ইরানের ব্লগারদের বেদনাদায়ক কাহিনী এখন এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে: হোসেইন রোনাঘি মালেকি, ইরানের এক কারাবন্দী ব্লগার, তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। হোসেইন-এর পিতা বলছেন, কিডনির দুর্বলতার কারণে স্বয়ং জেল হচ্ছে হোসেইন-এর জন্য একটা অত্যাচার। ব্লগারের শরীরে মোট পাঁচবার অপারেশন করা হয়েছে,কিন্তু প্রতিবার অপারেশন-এর পর তাকে আবার সেই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয় [1], যে কারাগারে না আছে চিকিৎসা সুবিধা, উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার প্রদানের ব্যবস্থা,বা না আছে কিডনি বিশেষজ্ঞ।
১৯ মে ২০১২ তারিখে হোসেইন এক অনশন ধর্মঘট শুরু করে। তার এই অনশনের শুরুর কারণ ছিল খুব সাধারণ: যা ছিল অপারেশনের পর হাসপাতালে থাকার এবং কারাগারে ফিরে না যাবার অধিকারে দাবির জন্য। অনশনের পর তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গড়াতে থাকে, এবং ঘটনাক্রমে এরপর তাকে এক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মানবাধিকার ওয়েবসাইট হেরানা সংবাদ প্রদান করেছে যে [2] [ ফার্সী ভাষায়] বুধবার, ৭ জুন তারিখ থেকে হোসেইন হাসপাতালে “শুষ্ক” অনশন ধর্মঘট শুরু করেছে, যার মানে হচ্ছে সে এর পর থেকে আর পানিও পান করছে না।
হোসেইন রোনাঘি মালেকি সম্বন্ধে এডাম এ্যাভেলুশন বলছে [3] [ফার্সী ভাষায়]:
সে কোন গায়ক নয়, সে কোন ফুটবল খেলোয়াড় নয়, সে নিজেকে নগ্ন ভাবে উপস্থাপন করেনি এবং সে কোন অভিনেতা নয়। সে কেবল ইন্টারনেটে অবাধে প্রবেশের জন্য লড়াই করেছে। তার বয়স ২৭ বছর, এবং তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জেলে সে দশ মাস একাকী একটি কক্ষে কাটিয়েছে। তার শরীরে পাঁচবার অপারেশন করা হয়েছে এবং সে একটি কিডনি হারিয়েছে।
ফেরইয়াদ৩রাঙ্গ লিখেছে [4] [ফার্সী ভাষায়]:
হোসেইনের মা বলছে যে জেলে থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকবার তার সন্তানের অধিকার ভঙ্গ করা হয়েছে এবং একজন আইনজীবী পাবার মত তার অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। জেলে থাকা সন্তানের বিষয়ে কথা বলার সময় তিনি কাঁদছিলেন।
হোসেইন রোনাঘি মালেকির সমর্থনে নাজনিন ১১ জুন তারিখে এক অনশন ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়েছে [5] [ফার্সী ভাষায়]। হোসেইন-এর ঘটনা এবং তার শুরু করা অনশন ধর্মঘটের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধিতে ফেসবুকে একটি পাতার [6] সৃষ্টি করা হয়েছে।
এই ব্লগারের প্রতি সমর্থনে নাগরিকদের উদ্দীপ্ত করার লক্ষ্যে গত বছর ইউটিউবে এক ধারাবাহিক স্লাইড শো প্রকাশ করা হয়েছিল:
ওমিদ রেজা মীর সায়াফি ইরানের প্রথম ব্লগার যিনি ১৮ মার্চ ২০০৯ তারিখে তেহরানের এক কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন [7]। আসুন আমরা প্রচারণা চালাই, প্রার্থনা করি এবং আশা করি যেন এ রকম বিয়োগান্তক ঘটনা যেন আর না ঘটে।