এই পোস্টটি আমাদের বিশেষ কাভারেজ সিরিয়ার প্রতিবাদ ২০১১/১২ [1]-এর অংশ।
ভিডিও এক্টিভিস্ট এবং বাব আমর মিডিয়া অফিসের প্রধান, আলী মাহমুদ ওথমান [2]কে সিরিয়ার সরকার ধরে নিয়ে গিয়েছে। বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীর মনে করেন তাকে গুরুতর নির্যাতন করা হচ্ছে। তাঁর আটক অফিসের সব এক্টিভিস্টদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে এবং এটা সে দেশের একটি নাগরিক সাংবাদিকতার প্রতি বিশাল এক আঘাত।
ওথমান মূলত একজন সবজি বিক্রেতা। সিরিয়ার বিপ্লবের শুরু থেকে তিনি হোমসের অস্থিরতার দৃশ্য ধারণ করেছেন। তিনি যারা বাবা আমরের সংঘর্ষ কাভার করছিলেন তাদের এবং এর ভিতরের এলাকাগুলো থেকে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের বেরিয়ে যেতে সাহায্য করছিলেন। কিন্তু সিরিয়ার সামরিক বাহিনী তিনমাস বোমাবর্ষন করে বাবা আমর এবং আশেপাশের এলাকাগুলো পুনর্দখল পরও তিনি সেখানে থেকে গিয়েছিলেন।
স্প্যানিশ সংবাদ আউটলেট পেরিওডিসমো হিউমানো [3]-এর সংবাদদাতা মনিকা জি. প্রিতো’র মতে, “আশপাশের এলাকাগুলোতে একজন লোক থাকা পর্যন্ত তিনি স্থানত্যাগ চাননি, তিনি চলে যাওয়ার সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন”।
নিচের ভিডিওটি আদরের ডাক “বাবা আমর এর চোখ” নামে পরিচিত ওথমান বিশ্বকে বাবা আমরের জনগণের দুর্দশা সম্পর্কে বলছেন। তিনি তার পরিচয় সম্পর্কে কোনরকম উদ্বেগ ছাড়াই ক্যামেরার সামনে কথা বলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন তিনি যদি তার মুখ দেখান তাহলে তার বার্তাটি বেশি নির্ভরযোগ্য হবে এবং ব্যাপকতর দর্শক-শ্রোতার কাছে পৌঁছাবে:
এক্টিভিস্টরা তার হদিস সম্পর্কে সংবাদ শেয়ার করার জন্যে এবং তার মুক্তি দাবিতে একটি ফেসবুক পাতা [5] তৈরী করেছেন। এবং সাংবাদিক রক্ষা কমিটি [6] সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ওথমান এবং সকল আটক সাংবাদিকদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে:
সিরিয়ার নাগরিক সাংবাদিকরা অস্থিরতার দৃশ্য ধারণ করতে তাদের জীবনের অসাধারণ ঝুঁকি নিচ্ছেন। শাসকগোষ্ঠীকে অবশ্যই তাদেরকে অবদমিত করার এবং পাশবিক অভিযানের রিপোর্ট থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে।
তার আটক মূলধারার মিডিয়া [7] মূলধারার মিডিয়ার এবং বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব উইলিয়াম হেগ তার মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন:
আমি অবিলম্বে জনাব ওথমান এবং অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেয়ার জন্যে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। সিরিয়ার শাসকগোষ্ঠীকে জনাব ওথমানের নিরাপত্তা এবং তার প্রতি আচরণের জন্যে দায়ী করা হবে এবং আমি ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিতব্য সিরিয়ার বন্ধুদের সভায় তার বিষয়টি উত্থাপন করবো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জন ম্যাককেইন টুইট করেছেন [8]:
Gরিপোর্ট পেয়েছি যে আসাদ বাহিনী সিরিয়ার সাংবাদিক আলী মাহমুদ ওথমানকে আটক করে নির্যাতন করছে – বিশ্ব তার মুক্তির জন্যে অবশ্যই আহ্বান জানাবে।
ওথমানের আটকটি মূলতঃ #ওথমাঙ্কেমুক্তকরো [9] হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টুইটারে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে। এছাড়াও নেটনাগরিকেরা তার মুক্তির দাবিতে একটি পিটিশন [10] শুরু করেছেন।
সাংবাদিক রানদা হাবীব ওথমান এবং দামেস্কে একইদিনে নিখোঁজ হওয়া এক্টিভিস্ট নূরা আলজিওয়াজি [11]’র বিপদ সম্পর্কে মনযোগ আকর্ষণ করেছেন [12]:
#সিরিয়া [13]’র প্রতিরোধের প্রতীক আলী মাহমুদ ওথমান ও কর্মী নূরা আল-জিওয়াজি, গ্রেপ্তার, তাদের জীবন বিপদের মুখে: রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)
ওথমান গ্রেপ্তারের ছয়দিন পরে বন্ধুরা ফেসবুকে [5] নিচের বার্তাগুলো পোস্ট করেছেন:
আলীর কণ্ঠ এবং উষ্ণ শব্দ ছাড়া ৬ষ্ঠ রাত। ৬ষ্ঠ রাত ধরে আলী হাত বাঁধা অবস্থায় ঘুমাচ্ছে, নির্যাতন-অত্যাচারে অবসন্ন। এটা ৬ষ্ঠ রাত এবং আলীর নাম সুদূর অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, জনগণ তার মুক্তি দাবি করেছে। এটা ৬ষ্ঠ রাত বিপ্লবে কোন আলী নেই। বাবা আমরের কোন এক নায়ক এখন বিপ্লবের এক বীর। প্রতিদিন বারবার করা তার ভাল কাজের মাধ্যমে তিনি বহু আহত, সাংবাদিক, বন্ধু এবং পরিবারকে বাঁচিয়েছেন।
বেঁচে থাকা অনয়তম সাহসী একজন মানুষ, আলী ওথমানের মুক্তি।
এই পোস্টটি আমাদের বিশেষ কাভারেজ সিরিয়ার প্রতিবাদ ২০১১/১২ [1]-এর অংশ।