- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

আর্জেন্টিনাঃ রোসারিও ও রোসারিওর স্থাপত্য পরিভ্রমণ

বিষয়বস্তু: ল্যাটিন আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, ইতিহাস, দেশান্তর ও অভিবাসন, নাগরিক মাধ্যম, শিল্প ও সংস্কৃতি

পারানা নদী [1] থেকে বুয়েনস এইরেসের ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বৃহত্তম শহর রোসারিও [2] অবস্থিত। আর্জেন্টিনীয় পতাকার বাড়ি হিসেবে রোসারিওর পরিচিতি। এ শহরেই প্রথম পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল। লিওনেল মেসি [3], মার্সেলো বিয়েলসা [4], লুইসিয়ানা আয়মার [5] [স্প্যানিশ] জন্মেছেন এ শহরে। বিপ্লবী ও রাজনীতিবিদ আর্নেস্টো চে গুয়েভারা [6]ও এ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও ১৮০০ সালে ইউরোপীয় অভিবাসনের প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকা সবচেয়ে চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য হল রোসারিওর স্থাপত্য।

রোসারিওর অনেক ডাকনাম আছে; এরমধ্যে অন্যতম হল “দি আর্জেন্টিনিয়ান শিকাগো”, কারন শস্যদানার জন্য এটা ছিল প্রধান বন্দর, সিসিলীয় দস্যু সর্দার “চিকো গ্র্যান্ডে” এবং “চিকো চিকো” এর কারনেও এ নামকরণ হয়ে থাকতে পারে। এ ডাকনামগুলো সম্পর্কে লা ন্যাসিও [7] [স্প্যানিশ] সংবাদপত্র লিখেঃ

Rosario, la ciudad que a fines del siglo XIX y principios del XX se convirtió en el principal puerto cerealero del país, no sólo albergó el paso de miles de marineros y extranjeros, sino que también cobijó otro tipo de desembarco, el de la prostitución. Fue el trampolín de la mafia en el país y, de allí, el bautismo de “la Chicago argentina”.

Las andanzas de los italianos Juan Galiffi, apodado “el Chicho Grande”, y su rival, Francisco Morrone, “Chicho Chico”, inspiraron el cambio de nombre acorde con los niveles de violencia y corrupción que los envolvían.

ঊনবিংশ শতাব্দের শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দের শুরুতে রোসারিও শহর দেশের প্রধান শস্য বন্দরে পরিণত হয়। এ বন্দর দিয়ে কেবল হাজার হাজার নাবিক ও বিদেশীরাই আসেনি বরং আরও অনেক কিছুই এখানে আশ্রয় গেড়েছে যেমন পতিতাবৃত্তি। এটা দেশের মাফিয়াদের জন্য স্প্রিং বোর্ডের মত, এরপর থেকে এ শহর “ দি আর্জেন্টিনিয়ান শিকাগো” নামে পরিচিতি লাভ করে।

ইতালিয়ান জন গালিফফি যার ডাকনাম “কিকো গ্র্যান্ড”এর অ্যাডভেঞ্চার এবং তাঁর প্রতিপক্ষ ফ্রান্সিস মরন “চিকো চিকো” এবং সহিংসতার পর্যায় ও ওই সময়ে শহরের দুর্নীতির দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে নামের পরিবর্তনে উৎসাহিত হয়।

রোসারিও ভ্রমণের পর সাংবাদিক নিকোলাসপাসিয়েজনিক দালানের চুড়াগুলো সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত ব্লগে [8] [স্প্যানিশ] লিখেন:

De estilo neoclásico, barroco, con reminiscencias italianas, vanguardistas y hasta en algunos casos eclécticas, estas cúpulas son, además de un patrimonio de calidad excelentemente cuidado y revalorizado, una muestra del poderío económico que la zona tuviera antaño.

নব্য-ধ্রুপদী, পূর্ব স্মৃতি জাগানিয়া ইতালীয়, ভ্যানগার্ডীয়, কোন কোন ক্ষেত্রে নির্বাচনমূলক, এই চুড়াগুলো দারুনভাবেই  কেবল ঐতিহ্য নয় বরং এগুলোকে দারুনভাবে সংরক্ষণও করা হয়েছে যা প্রশংসাযোগ্য। এই এলাকার চুড়াগুলো এককালের  অর্থনৈতিক শক্তিরও চিহ্ন বহন করে।
রোসারিও স্টক এক্সচঞ্জ ভবন

রোসারিও স্টক এক্সচঞ্জ ভবন, ১৯২৯ সালে নির্মিত, নব্য- ধ্রুপদী স্টাইল, বহুমুখী আর্থিক লেনদেনের পরিচয়বাহী। ছবি: ইনেস (সি সি বাই- এনসি- এনডি ২.০)

 কৃষি ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার সম্মৃদ্ধির প্রতীক প্রদর্শিত হয়েছে “লা আগ্রিকোলা” নামের দালানটি স্টক এক্সচেঞ্জের বিপরীতে অবস্থিত। এ প্রান্তটি “তিন চুড়ার প্রান্ত” নামে পরিচিত।

দালান লা আগ্রিকোলা।

দালান লা আগ্রিকোলা। ছবি: পাবলোডিএফ (সি সি বাই- এনসি- এনডি ২.০)

স্প্যানিশ ক্লাব [9] [স্প্যানিশ] নামের আরেকটি ভবনকে ঐতিহাসিক জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভবন নির্মাণের ইতিহাস সম্পর্কে এর ওয়েবসাইটে মন্তব্য করা হয়েছে:

El edificio se comenzó a construir el 1912, contratando para ello al Arq. Francisco Roca i Simó graduado en 1906 en Barcelona.El edificio  se inaugura  oficialmente el 9 de Julio de 1916, una fecha singular para la historia del país: el Centenario de Independencia.

En la construcción  se reconocen tres partes: la anterior, la central y la posterior, que presentan modos particulares de resolver los espacio. Pero a su vez la organización de las funciones se realiza a partir de un eje longitudinal imaginario que divide la organización de las partes en dos.

স্থপতি ফ্র্যান্সিসকো রোকা ই সিমোর নকশায় ১৯১২ সালে এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়। স্থপতি ফ্র্যান্সিসকো রোকা ই সিমো বার্সিলোনা থেকে ১৯০৬ সালে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ৯ জুলাই ১৯১৬ সালে এ ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ তারিখটি অনন্য কেননা দেশের ইতিহাসে এই তারিখে স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্ণ হয়।

club Español de Rosario

ভবনের বহির্ভাগ (facade) এর বর্ণনায় বলা হয়:

La fachada se presenta como un imponente juego de volúmenes quebrando y ahuecando el plano del mismo. A simple vista  se reconocen tres partes en la organización de los elementos ornamentales, un basamento, un desarrollo y un imponente remate donde el comprometido coronamiento del edificio. Se destaca, este último segmento por la idea de colocar el escudo policromo, custodiado por dos imponentes leones, representando de la monarquía española.

উপরিতল ভাঙ্গা ও গর্ত করার এক আকরশনীয় খেলা হিসেবে ভবনের বহির্ভাগকে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম দেখাতেই দর্শক এ বিন্যাসের আলঙ্কারিক উপকরণ, ভিত্তি ও মধ্যভাগ ও ভবনের আকর্ষণীয় সমাপ্তি – এর চুড়া তিনটি অংশ চিহ্নিত করতে পারবে। এই শেষ পর্যায়টি পলিক্রোম আবরন দ্বারা স্থাপিত দুইদিকে দণ্ডায়মান সিংহ দ্বারা পরিবেষ্টিত স্প্যানিশ রাজতন্ত্রের প্রতীক।

শহরের আরও একটি বৈশিষ্ট্য পূর্ণ ক্যাবানেলাস প্রাসাদ সম্পর্কে নোটিসিয়াস দ্যো লা সিউদাদ দ্যো রোসারিও [10] [স্প্যানিশ] ব্লগে মন্তব্য করা হয়:

El Palacio Cabanellas, en la esquina de Sarmiento y San Luis. Art Nouveau, o Modernisme según los catalanes. El edificio lo diseñó Francesc Roca i Simó, que vino de Mallorca y Barcelona a Rosario a principio del siglo XX, se quedó menos de una década y no paró de planear fastuosos edificios como éste.

সারমিয়েন্তো এবং সান লুইসের প্রান্তে ক্যাবানেলাস প্রাসাদ অবস্থিত। এটা নয়া শিল্প (Art Nouveau) বা ক্যাটালানের আধুনিকতাবাদ। এ ভবনের নকশা করেছেন ফ্র্যান্সিসকো রোকা ই সিমো। বিংশ শতাব্দের প্রথমদিকে রোকা মাজরকা এবং বার্সিলোনা থেকে রোসারিওতে আসেন। এক দশকেরও কম সময় তিনি রোসারিওতে থাকেন এবং বিলাসবহুল ভবন নির্মাণের স্বপ্ন অব্যাহত রাখেন।
ক্যাবানেলাস প্রাসাদের চুড়া।

ক্যাবানেলাস প্রাসাদের চুড়া। ছবি: এল ইউ ৬ পি জে ( সিসি বাই- এনসি-এসএ ২.০)

শহরের স্থাপত্যগুলোতে এখন আর রোসারিওর রাজনৈতিক কার্যক্রম চলে না। লাইওন্স প্যালেসে [11] [স্প্যানিশ](“প্যালেসিও দ্যো ল্য লিওনেস” নামে পরিচিত) পৌরসভা অবস্থিত, এ ভবনটি ১৮৯৮ সালে উদ্বোধন করা হয়। ভবনটি পতাকা স্মৃতিস্তম্ভ [12] [স্প্যানিশ] এবং পারানা নদীর খুব কাছে। এ ভবন নিয়ে অনেক গল্প আছে। বহুল আলোচিত গল্পটি হল ইয়োলান্দা নামের এক ভুতকে নিয়ে যে এ ভবনটিতে হাজির হয়। এল সিউদাদানো ওয়েব [13] [স্প্যানিশ] নামের এক ওয়েবসাইটে এ ভুতের বিস্তারিত গল্প রয়েছে:

Un inspector de tránsito de la Municipalidad, Lucio Montenegro, aseguró haber visto un fantasma en el Palacio de los Leones el pasado 20 de junio. Según contó el protagonista del hecho a Elciudadanoweb.com,  se encontraba trabajando en Santa Fe y Córdoba por el Día de la Bandera, y pidió permiso para entrar al baño de la Municipalidad de Rosario. Montenegro subió al primer piso y ahí fue cuando ocurrió el tenebroso episodio. Un fantasma le tocó el hombro y le dijo: “Soy Yolanda. Decile al sereno que deje la luz prendida”.

লুসিও মন্টেনেগ্রো নামের পৌরসভার একজন ট্রাফিক পরিদর্শক জানান যে ২০ জুন লায়ন প্যালেসে তিনি একটা ভুত দেখেছেন। এলসিউদাদানোওয়েব কম –এ তিনি বলেন পতাকা দিবস উপলক্ষে তিনি সান্তা ফে এবং করডোবা তে কর্মরত থাকাকালে রোসারিওর পৌরসভার প্রক্ষালন কক্ষ ব্যবহারের অনুমতির জন্য অনুরোধ করেন। মন্টেনেগ্রো সিড়ি বেয়ে উপরে উঠেন, সেখানেই ঘটে বিভীষিকাময় ঘটনা। একটা ভুত তাঁর কাঁধ স্পর্শ করে বলে, “ আমি ইয়োলান্দা। রক্ষীদের আলো জ্বেলে দিতে বল”।
রোসারিও পৌরসভা- লায়ন্স প্যালেস।

রোসারিও পৌরসভা- লায়ন্স প্যালেস। ছবি: ম্যাক্সিড ( সিসি বাই-এনসি- এনডি ২.০)

পরিশেষে  যারা শহর এবং এর স্থাপত্যের বিষয়ে ভার্চুয়াল ভ্রমনে আগ্রহী তাঁদের জন্য রোসারিও পৌরসভা তাঁদের ওয়েবসাইট রুতাস মডারন্নিস্তান এন রোসারিও [14] (রোসারিওর আধুনিকতাবাদী মূল), এ অনেক ছবি যুক্ত করেছেন।