বৈধ বিষয় থাকতে পারে এবং সেলাঙ্গর রাজ্য সরকার আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে আসল বিষয় আড়াল করতে পারে। সংবাদে আমরা তাদের কথা জানতে পারি কিন্তু সেয়াবাস এর সাথে একমত হওয়ার আগে আমরা আরো ভাল তথ্য ও পরিসংখ্যান দেখতে চাই। সেলাঙ্গর রাজ্য সরকারের দাবিও খুব বাস্তবসম্মত মনে হয় না, যদি এটা একটা নতুন পানি শোধনাগার প্লান্ট স্থাপন করে সহজেই সমাধান করা যায় তাহলে কেন রাজ্য সরকার প্রথম দিন থেকেই এর তীব্র প্রতিরোধ করে আসছে?
আমরা সবাই উভয় পক্ষকে তাদের বোধ-বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে সঠিক কাজটি করার অনুরোধ করছি। পরিস্থিতি সংকটপূর্ণ হলে আমরা রেশনের জন্য রাজি আছি কিন্তু আমরা এখনই কি সেই পর্যায়ে পৌঁছেছি? আমাদের হয়তো বছরে একবার শুকনো মৌসুম পেতে পারি কিন্তু আমরা এমন একটি আশীর্বাদপুষ্ট দেশে বাস করি যেখানে যথেষ্ট ভালো বৃষ্টি হয়। যদি আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ কাঁচা জল থাকে, তবে কত দক্ষতার সাথে এ কাঁচা জল থেকে বিশুদ্ধ জল প্রক্রিয়াকরণ করা যায় সে বিষয়ে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। বাস্তবতা হল এই যে প্রায় প্রত্যেক পরিবারের তাদের বাড়িতে কোন না কোন ধরণের জলের ফিল্টার আছে এবং এ থেকে আজ আমরা যথেষ্ট ফিল্টার করা জল পাচ্ছি (কল্পনা করুন আমার বাড়ির ফিল্টার এক দিনেই বাদামী রঙ ধারণ করেছে)।
জল ব্যবস্থাপনা বেসরকারিকরণ বিরোধী মোর্চার প্রধান এবং সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো তাঁর নিজের ব্লগে লিখেছেন:
জল ব্যবস্থাপনা বেসরকারিকরণ বিরোধী মোর্চা পেশাদার জল বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদগণের চাকুরি সুরক্ষা দিয়ে সেয়াবাসের দাবি যাচাই করছে। কিন্তু তারা সেয়াবাসের দেয়া তথ্যে নির্ভর করতে না পারায় সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে সন্দিহান যে আসলেই জলসংকট কি অবস্থায় এবং জল রেশনিং জরুরি কিনা।
সেলাঙ্গর সরকার শুধুমাত্র এই ইস্যুতে একটি বিশেষ মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করে বিষয়টি হস্তান্তর করার জন্য ফেডারেল সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে। এই কমিটি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে অনেক নাগরিক সন্দিহান, কারণ এটা গঠিত হচ্ছে বারিসান ন্যাশিওনাল জোটের রাজনীতিবিদদের নিয়ে যারা সেলাঙ্গরের ক্ষমতায় নেই।
এ বিষয়ে বি.জো একজন সংশয়বাদী:
সেলাঙ্গর রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সেয়াবাসের বিষয়টি দেখার জন্য ফেডারেল সরকারের কাছে প্রস্তাব পেশ করেছে এবং ফেডারেল সরকার মনে হয় এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে যেনতেন প্রকারে একটি কমিটি গঠন করবে। কিন্তু আমার মনে হয় না সেয়াবাসের নেয়া রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাব (কিংবা এই বিষয়ে অন্য যে কোন প্রস্তাব) ফেডারেল পর্যায়ে সফল করতে সক্ষম হবে (এটাই প্রথম নয় রাজ্য সরকার এর আগেও ফেডারেল সরকারকে একই বিষয়ে দায়িত্ব দিয়েছিল- “ফেডারেল সরকার সেলাঙ্গরকে সাবোট্যাজ করেছে” পড়ুন)। কেন তাঁদের সেটা করা উচিত?
কমিটির তালিকার রাজনীতিবিদদের নামগুলো একবার দেখুন তাহলে আপনিও তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন (একজন টেক ব্যাক সেলাঙ্গর মিশনে সক্রিয়ভাবে জড়িত যা জল ইস্যু সর্ম্পকিত)। সর্বোপরি যত বেশি রাজ্য সরকারে সমস্যা দেখা দিবে তত বেশি বিএন রাজনীতিবিদগণ রাজ্য সরকারকে অপটু, আত্মসর্বস্ব এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করতে পারবেন।
জেআই পাট তার অনুভূতির কথা টুইটারে তুলে ধরেন:
#সেয়াবাস ক্যাবিনেট কমিটিতে নোহ ওমর এর মত রাজনীতিবিদকে আহ্বান করে স্বগোত্রীয় হানিফকে “স্বাধীন” প্যানেলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
২৩ জুলাই ২০১২ তারিখে, এই ইস্যুতে কমিটি ঘোষণা করে যে তারা আপাততঃ সেলাঙ্গর সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে, কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল শেষ করার আগ পর্যন্ত তারা কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
এটা কোন নতুন সমস্যা নয়- সেলাঙ্গরে জল ঘাটতির সম্ভাবনা আগেও দেখা দিয়েছিল, এই ভিডিওতে দেখা যায় শক্তি, সবুজ প্রযুক্তি ও জল বিষয়ক মন্ত্রী পিটার চিন এই ইস্যুতে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন। তবে এটা শুধুমাত্র ২০১৪ সালে ঘটতে পারে।