এই পোস্টটি আমাদের বিশেষ কাভারেজ মিশর বিপ্লব ২০১১–এর অংশ।
স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার পার্টি (এফজেপি, মুসলিম ব্রাদারহুড [ভ্রাতৃত্ব]-এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত) অনুমোদিত সংবাদপত্রের খবর “গাঞ্জুরি মন্ত্রিসভার পতনের দাবিতে লক্ষ লক্ষ জনগণের একটি মিছিল” – মিশরীয় জনগণকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে দিয়েছে। “কীভাবে এসব শুরু হলো? ছিল সবার প্রশ্ন। কীভাবে মিশরের সামরিক কাউন্সিল (এসসিএএফ) এবং প্রায় নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক সংখ্যাগুরুর সাথে এরকম “মন্দ ছাড়াছাড়ি”তে পর্যবসিত হলো?
এফজেপি একটি বিবৃতি প্রকাশ [আরবী] করলে ধারাবাহিকভাবে অভিযোগ শুরু হয়:

স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার পার্টির দেখানো বর্তমান সরকারের বিরোধিতার কারণ।
– সরকারকে টিকিয়ে রাখা হলে নির্বাচনের সততা এবং সংবিধানের উপর নেয়া গণভোট সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হবে
– এসসিএএফ কী মানুষকে হতাশ এবং নির্বাচনে কারচুপি করে বিপ্লবকে বিফল করতে চায়?
– এসসিএএফ সুপ্রিম সাংবিধানিক আদালতের প্রধানের কাছে আবেদন করে সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছে।
– এসসিএএফ-এর ক্ষমতায় ব্যর্থ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জেদের অর্থ হলো তারা মানুষকে হতাশায় ডুবিয়ে নির্বাচনে কারচুপি করে বিপ্লবকে বিফল করতে চায়
মুসলিম ব্রাদারহুডের বিবৃতির মতোই এসসিএএফ-এর প্রতিক্রিয়াও ছিল উস্কানিমূলক, যা ১৯৫৪ সালের ঘটনা মনে করিয়ে দেয় যে সময় কর্তৃপক্ষগুলো মুসলিম ব্রাদারহুডকে অভিযুক্ত, নিষিদ্ধ, জেলখানায় বন্দি এবং নির্যা্তন করেছিল। এসসিএএফ বলেছে যে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগগুলো মানহানিকর। তারা এছাড়াও হুমকির সুর বলেছে যে “কিছু কিছু রাজনৈতিক শক্তি”কে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
ক্ষমতাসীন লোকজন এবং ক্ষমতা হাতে নিতে যাচ্ছে এমন লোকজনের মধ্যেকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াইয়ে কী হবে সেটা নিয়ে জনসাধারণ এখন চিন্তায় পড়েছে। তারা কী সংঘর্ষে জড়িত হবে নাকি এটা আজকাল মিশরে মঞ্চস্থ হওয়া রাজনৈতিক নাটকের একটি অঙ্ক মাত্র?
একই সাথে, মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের খেলাটি সাজানোর চেষ্টা করছে এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সাবেক উপ-প্রধান গাইড এবং বিশাল ব্যবসায়ী খায়রাত আল শাতেরকে মিশরের বিকল্প প্রেসিডেন্সি আইনের জন্যে তাদের মনোনীত ঘোষণা করেছে। সিদ্ধান্তটি জঘন্য, এমনকি মুসলিম ব্রাদারহুড এবং স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার পার্টির সদস্যদের জন্যেও।
বেশিরভাগই একে একটি ভুল হিসেবে দেখছে, কেউ কেউ একে একটি “শেষের শুরু”র চিহ্ন বলে অভিহিত করেছে। অন্যান্যরা মুসলিম ব্রাদারহুডকে নতুন এনডিপি বলেছে, যেখানে ক্ষমতা এবং টাকা নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে পরিগণিত।
সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এই উদ্ভট মনোনয়ন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করে তাদের মতামত ও বিশ্লেষণধর্মী দৃষ্টিভঙ্গী প্রদানের একটি ব্রত গ্রহণ করেছেন:
খালেদ এল বারামাভি [আরবী] শাতেরকে আবুল ফতুহ–এর (একজন নেতৃস্থানীয় ব্রাদারহুড ব্যক্তিত্ব প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছে ঘোষণা করার পর বহিষ্কৃত)সাথে তুলনা করে টুইটে ব্যঙ্গোক্তি করেছেন:
@ইজিপ্রেস : مره واحد رشح نفسه اتفصل … قام اللي فصله رشح نفسه سبــــــــــــــــحان الله.. يعنى قاله ماعنديش وهو كان عنده جوة ! #মিশর #ইখওয়ান
তাকাদুম এল খাতিব [আরবী] টুইট করেছেন:
@তাকাদুম : الإخوان ..كاذبون كاذبون كاذبون كاذبون كاذبون كاذبون …إلى شباب الإخوان استقيلوا يرحمكم الله واتركوا القيادات الكذابة #ইখওয়ান
ওয়ায়েল এস্কান্দার-এর বিশ্লেষণটি আরও ভারসাম্যপূর্ণ ছিল:
@ওয়েস্কান্দার: আল শাতের যদি ঐকমত্যের প্রার্থী হন তাহলে #এসসিএএফ হল #ইখওয়ান। তার পক্ষে এটা হওয়া খুবই অসম্ভব।
আহমেদ আগুর টুইট করেছেন:
@সাইফারাইজ : অত্যাচারিতই অত্যাচারী বনে গিয়েছেন। #ইখওয়ান
খায়রাত এল শাতেরের ১০ সন্তানের একজন হাসান এল শাতের, তার পিতার মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি খুশি নন। তিনি টুইট করেছেন:
@হাসান_এলশাতের: দুর্ভাগ্যবশত বাবা প্রেসিডেন্সির জন্যে লড়ছেন! :s
আসলে কেউ জানে না মিশরের রাজনৈতিক খেলার পরিসমাপ্তি কীভাবে হবে। কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত মিশরীয়রা একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময় প্রত্যক্ষ করছে এবং শুধুমাত্র তারাই তাদের ইতিহাস নির্ধারণ করবে।
এই পোস্টটি আমাদের বিশেষ কাভারেজ মিশর বিপ্লব ২০১১–এর অংশ।