ব্লগারদের আলোচনায় লন্ডন ২০১২ অলিম্পিকে লিঙ্গ যাচাই

এটা আমাদের লন্ডন ২০১২ অলিম্পিক সংক্রান্ত বিশেষ কভারেজের অংশ।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) এবং আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক ফেডারেশনসমূহের সমিতি (আইএএএফ) লন্ডন অলিম্পিকে লিঙ্গগত সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে ন্যূনতম ঘটনা নিশ্চিত করার জন্যে কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। সংস্থা দু’টি নতুন একটি লিঙ্গ যাচাই নীতি চালু করেছে।

নতুন নীতিটি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে মানবিকতা ও স্বাস্থ্য বলেছে:

২০১২ সালের খেলাটিতে আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক ফেডারেশনসমূহের সমিতি এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি মহিলা ক্রীড়াবিদদের নিয়মিত লিঙ্গ যাচাই পরিত্যাগ করার এক দশকের বেশি সময় পরে আবার একটি ‘লিঙ্গ যাচাই’ নীতি প্রবর্তিত হচ্ছে। ২০০৯ সালে বার্লিনে বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার দৌড়বিদ ক্যাস্টার সেমেনিয়া’র লিঙ্গ সম্পর্কে তার প্রতিদ্বন্দ্বিরা চ্যালেঞ্জ করা পর এই পরিবর্তনটি এসেছে।

২০০৯ সালে বার্লিনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বিজয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াবিদ ক্যাস্টার সেমেনিয়া’র লিঙ্গ যাচাই করা হয়।

২০০৯ সালে বার্লিনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বিজয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াবিদ ক্যাস্টার সেমেনিয়া’র লিঙ্গ যাচাই করা হয়। ছবি www.erki.nl এর সৌজন্যে

পোস্টটিতে আরো বলা হয়:

ক্যাস্টারের বিষয় নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কটি শেষ পর্যন্ত আমাদের কাছে ক্রীড়ার অর্থ এবং উদ্দেশ্য, অন্য কথায়, এর ‘নীতি’ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দাবি করে। ক্যাস্টার অলিম্পিকের জন্যে যোগ্যতা অর্জন করেছেন এবং দ্বিতীয় স্থান নিয়ে গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার দায়েগু বিশ্ব ট্র্যাক (অ্যাথলেটিকস) চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করার পর (এখন) স্বর্ণ প্রত্যাশী।

রিডাইরেক্ট ব্লগ  উল্লেখ করেছে যে নতুন লিঙ্গ যাচাই নীতির একমাত্র উদ্দেশ্য শুধুমাত্র মহিলা ক্রীড়াবিদদের টেস্টোস্টেরনের (এক ধরনের হরমোন) মাত্রা দেখা:

অলিম্পিকটি সারা বিশ্বের অনেক ক্রীড়াবিদদের ছবি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে: যারা কাঁধে জাতীয় পতাকা মোড়ানো এবং গলায় একটি স্বর্ণপদক ঝুলানো। কিন্তু লন্ডনের খেলাটির প্রাক্কালে সম্প্রতি আইওসি সন্তর্পণে নতুন একটি লিঙ্গ যাচাই নীতি জারি করে চোখ রেখেছে বেল্টের নিচে।

কারো লিঙ্গ নির্ণয়ের নানা ধরনের বিভিন্ন মাপকাঠি থাকলেও গৃহীত নতুন নীতির একমাত্র উদ্দেশ্য শুধুমাত্র মহিলা ক্রীড়াবিদদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দেখা। পরীক্ষার ফলাফলে মহিলাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষের স্বাভাবিক সীমার মধ্যে পড়ে গেলে তাকে প্রতিযোগিতায় নিষিদ্ধ করা হবে যদি এবং যতক্ষণ না তারা এর চিকিৎসাগত সমাধানে রাজি হয়।

ব্লগটি লিঙ্গ যাচাই সম্পর্কে গুরুতর কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে:

লিঙ্গের কোন বাঁধাধরা সংজ্ঞা নেই। পুরুষ বা মহিলা – এটা আমরা দুইভিত্তিক সংখ্যার মানে চিন্তা করে থাকি। কিন্তু লিঙ্গ বিবেচিত হয় একটি পরিসীমার মধ্যে। এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে আইওসি’কে হয়তো যৌন এবং লিঙ্গগত পরিমাপের একাধিক ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা করা উচিৎ। আরো বিশদ যাচাই – ক্রোমোজোম এবং জননেন্দ্রিয় ছাড়াও টেস্টোস্টেরন পরীক্ষা – আরেকটু বেশি আক্রমণাত্মক হলেও ক্রীড়াবিদের লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে একাধিক নিয়ামক বিবেচনার সুবিধা পেতে পারে।

আইওসি নতুন নীতিটি কী অসম্পূর্ণ? নিশ্চিতভাবেই। আরো কোন ভাল উপায় আছে কী? অবশ্যই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিখুঁত কোন সমাধান নেই। লিঙ্গ যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, আর (তাই) আপনাকে কোথাও সীমারেখাটি টানতে হবে। অলিম্পিক কখনোই সর্বজনীন অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক নয়। এটি খেলাধূলার সবচেয়ে অভিজাতদের জন্যে সংরক্ষিত একটি বিশেষাধিকার। ক্রীড়াবিদরা অজস্র অন্যান্য শর্তাবলী – ন্যূনতম বয়স থেকে শুরু করে সময়মান থেকে নাগরিকত্ব যাচাই সবকিছু – পূরণ করে তবেই অলিম্পিয়ান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তাহলে কেন লিঙ্গ যাচাইকে খেলাটির (উৎকর্ষের) দিকে আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন না?

উপসংহারে, অলিম্পিকগেমসসাদাএমিলিওগঞ্জালো অলিম্পিকে লিঙ্গ সমতা্র উন্নতি লক্ষ্য করেছেন:

অলিম্পিকের সময় থেকেই ক্রীড়াতে সব সময়ে লিঙ্গ বৈষম্য ছিল। যেভাবেই হোক কিছু তো পরিবর্তন হচ্ছেই….

সৌদি আরবের পরিস্থিতি ঠিকভাবে সামাল দেয়ার উদ্দেশ্যে আইওসি এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে খেলাধূলায় সমতা আনার জন্যে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ক্রীড়াতে নারীদের মুষ্টিযুদ্ধ যুদ্ধ যোগ করা হয়েছে যেন পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই অংশগ্রহণ করতে পারে।

এটা আমাদের লন্ডন ২০১২ অলিম্পিক সংক্রান্ত বিশেষ কভারেজের অংশ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .