গুয়াতেমালাতে মহিলা একটিভিস্টদের বিরুদ্ধে সহিংসতার তীব্রতা বেড়ে উঠছে। ক্ষতিকর (খণিজ) আহরণ মূলক চর্চা এবং পরিবেশকে প্রভাবিত করা প্রকল্পের বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পর বাড়ি ফেরার সময় কিচে গণ পরিষদের (সিপিকে) সদস্য লোলিতা শ্যাভেজকে একদল সশস্ত্র পুরুষ তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। মিমুণ্ডো.অর্গ-এর ফটোসাংবাদিক জেমস রডরিগেজ ব্যাখ্যা করেছেন:
সিপিকে’র সদস্যবৃন্দসহ কিচের প্রায় ৪০০ বাসিন্দারা (জুলাই,২০১২) ৪ তারিখ সকালবেলা স্থানীয় মেয়র এসতুয়ার্দো কাস্ত্রো'র ধারাবাহিক ঔদ্ধত্ব এবং ২০১০ সালে কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনার সময় প্রমাণিত বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোর কাছে তাদের জমি বিক্রির অনিচ্ছার প্রতি তার অশ্রদ্ধার বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
বিক্ষোভকারীরা জেটিন্যাপ কুইন্তো কমিউনিটি এলাকা পেরিয়ে যাওয়ার সময় রামদা, লাঠি ও ছুরি সজ্জিত সশস্ত্র একদল পুরুষ সিপিকে সদস্যদের পথরোধ করে তাড়িয়ে ধরে এবং তাদের কয়েকজনকে পিটুনি দেয়। এই সশস্ত্র লোকগুলোর বিশেষ আগ্রহ ছিল স্বীকৃত নেত্রী লোলিতা শ্যাভেজের প্রতি। তারা তার নাম ধরে ডাক দিয়ে তাকে তাড়িয়ে ধরে পিটাতে সক্ষম হয়, তবে গুরুতরভাবে নয়। কেটে-কুটে গেলেও লোলিতা পালাতে সক্ষম হন। তারপরও তিনজন মহিলা জখমের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
দুই সপ্তাহ আগে গুয়াতেমালা সিটির কাছাকাছি একটি এলাকায় মানবাধিকার আইনজীবী এবং খনি কার্যক্রম বিস্তার বিরোধী একটি আন্দোলনের নেত্রী ইওলান্দা ওকেলি ভেলিজকেও একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে ফিরে আসার সময় আক্রমণ করা হয়। ব্লগ ফ্রন্টলাইনডিফেন্ডার রিপোর্ট করেছে:
ইওলান্দা সান হোসে দে গুলফো’র একজন মানবাধিকার রক্ষক এবং এক্সমিগুয়া খনি প্রতিরোধকারী কমিউনিটি নেত্রী। আমরা চারিদিক থেকে যা কিছু শুনেছি তাতে সোনা ও রূপা, বালি এবং শংকর ধাতুর মতো খনিজের আহরণ গুয়াতেমালাতে একটি বিশাল ব্যাপার। সাধারণতঃ কমিউনিটির প্রভাব নিয়ে কোন আলোচনা হয় না। পরিবেশের ক্ষতি সম্পর্কে ভয় কমানোর জন্যে কোন বস্তুনিষ্ঠ তথ্য অথবা আলোচনার প্রকাশ্য প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয় না; নদী দূষিত হবে কিনা; বন কাটা এবং এইভাবে তাদের জল সরবরাহ সংকটাপন্ন হবে কিনা; এবং সেই সাথে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরিবেশের প্রয়োজন হবে মেরামত এবং পুনর্গঠনের প্রয়োজন হলে তখন কী হবে।
তারা যোগ করেছে:
ইয়োলি’র (যেমন করে তিনি তার নাম লিখেছেন) কাজের কারণেই তার প্রতি ভীতি প্রদর্শনের একটি ইতিহাস রয়েছে। তার আইনজীবী (হিতার্থে) আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রায় ১০টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা এবং তিনি ও তার সন্তানদের হুমকি দিয়ে তার দেওয়ালে দেওয়াল-লিখন এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। এসব সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত সরকার নীরব রয়েছে।
একটিভিস্টদের রক্ষার অনুরোধ করে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক জরুরী কর্মসূচী জারি করা সত্ত্বেও সরকার কোন সাড়া দেয়নি। তার উপর অপরাধগুলোর ব্যাপারে সুশীল সমাজ অত্যন্ত চুপচাপ রয়েছে।
নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতার প্রতি বহুজাতিক জ্বালানী এবং (খণিজ) আহরণকারী কোম্পানিগুলোর সরাসরি প্রভাব আগের চেয়ে আরো বেশি দৃশ্যমান। তবে গুয়াতেমালার মিডিয়া এবং শিক্ষিত সুশীল সমাজের দেখানো অনীহা সহিংসতার স্বাভাবিকীকরণের একটি চিহ্ন। প্রথাগত মিডিয়া ভিন্নমতের অধিকাংশ ঘটনাকে “সন্ত্রাসবাদ” আখ্যা দিয়ে এবং বিরোধীতাকারী একটিভিস্ট ও নাগরিকদের বিপদকে এড়িয়ে গিয়ে এসব বিদেশী বিনিয়োগের পক্ষের যুক্তিকেই বেশি কভারেজ দিয়েছে।
শহর এবং গ্রাম উভয় এলাকায় ক্রমবর্ধমানভাবে আক্রান্ত মানবাধিকার রক্ষা একটিভিস্টদের সম্পর্কে যথেষ্ট সাড়া দেয়ার পরিবর্তে কর্তৃপক্ষগুলো নীরব রয়েছে।