ইরানের সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায় প্রায়শই কোটি কোটি টাকার দূর্নীতির সংবাদ চোখের সামনে ভাসতে থাকে। সম্প্রতি ইরানের সবচেয়ে বৃহৎ ব্যাংক প্রতারণার এক গরম খবর প্রকাশিত হয়, অভিযোগে প্রকাশ যে প্রতারকরা সরকারের সাথে যুক্ত।
কিন্তু হঠাৎ এক ইতিবাচক সংবাদ ইরান এবং ইরানের বাইরের উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে: তেহরান থেকে ৭০০ কিলোমিটার দুরে বোজনোর্দ নামক শহরে আহমাদ রাব্বানি নামের এক রাস্তার ঝাড়ুদার, এক বিলিয়ন তোমান ইরানী মুদ্রা (প্রায় ৫৭০,০০০ মার্কিন ডলার) কুড়িয়ে পায় এবং তা মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
আর ধন্যবাদ হিসেবে, সে এর জন্য ২ লক্ষ তোমান (১২০ মার্কিন ডলার) পুরস্কার লাভ করে।
ইরানী ব্লগার ইউনিইরানী রাস্তার এই ঝাড়ুদারের প্রশংসা করেছে এবং তার এই কাজটিকে ইরানের সরকারী কর্মকর্তাদের শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাদের অনেকে দূর্নীতির সাথে যুক্ত। ব্লগার লিখেছে [ফারসী ভাষায়]:
… শ্রমিক শ্রেণীর একজন এবং পৌরসভার এক কর্মী, এক বিলিয়ন তোমানের একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পায় এবং সেটিকে তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়। এই বিষয়ে আমার উপলব্ধি, তার এই কাজ কতটা অমূল্য, তা আমরা তখন বুঝতে পারি, যখন আমরা জানতে পারি যে দেশের সঙ্কটাপন্ন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সে দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। স্বাভাবিকভাবে এই রকম এক বাস্তবতায় সে টাকাটা রেখে দিতে পারত, তার কাজ ছেড়ে দিতে পারত এবং ওই সব লাখপতিদের একজন হতে পারত। কিন্তু সে তা করেনি। যে সমস্ত চোর এবং দুর্নীতিবাজ দেশের সকল কিছু লুটে নিচ্ছে, তাদের দুর্বল নীতি, যা কিনা দেশটির জন্য এক সীমাহীন অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে, সে তাদের জন্য এক শিক্ষা হোক।
আরেকজন ব্লগার, পেশারিরোউনি এই ঘটনা সম্বন্ধে লিখেছে এবং বলছে [ফারসী ভাষায়]:
অনেকের কাছে আত্মমর্যাদার বিষয়টি এখনো বিদ্যমান… এমন এক সময়ে, যখন ভাই তার ভাইকে দয়া করে না…আমি নিজে এক শ্রমিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই সমস্ত মানুষগুলো যে সব সমস্যার মুখোমুখি হয় তার প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। আমি তার আত্মমর্যাদার প্রশংসা করি এবং মনে করি এই কাজের জন্য তাকে মেডেল দিয়ে সম্মান করা উচিত।
ডিলটুডিল লিখেছে [ফারসী ভাষায়] যে এই টাকা ফেরত দিতে গিয়ে রাব্বানীকে অবশ্যই বড় আকারে লোভ সম্বরণ করতে হয়েছে, বিশেষ করে সে যখন হিসেব করে দেখেছে, যে পরিমাণ টাকা সে কুড়িয়ে পেয়েছে, সেটি তার ১৬৬ বছর রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে আয় করা সমান।