ইয়েমেন: আরেকটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ সানাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে

গতকাল, ১১ জুলাই তারিখে যখন পুলিশ ক্যাডেটরা যখন তাদের ছুটি কাটাতে সানার পুলিশ একাডেমী ত্যাগ করছিল, তখন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী একাডেমীর দক্ষিণ দরজায় বোমায় নিজেকে উড়িয়ে দেয়, যে ঘটনায় নয়জন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সংবাদ প্রদান করেছে।

এই ঘটনায় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তার একটি হাত এবং পা হারিয়েছে, কিন্তু উক্ত হামলাকারীকে ঘটনাস্থলে আবিস্কার করার সময় পর্যন্ত সে জীবিত ছিল। পরে সংবাদ প্রদান করা হয় যে হাসপাতালে সে মৃত্যুবরণ করেছে।

The site of the suicide bomb attack in Sana'a via @yitersinan

সানার যে স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলা সংঘঠিত হয়েছে। ছবি @ইয়েতেরসিনান-এর মাধ্যমে

যখন থেকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আলি আবদুল্লাহ সালেহ ক্ষমতা থেকে সরে গেছেন, তখন থেকে সানা এবং এডেন-এ, আত্মঘাতী বোমা হামলা এক ধারাবাহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সানায় সর্বশেষ হামলাটি সংঘঠিত হয় ২২ মে তারিখে, ইয়েমেন একত্রীকরণ দিবসের ঠিক একদিন আগে, আর এই হামলায় ১০০ জন সেনা নিহত হয়েছিল।

রয়টার্স সংবাদ প্রদান করেছে যে এই হামলায় ২২ জন নাগরিক নিহত হয়েছে, আর এই হামলার জন্য আল কায়েদাকে দায়ী করা হচ্ছ।

লোনা ক্রেইগ, ইয়েমেনের এক বিদেশী সাংবাদিক, তিনি নীচের টুইটটি করেছেন:

@আইওনাক্রেইগ: পুলিশ একাডেমির ছাত্ররা বলছে যে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ছয়জন মারা গেছে। তারা দাবী করে যে বাহু হারানো এবং এক অংশ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাওয়ার পরেও বোমা হামলাকারী এখনো জীবিত আছে।#ইয়েমেন

@আইওনাক্রেইগ: সৃষ্টি হওয়া রক্তের পুকুরের পাশে সাংবাদিকরা ভিড় জমিয়েছে, এদিকে তারা একাডেমির বাইরে পুলিশ অফিসারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছে। অকারণে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বলে ডাকবেন না।#ইয়েমেন‬‬

ইয়েমেনিভলিউম -এর পোস্ট করা এই ভিডিওতে, হামলার পর পুলিশ একাডেমীর গেটের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ( সতর্কতা: ভিডিওতে গ্রাফিক উপাদান রয়েছে)

আহারারতাঘির১ একটি অত্যন্ত গ্রাফিক ভিডিও পোস্ট করেছে, যেটিতে দেখা যাচ্ছে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী জীবিত আছে, তবে সে তার শরীরের অঙ্গ হারিয়েছে, ভিডিও ধারণ করার সময় সে নাড়াচাড়া করছিল এবং কথা বলছিল।

অনেক নেটনাগরিক এই হামলায় ক্ষুব্ধ এবং কেউ কেউ সংশয়ের মধ্যে রয়েছে যে আসলে এই হামলার পেছনে কে দায়ী। সাধারণত এই ধরনের ঘটনায় আল কায়েদাকে সন্দেহ করা হয়, কিন্তু তারা এমনটা তারা বিশ্বাস করছে না। ইয়েমেন টুডে হচ্ছে সালেহ-পন্থী এক টেলিভিশন চ্যানেল, যার মালিক সালেহ-এর পুত্র, সেই টেলিভিশন-এর কর্মীরা প্রথম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

ইয়েমেনআপডেট, রাশাদ এল সামেয়ি –এর আকা একটি কার্টুন টুইট করেছে, যেটিতে উক্ত টেলিভিশনের কর্মীদের অঙ্কন করা হয়েছে। এতে চ্যানেলের সাংবাদিক “গুরুত্বপূর্ণ একজনের” সাথে কথা বলছেন, তিনি বলছেন, হ্যাঁ আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছি কিন্তু আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এখনো এসে হাজির হয়নি”। এর উত্তরে ক্যামেরাম্যান জানাচ্ছে, “সে আসলে তাকে বল, আমরা কাট নামক উপাদান চিবাতে যাচ্ছি এবং কিছুক্ষণ পর ফিরে আসব”।

@ইয়েমেন_আপডেটস: রাশাদ এল-সামেয়ি, একজন টিভি কর্মীর চিত্র অঙ্কন করেছে–আত্মঘাতী বোমা হামলা সংগঠিত হবার সময় যে এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার কাছে অবস্থান করছিল। https://m.facebook.com/photo.php?pid= …

ইব্রাহিম সালেহ বিস্মিত [আরবী ভাষায়]:

@ব্রাহোম: صنعاء كل يوم تفجير .. كله هذا بعد رحيل صالح
সানায় প্রতিদিন বিস্ফোরণ ঘটছে..এই সকল কিছু ঘটছে সালেহ ক্ষমতা ত্যাগ করার পর থেকে।

ইব্রাহিম মোথানা ব্যঙ্গাত্মকভাবে টুইট করেছে:

@ই মোথানাইয়েমেন: কেবলমাত্র ইয়েমেনে এটি সম্ভব! প্রচার মাধ্যম সংবাদ প্রদান করে যে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নয়জনকে হত্যা করার পরেও নিজেকে জীবিত রাখতে সক্ষম হয়! এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?!

ইয়েমেনীপিসপ্রজেক্ট টুইট করেছে:

@ইয়েমেনীপিসনিউজ: এএএস-এর ফেসবুকের পাতায় আজকের বোমা হামলা সম্বন্ধে কিছুই নেই। কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের পাতাতে নতুন কিছুই নেই।#ইয়েমেন


অন্যরা বিশ্বাস করে যে এই হামলার পেছনে রয়েছে আল কায়েদা নামের সংগঠনটি।

গ্রেগরি জনসন টুইট করেছে:

@গ্রেগরিডিজনসন: আজকের বোমা হামলা হয়ত একটি নির্দেশনা যে আরব অঞ্চলের আবইয়ান এবং শাবওয়া অঞ্চল হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পরে একিউএপি (আরব অঞ্চলের আল কায়েদা) #ইয়েমেন ঘাঁটি গেড়েছে।

আতিফ আলয়াজির টুইট করেছে:

@ওমেনফ্রমইয়েমেন: যারা দাবী করে ইয়েমেনের সামরিক বাহিনী গতমাসে #দক্ষিনে #একিউএপি ওরফে আরব অঞ্চলের আল কায়েদা সংগঠনের উপর উপর বিজয় লাভ করেছে, তারা আরেকবার ভাবুন

ভদ্রমহিলা এর সাথে যোগ করেছেন :

@ওমেনফ্রমইয়েমেন: “তাইজ সিটি” অনুসারে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির পরিবার এই হামলার পেছনে তার থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে,বরঞ্চ তারা বলছে সে নিজেই হামলার শিকার#ইয়েমেন।

ফারিওয়া আলমুসলিমি টুইট করেছে:

@আল মুসলিমি: এখন, সকলে বোমা হামলা “খুঁটিনাটি” নিয়ে ডুবে থাকবে এবং সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি ভুলে যাবে, যেমনটা সব সময় করে থাকে, দরিদ্র #ইয়েমেনকে

ইয়েমেনের নাগরিকদের মাঝে এখন অনেক প্রশ্ন, যদি আল কয়েদা এই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে থাকে তাহলে তারা কেন সন্ত্রাস প্রতিরোধ বিশেষ ইউনিট বা রিপাবলিকান গার্ড, এমনকি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর উপর লক্ষ্য করে হামলা চালায় না, যারা শক্তিশালী এবং অপরাজেয়? যদি সালেহ এইসব হামলার পেছনে কলকাঠি নেড়ে থাকে, তাহলে কখন, কিভাবে তাদের থামানো যাবে, অথবা আদৌও কি তাদের থামানো যাবে? কেবল শোকবার্তা, নিন্দা জানানো এবং তদন্তের আদেশ প্রদান করা ছাড়া এই সব সন্ত্রাসী হামলা থামানোর জন্য সরকার কি আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে? কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজনক প্রশ্ন হচ্ছে আর কতগুলো জীবন ইয়েমেন হারাবে এবং স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবার আগে আর কতটা বেদনা সে সইবে? কোনদিন আদৌও কি তা ঘটবে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .