দক্ষিণ কোরিয়াঃ জুয়া, ধূমপান ও মদ্যপান করতে গিয়ে ধরা পড়লেন ভিক্ষুগণ

দক্ষিণ কোরিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দিরের ছয় নেতা পোকার খেলা, মদ্যপান ও ধূমপান করার সময় ধরা পড়েছেন। একটি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এ ব্যাপারটি প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বুদ্ধর জন্মবার্ষিকী পালনের সরকারি ছুটির কয়েক দিন পূর্বে একটি অভিজাত লেকসাইড হোটেলে উচ্চ পর্যায়ের পুরোহিতদের জুয়া খেলা দেখানো হয়েছে।

প্রতিবেদন মতে, পুরোহিতদের জুয়ার অর্থের পরিমাণ ৮৭৫,০০ মার্কিন ডলার (১০ মিলিয়ন কোরিয়ান ওন) ছাড়িয়ে গেছে এবং জুয়াটি সারারাত একটানা ১৩ ঘন্টা চলছিল। দক্ষিণ কোরিয়ায়, নির্দিষ্ট ক্যাসিনো ও ঘোড়দৌড় জায়গাগুলো বাদে অন্য কোথাও জুয়া অবৈধ এবং ধর্মীয় নেতাদের কাছ থেকে এ ধরণের কাজ কঠোরভাবে নেয়ার চেয়েও- অকল্পনীয়। দক্ষিণ কোরিয়ান অনলাইন মাধ্যমে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য, কঠোর সমালোচনা ও তিক্ত হতাশা ব্যক্ত করার মাধ্যমে এই নীতিবর্জিত ধর্মের উপর প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

টুইটার ব্যবহারকারী @uxost01 টুইটবার্তায় বলেন[ko]:

어머니가 조계종 억대 도박 뉴스를 아시고서 충격과 비탄에 빠지셨다.

যোগী ভিক্ষুদের ১০ মিলিয়ন কোরিয়ান ওনের জুয়ার খবরের কথা শুনে আমার মা বিস্মিত ও বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।

টুইটার ব্যবহারকারী আরিরাঙ৫৮৮৬ (@Arirang5886) উল্লেখ করেছেন [ko] যে পুরোহিতদের জুয়ার টাকাগুলো ধর্মের জন্য জনগণের অনুদান ছিলঃ

조계종간부들의 도박, 음주, 흡연행위는 자정의 한계를 넘은 것입니다. 신도들은 피땀어린 시주하면서 절에 다니고, 승려는 그것으로 스릴있게 도 닦는 형국입니다. 부처는 신도의 마음에 있지 절간에 있는 것이 아니라는 것을 잘 나타내고 있는 사건입니다.

যোগীর প্রধান ভিক্ষুদের দ্বারা জুয়া, মদ্যপান ও ধূমপান – এই কাজগুলো দেখায় যে তারা নিজেদেরকে সংবরণ করার ক্ষমতা হারিয়েছেন। তাদের অনুসারীরা যেখানে কষ্টার্জিত অর্থ দেয়ার জন্য নিয়মিত মন্দিরে যাচ্ছে, সেখানে ঐ পুরোহিতগণ ঐ অর্থকে উত্তেজক সত্য-সন্ধানে ব্যবহার করছে। প্রকৃত বুদ্ধ যে প্রত্যেক অনুসারীর অন্তরে থাকেন, মন্দিরে নয় এটাই তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

আরেক টুইটার ব্যবহারকারী নাবিওয়াহিগঘিল (@Nabiwahighhill) দুর্নীতিবাজদের সাথে ঐ পুরোহিতদের তুলনা করেছেন [ko]:

2007 년 명지스님이 100억원 사찰재정을공개하며“수행자는 수행에전념하고,재정은 재가자에맡기자”했다.조계종 승려들이 시줏돈으로 밤샘 도박사건은 승가사회가 타락했음을보여준다.MB정권에서 종교인과 정치인 언론사주가 앙사앙레짐의 2%타락한 귀족이돼간다.

পরিমাণ প্রায় ১০ বিলিয়ন কোরিয়ান ওন (৮.৭৫ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি) এবং বলেছিলেন যে তাদের সত্যান্বেষণ ও অর্থ চালনা আলাদা হওয়া দরকার। যোগীর পুরোহিতদের রাতব্যাপী জুয়া প্রমাণ করল যে বৌদ্ধ সমাজ দুর্নীতিবাজ। ধর্মীয় নেতা, রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া মালিকগণ অর্থাৎ “শাসকদের” ২% দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বনামধন্য চোগী বৌদ্ধ মন্দিরের হেইন্সা মন্দিরে প্রার্থনা শেষে ভিক্ষুদের কক্ষে যাওয়ার দৃশ্য

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বনামধন্য চোগী বৌদ্ধ মন্দিরের হেইন্সা মন্দিরে প্রার্থনা শেষে ভিক্ষুদের কক্ষে যাওয়ার দৃশ্য (অনুচ্ছেদে লিখিত জুয়ার ব্যাপারের সাথে সম্পর্কিত নয়) ছবিঃ জুংহিজুং, ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স) (CC BY 2.0)

যোগী ক্রমের ১০ মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী আছে যা মোট দক্ষিণ কোরিয়ান জনগণের এক পঞ্চমাংশ। যোগী ক্রমের প্রধান, জাতীয় খবরে জুয়ার ব্যাপার শিরোনাম হওয়ার পর পরই “আত্ম-অনুশোচনা” করে জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। যদিও মিডিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিতে [ko] ক্রমের মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে ভিডিওটি পরিকল্পিতভাবে ধারণ করা হয়েছিল, তারপরও কোন কারণ বা অজুহাতই হতাশ কোরিয়ান জনগণকে দেয়ার মত উপযুক্ত নয়।

পার্ক তায়ে-সু (এসজেটিএস (@sjts200)) টুইটবার্তায় বলেন [ko]:

조계종 자승 중은 도박사태 책임지고 사퇴하라.참회만으로 덮을려고?어림없는 소리[…]

এই জুয়া কান্ডের জন্য পুরোহিত জা-সিওং-এর পুরো দায়ভার নেয়া উচিত ও পদত্যাগ করা উচিত। আপনি কি সত্যি মনে করেন এ ব্যাপারে শুধু আত্ম-অনুশোচনা দেখিয়েই এই ব্যাপার ধামাচাপা রাখতে পারবেন? মোটেই না।

ইউন হি-সুং (@yunheesung) tটুইটবার্তায় বলেন [ko]:

불교 조계종 도박파문이 조계종 내부간의 갈등 때문에 일어난 거라 억울하신가요? 그건 당신들 끼리의 다툼이고, 국민은 억대판돈을 놓고 도박하고 술. 담배를 먹고 피워도 되냐를 묻는 겁니다. 아직도 문제가 뭔지 모르세요?

আপনার কি মনে হয় এসব কিছু (অভিযোগ) ভিত্তিহীন যখন অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে এই জুয়া কেলেঙ্কারি হল? আপনার অভ্যন্তরীন ক্ষমতা থাকুক আর নাই থাকুক, ভিক্ষুদের বড় অংকের টাকায় জুয়া, মদপান, ধূমপান কোরিয়ান জনতার কাছে সমর্থনযোগ্য কিনা। আপনারা কি এখানে আসল সমস্যা এখনো দেখতে পাচ্ছেন না?

দক্ষিণ কোরিয়া ধর্মপরায়ণ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল কিন্তু খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সমাজে এত কেলেঙ্কারি দিন দিন কোরিয়ানদের হতাশ করছে এবং ধর্ম ত্যাগে বাধ্য করছে। টুইটার ব্যবহারকারী টাইনিপেনসিল (@tinypencil) টুইটবার্তায় বলেন [ko]:

이제 불교에서도 개신교와 매를 같이 맞아주기로 한건가. 요즘 이미지 참 좋아지던 와중에 승려들의 불법도박이라니.

তো বৌদ্ধ সমাজ কি খ্রিস্টান সমাজের সাথে কড়া সমালোচনা ভাগাভাগি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি জনগণের মনোভাব ভালো ছিল। কিন্তু এখন পুরোহিতদের অবৈধ জুয়া তা শেষ করেছে।

এবং তিনি আরো বলেন [ko]:

조계종 승려들의 밤샘도박. 종교가 세상을.치유하는건지 세상이 종교의 뒤에 숨은 저런자들을 먹여살리는건지.

যোগী ক্রমের পুরোহিতগণ রাতব্যাপী জুয়া খেললেন। এটা কি সেই ধর্ম যা বিশ্বের সেবা করে নাকি এই দুনিয়া সেসব লোকদেরই পালন করছে যারা ধর্মের আবরণে লুকিয়ে থাকে

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .