কেনিয়া: দুর্নীতির বিরুদ্ধে ডিজিটাল কর্মীদের অনলাইনে সংগ্রাম

আমি ঘুষ দিয়েছি কেনিয়ার দুর্নীতি বিরোধী কর্মীদের একটি উদ্যোগ জনসাধারণের দুর্নীতির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনিয়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। আমি ঘুষ দিয়েছি, ভারতের দুর্নীতি বিরোধী পোর্টাল(আইপিএবি) এর মডেল অনুসরণে তৈরি এবং আইপিএবি ও কেনিয়ার ওমানি ট্রাষ্টের অংশিদারিত্বে পরিচালিত যা আইপিএবিকে পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকায় নিয়ে এসেছে।

আমি ঘুষ দিয়েছি হচ্ছে:

নাগরিকদের শক্তি একত্রিত করার মাধ্যমে দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার ওমানী ট্রাষ্টের আদর্শ উদ্যোগ  www.ipaidabribe.or.ke। এই ওয়েবসাইটে আপনি প্রকৃত দুর্নীতির প্রকৃতি, সংখ্যা, ধরণ, স্থান এবং মূল্য সম্পর্কে প্রতিবেদন দিতে পারেন। আপনার প্রতিবেদনটি হতে পারে, সম্ভবত প্রথমবার, সারা দেশে চলমান দুর্নীতির একটি চিত্র। শাসন ব্যবস্থা ও তার প্রয়োগের উন্নয়ন, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং নিয়ন্ত্রণ এবং এভাবে দুর্নীতির প্রশস্ততা কমানোর মাধ্যমে সরকারী সেবা পাওয়ার জন্য আমরা এগুলো ব্যবহার করবো।

সাম্প্রতিককালে অথবা অতীতে আপনি ঘুষ দিয়ে থাকলে তা নিবন্ধনের জন্য আমরা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে আপনি আমাদের বলুন যদি আপনি ঘুষের দাবী প্রতিরোধ করেন, অথবা নতুন পদ্ধতির কারণে আপনাকে ঘুষ দিতে হয় নি অথবা একজন সৎ কর্মকর্তা আপনাকে সাহায্য করেছিল। আমরা আপনার নাম অথবা ফোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব না, আপনি স্বচ্ছন্দে নির্ধারিত ছকে তথ্য দিতে পারেন।

এ বছর মে মাসে ২ কোটি ৫০ লক্ষ কেনিয়ার মানুষের জন্য ‘কেনিয়া আমি ঘুষ দিয়েছি’ সংযুক্ত এসএমএস পদ্ধতির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে এই সাইটে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘুষের অভিজ্ঞতা অবগত ও বিনিময় করা যাবে:

আমি ঘুষ দিয়েছি কেনিয়ার এসএমএস সংক্ষিপ্ত কোড ব্যবহার করে ঘুষের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য, আপনাকে জেলা, দপ্তর, পরিমাণ নির্দেশ করে ২০২৫ নম্বরে এসএমএস করতে হবে।


এই সাইটে কেনিয়ানরা তাদের ঘুষের অভিজ্ঞতা তিনভাবে করতে পারেন:

কেনিয়ানরা ওয়েব সংস্করণ (ipaidabribe.or.ke), মোবাইল সংস্করণ (m.ipaidabribe.or.ke) অথবা ২০২৫ এ এসএমএস করে তাদের ঘুষের অভিজ্ঞতা জানাতে পারেন। ২০২৫ এ এসএমএস করলে ৫ কেনিয়ান শিলিং পরিশোধ করতে হবে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে অনলাইনে ঘুষের অভিজ্ঞতা কতখানি ভূমিকা রাখছে? কলিন বাসওয়ারি বর্ণনা করছেন:

বাস্তবতা ২: কেনিয়ায় ছোট দুর্নীতিগুলো বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞাতই থেকে যায়।

পূর্ব আফ্রিকার ঘুষের সূচক ২০১১ এর মতে জরিপে দেখা গেছে ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত করেন নি। ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের হাঁ।

যেহেতু ছোট দুর্নীতির ঘটনাগুলো ক্রমাগতভাবে অজ্ঞাত থেকে যায়, সরকারী কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত প্রাপ্তির জন্য তাদের দপ্তরের অপব্যবহার করেন।

বাস্তবতা ৩: দুর্নীতি কেনিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত করছে

কেনিয়ার সমন্বিত দুর্নীতির কলঙ্কজনক ঘটনাসমূহ: নব্বই এর দশকের গোল্ডেনবার্গ, এঙ্গলো-লিজিং, ২০০০ এর ভুট্টা ও তেলের কলঙ্কময় ঘটনা এবং ২০১১ সালে ডলার/শিলিং এর লজ্জাকর ঘটনা কেনিয়ার অর্থনীতিতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কল্পনা করুন, এইসব অর্থ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতিতে যদি ব্যবহার করা যেতো।

দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নের নীলনকশা নিয়ে লক্ষ্য ২০৩০ অর্জনের জন্য কেনিয়া ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই দিক বিবেচনায় লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই অঞ্চলে লক্ষ্য ২০৩০ মরীচিকা হতে পারে যদি কেনিয়ানরা সকলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে সকলে সরব ও যুক্ত না হয়।

একজন অজ্ঞাত দর্শক এই সাইটে যুক্ত করেছেন:

এটি সম্পর্কে না বলার অর্থ হচ্ছে এটিকে আরও খারাপ হতে দেয়া এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলা কারণ কেউ অভিযোগ করছে না। আমরা কেনিয়ানরা আমাদের আচরণ হচ্ছে স্থিতিবস্থাকে গ্রহণ করা এবং জিজ্ঞাসা করি না কেন পরিবর্তন হচ্ছে না এবং তারা পারে।

আমরা যে নতুন যুগে বাস করছি, যেখানে প্রযুক্তি এবং সামাজিক প্রচার মাধ্যম জীবনের অংশ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কেন্দ্র করে তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণ খুব দ্রুত করা যায়।

আমরা যত বেশী এটি সম্পর্কে সরব হব, এটি সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে এবং নেতা ও নীতি নির্ধারকদের সমস্যা সমাধানের জন্য চাপ সৃষ্টি করা। অনুগ্রহ করে দুর্নীতি সম্পর্কে কথা বলা বন্ধ করবেন না এবং আমাদের সমাজকে এর জন্য মূল্য দিতে হচ্ছে এবং পচন এখান থেকেই শুরু হয়।

অন্য আরেকজন জানাচ্ছেন:

কেনিয়ানদের স্মৃতিভ্রষ্টতা দেখা দিয়েছে! আমরা দুর্নীতি নিয়ে তখনই সরব হই যখন বড় ধরনের দুর্নীতির লজ্জাজনক ঘটনা ঘটে, ছোট দুর্নীতিগুলো সম্ভবত: আনুমানিক ৩০% গৃহ আয় চুরি করে, আমাদের সম্পদ নষ্ট করে এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটায়।

ছোট দুর্নীতিগুলো গরীব ও মধ্যবিত্তের উপর প্রভাব ফেলে। বড় দুর্নীতিগুলো উচ্চবিত্তরা ’উপভোগ’ করে!

ফেসবুক এবং টুইটারে এই উদ্যোগ।

কেনিয়ায় রাজনীতিবিদ ও সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতির বিস্তার ব্যাপক। গোল্ডেনবার্গ কলঙ্কজনক ঘটনা হচ্ছে কেনিয়ায় সর্ব্বোচ্চ-চলমান দুর্নীতির কলঙ্কজনক ঘটনা যাতে কেনিয়া সরকার সোনা রপ্তানিতে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। গোল্ডেনবার্গ কলঙ্কজনক ঘটনার জন্য কেনিয়ায় বার্ষিক জিডিপির ১০% ক্ষতি হয়।

*ছবি জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিভাগের সৌজন্যে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .