- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ভারত: বিশ্বের সর্বশেষ হাতেলেখা সংবাদপত্র

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, ভারত, ইতিহাস, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা

সংবাদপত্রের [1] আদিরূপটি হলো হাতে লেখা এবং সম্ভবতঃ ‘দি মুসলমান [2]’ই বিশ্বের সর্বশেষ অবশিষ্ট হাতে লেখা সংবাদপত্র। ১৯২৭ সালে এই উর্দু ভাষার সংবাদপত্রটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জনাব সৈয়দ আসমাদুল্লাহ সাহী এবং তখন থেকেই ভারতের চেন্নাই শহর থেকে প্রতিদিন এটি প্রকাশিত হচ্ছে।

বর্তমানে সৈয়দ আসমাদুল্লাহের নাতি সৈয়দ আরিফুল্লাহ এর পরিচালনায় ছয়জন দক্ষ লিপি কর্মী প্রতিদিন চার পৃষ্ঠার এই সংবাদপত্রে কাজ করেন। প্রায় ২৩,০০০ প্রচারসংখ্যার উর্দু ভাষার এই সংবাদপত্রটিতে রাজনীতি, সংস্কৃতি ও খেলাধুলাসহ নানামুখী সংবাদ পরিবেশিত হয়। প্রযুক্তির সাম্প্রতিক উন্নয়নের ফলে জনগণ সংবাদ ইন্টারনেটে পড়ার কারণে যেখানে কাগজের সংবাদপত্র লোপ পাচ্ছে, সেখানে খবর পরিবেশনে এমন ব্যক্তিগত স্পর্শ খুঁজে পাওয়া বিরল। সংবাদপত্রটির মূল্য এখনো মাত্র ৭৫পয়সা [3] (২ মার্কিন সেন্ট প্রায়)।

পত্রিকা অফিসের সাইনবোর্ড। দি মুসলমান ভিডিওটির স্ক্রীণছবি থেকে [3]

পত্রিকা অফিসের সাইনবোর্ড। দি মুসলমান ভিডিওটির স্ক্রীণছবি থেকে

মদনমোহন তরুণ [4] রিপোর্ট করেছেন:

বর্তমানে এটি সম্পাদনা করছেন সৈয়দ আরিফুল্লাহ। তার পিতা মারা গেলে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার পিতা এটি ৮০ বছর পরিচালনা করেন। তার এটি দাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৯২৭ সালে। এই সংবাদপত্রটি এখনো তার আদি রূপটি পরিগ্রহ করে আছে এবং উ্দু কম্পিউটার ফন্টের সাথে আপস করেনি। [..]

প্রতিটি পৃষ্ঠা তৈরী করতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এর খণ্ডকালীন প্রতিবেদকদের কাছ থেকে ইংরেজীতে সংবাদ পাওয়ার পরে এগুলো উর্দুতে অনুদিত হলে কাতিব’রা – এখনো উর্দু লিখন শৈলী ধরে রাখা এসব লেখকেরা – পুরো কাহিনীটি কাগজে লিখে ফেলেন। তারপরে সেই গোটা হাতে লেখা কাগজটি নেগেটিভ অনুলিপি তৈরী করে ছাপার প্লেটে ছাপ দেয়া হয়।

কাজে নিয়োজিত লিপিকর্মীরা। [3]

কাজে নিয়োজিত লিপিকর্মীরা। ‘দি মুসলমান’ ভিডিওটির স্ক্রীনছবি

কেনো এখনো লিথোগ্রাফি ব্যবহার করা হয় ব্যাখ্যা করে আফসার শাহীন [5] মন্তব্য করেন লুৎফিস্পেসের একটি পোস্টে [6]:

উর্দু টাইপ সেট করা খুবই কঠিন এবং হাতে লেখা কাজের তুলনায় টাইপ সেট দেখতে কুৎসিত। সুতরাং অন্যান্য ভাষা টাইপ সেট গ্রহণ করলেও উর্দু লিথোগ্রাফে ফিরে গিয়েছে।

কম্পিউটারের আবির্ভাবের সাথে সাথে উর্দু লেখা অনেক গতি পায়। এতে লিথোগ্রাফির সমস্যা ছাড়াই লিপিবিদ্যার লেখনী ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবুও দক্ষ কাতিবের লেখা এবং ভালভাবে লিথোগ্রাফ করা বই বা সংবাদপত্র খুবই মনোমুগ্ধকর এবং সুন্দর; কম্পিউটারে লেখা উর্দু তার ধারে কাছেও না।

পত্রিকাটি সম্পর্কে আরও জানতে ইশানি কে. দত্ত [7] পরিচালিত এবং ভারতের বহির্বিশ্ব বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক বিভাগের প্রযোজিত ও ইউটিউবে আপলোড করা [3] এই ভিডিওটি দেখুন: