ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়া নামক দুটি রাষ্ট্র মে ১৯৯৮ থেকে জুন ২০০০ সাল পর্যন্ত পরস্পরের সাথে এক তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ১৭ মার্চ ২০১২-এ ইথিওপিয়ার বাহিনী ইরিত্রিয়ার উপর এক হামলা চালায়, উক্ত ঘটনায় দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে আবার নতুন করে যুদ্ধ শুরু হবার গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, ইথিওপিয়ার নেটনাগরিকরা তাদের মন্তব্যে একে প্রত্যাখ্যান করছে।
ইথিওপিয়ার সেনার দ্বিতীয়বারের মত ইরিত্রিয়ায় হামলা চালিয়েছে, এই সংবাদের মাঝে, ইথিওপিয়ার প্রাবন্ধিক এবং নির্বাসিত ব্লগার, বেশীর ভাগ নেট নাগরিকদের স্বরকে তুলে ধরেন, যখন তিনি আমাহারিক ভাষায় লেখা তার নিয়মিত ব্লগ পোস্টে ইরিত্রিয়ার উপর ইথিওপিয়ার হামলার ঘটনাকে ব্যাঙ্গ করেন:
እንግዲህ ዳግም ጦርነት ሊጀመር ይመስላል… በርግጥ ኤርትራ “ጦርነት የሚፈልገው የጦርነትን ዋጋ የማያውቅ ነው” ብላ የጦርነት ‘ሀፒታይት” እንደሌላት ብትገልፅም ኢህአዴግ ግን ጦር አውርድ እያለ ነው። ከዚሁ ጋር ተያይዞ “ውድ እና ጉድ የሆናችሁት የኢህአዴግ ባለስልጣኖች ሆይ ይቅርታ አድርጉልንና “ከሽራሮ ያቺው የማትረባ ሽሮ ትሻለናለች!” እና ዝመቱ በላችሁ እንዳትጠሩን አደራ! (በማለት አንዳንድ የህብረተሰብ ክፍሎች መልዕክታቸውን አስተላልፈዋል)
মারকাটো ব্লগে লেখার সময় ইলমা বেকেলে যুক্তি প্রদান করেছে, যুদ্ধ ইথিওপিয়ার সরকারের লক্ষণ ব্যাখ্যা করছে:
যুদ্ধ এখন আমাদের উপর এসে পড়ছে। যুদ্ধ ইথিওপিয়ার সরকারের লক্ষণ বর্ণনা করেছে। যখন থেকে তারা ক্ষমতায় এসেছে, তখন থেকে তারা তাদের জনতার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। এখন দেশটির আর কোন অঞ্চল বা কোন আদিবাসী গোষ্ঠি এই সংক্রমণ থেকে মুক্ত নয়। এই সরকার সব সময় তার বিরোধী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী, এবং ব্যবসায়ীদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। সরকার যাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত এরা হচ্ছে তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজন। এই সরকার গাম্বেলা, হাউসা আম্বো, আরবা মিঞ্চ, এবং অন্যান্য স্থানীয় জাতির সাথে যুদ্ধ করেছে, যারা তার নিজস্ব নাগরিক। ইথিওপিয়া সরকার ওগদান এলাকায় সোমালী–ইথিওপিয় নাগরিকদের সাথে যুদ্ধ করছে এবং তারা এখানে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হয়েছে।
ইরিত্রিয়ার উপর ইথিওপিয়ার আক্রমণ, ইথিওপিয়ার জনমতকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া এক কৌশল:
একটি আদর্শ বিশ্বে, কোন রাষ্ট্র এই রাষ্ট্রের অসুস্থ সরকারের কাছে কোন অস্ত্র বিক্রি করবে। ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়ার জনগণ অনেক যুদ্ধ দেখেছে। যে প্রজন্মটি ঘৃণা এবং শত্রুতা হৃদয়ে পুষে রাখত তারা বিদায় নিতে যাচ্ছে। আভ্যন্তরীণ শত্রুতা থেকে নিজেকে বাঁচানোর শেষ সুযোগ। ইথিওপিয়ার সরকার দেশটির জনগণকে যুদ্ধের বিষয়টিকে যৌক্তিক করার জন্য ইরিত্রিয়ার হুমকিকে ব্যবহার করেছে। পৃথিবীর বুকে দুই দুর্বল অর্থনৈতিক রাষ্ট্র তাদের মূল্যবান সম্পদ একে অপরকে খুন করার কাজে ব্যবহার করছে। ইরিত্রিয়ার চেয়ে ইথিওপিয়ার কাছে আর কেউ নেই। ইরিত্রিয়ার হৃদয়ের সবচেয়ে কাছে ইথিওপিয়ার বাস। পূর্ব আফ্রিকার বাণিজ্য ও প্রযুক্তি গড়ার বদলে তারা ঘৃণা এবং সংঘর্ষের কথা শুনছে। এটা একটা নতুন দিন। আর একটা নতুন প্রজন্ম তৈরী হয়েছে, যারা ঘৃণা এবং সংঘর্ষকে পরিত্যাগ করেছে।
জেলেলেম নামের এক নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহারকারী, সরকারের, সরকারী সংবাদ সংস্থার সাইট থেকে সংবাদ প্রদান করার বিষয়ে উপহাস করেছে [আমহারিক ভাষায়]:
የአገር መከላከያ ሠራዊት በወሰደው የማጥቃት እርምጃ የኤርትራ መንግሥትና ተላላኪዎቹን የጥፋት ተልዕኮ ማዕከላትን ዛሬ ማውደሙን አስታወቀ።
জেলেলেম এর সাথে আরো যোগ করেছে :
What ? But, What does ሠራዊቱ በወሰደው የማጥቃት እርምጃ የኤርትራ መንግሥትና ተላላኪዎቹን የጥፋት ተልዕኮ ማዕከላትን አወደመ mean? Anyway አስታጥቁን አታስጨርሱን እኔ በበኩሌ ጦር እና ጋሻየን አራግፌያለው፡፡
ዝማሬየንም ወደ፡ ኧረ ጎበዝ ይሙት፣ ፈሪ ይሩጥ ቢሻው፣ አተላ መሸከም ይችላል ትከሻው፡፡ ቀይሬአለሁ hahaha እኔም ብሎ ጎበዘ
একই ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছে :
যদি তা ঘটে, তাহলে আমি মনে করি (http://www.foreignaffairs.com/articles/57223/gail-m-gerhart/brothers-at-war-making-sense-of-the-eritrean-ethiopian-war)’ এটা ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ হবার বদলে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।'অন্তত আমার কাছে, কারণ মেলেস-এর ইথিওপিয়ার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সে আমার জীবন ধ্বংস করেছে, সে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ধ্বংস করেছে, তাহলে কেন আমি এই যুদ্ধে লড়াই করব? একজন স্বৈরশাসকের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি আশা করি আনাদের বেশীর ভাগেরও নেই সে রকম কোন সম্পর্ক নেই …
কিফলু হাসান, উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা ভিত্তিক এক মানবাধিকার রক্ষাকারী, তিনি গ্রীক কবি হোমারের লেখা একটি কবিতার উদ্ধৃতি প্রদান করেছে:
কেউ এত বোকা নয় যে, শান্তি বাদ দিয়ে যুদ্ধ চাইবে। শান্তির সময় পুত্র, পিতাকে কবরে শায়িত করে কিন্তু যুদ্ধের সময় পিতা, তার পুত্রকে কবরে শোয়ায়।
ফেসবুকে আরেকটি মন্তব্য করা হয়েছে, তা পাঠ করুন :
আমরা যুদ্ধ চাইনা, আমাদের একত্রিত করণের প্রয়োজন নেই, আমরা কেবল সুদানের মত এক স্বাভাবিক প্রতিবেশী হতে চাই। যুদ্ধ ভালো কিছু নয় এবং যারা একত্রিত হবার কথা বলে তারা কখনোই ইরিত্রিয়ার মানসিকতা উপলব্ধি করতে পারে না। ইরিত্রিয়ার জাতীয়তাবাদ, ইথিওপিয়ার বিরোধিতার উপর গড়ে উঠেছে, সময়ের প্রেক্ষাপটে।
এমনকি কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী একটি সম্প্রদায় ভিত্তিক পাতা তৈরী করেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘হাবেসা জনগোষ্ঠী তাদের সাথে বাস করতে পারে না, আবার তাদের ছাড়াও বাস করতে পারে না”। বেশীর ভাগ নাগরিক এখানে উভয় জাতীর মধ্যে ভ্রাতৃপ্রতীম চিত্র অঙ্কন করে, যুদ্ধের বিষয়ে কথা বলা প্রত্যাখ্যান করে মন্তব্য করেছে। এই সম্প্রদায়ের এক সদস্য ইরিত্রিয়ার এক শিশুর আঁকা ছবি প্রদর্শন করেছে এবং লিখেছে:
““ফিলমোন মেসুফান “ আমরা শান্তি চাই” নামক একটি চিত্র অঙ্কন করেছে… সে (ইরিত্রিয়ার) জাগরার জুনিয়র স্কুলের ছাত্র। আমি চিত্রটি পোস্ট করার সিদ্ধান নিয়েছি, কারণ নাগরিকদের ফেসবুক এবং ইউটিউব রাজনৈতিক আবর্জনা দিয়ে ভরিয়ে ফেলতে দেখে আমি অসুস্থ্য এবং ক্লান্ত… আমাদের মধ্যে যে মিল এবং যে মতপার্থক্য, আমাদের তা উদযাপন করা প্রয়োজন!!! ঘৃণা কোনভাবেই ঘৃণাকে থামাতে পারে না!! একজন সবাইকে ভালবাসে।
ইথিওপিয়ার সরকার ইরিত্রিয়া আক্রমণের যে অজুহাত প্রদান করেছে, দেশটির অনলাইন নাগরিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরিত্রিয়া থেকে বার বার এই সংবাদ প্রদান করা হচ্ছে, ইথিওপিয়া দেশটির বর্তমান সরকার অপসারণের পরিকল্পনা করছে। ইথিওপিয়ার এই প্ররোচনা পূর্বক হামলার জন্য ইরিত্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করেছে।