জর্দান: এক বছর পরেও উত্তেজনা বাড়ছে

২৪শে মার্চ, ২০১২ – জর্দানকে অভ্যন্তরীণভাবে কাঁপিয়ে দেয়া ছুটির দিনটির এক বছর পরে অলস পুনর্গঠন প্রচেষ্টাটি আরো শোচনীয় রূপ ধারণ করছে। এটা ছুটির সেই দিনটির বার্ষিকী যেদিন জর্দানিদের বিভিন্ন দল শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখানোর জন্যে আম্মানের রাস্তায় নেমে এলে নিজেদের ‘মাতৃভূমির ডাক’ (নিদা ওয়াতান) নামে পরিচয় দেয়া একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সাথে তাদের মুখোমুখি হয়। নিদা ওয়াতান দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবে রাজার ছবি সাথে নিয়ে চিৎকার করে রাজা আব্দুল্লাহর সাথে তাদের সংহতি জানায় এবং ক্রমেই তাদের কণ্ঠ ও ভাষায় আগ্রাসন বাড়তে থাকে। গ্লোবাল ভয়েসেস গত ২৪শে মার্চ এবং ২৫শে মার্চ, ২০১১ তারিখের কিছু প্রতিক্রিয়া সংকলন করেছে।

সেই সপ্তাহান্তটিকে মনে করিয়ে দিতে গত বছর মোহান্নেদ আল-আরাবিয়াত লিখেছেন সিটিজেন মিডিয়া সাইট সাইবার (৭আইবিইআর)-এ:

আমি তাদের অর্থায়ন ও লজিস্টিক সহায়তার ভিতর ঢুকতে চাই না, কিন্তু আমাকে বলতে দিন: এর সবটাতে সরকারের হাত ছিল। দলটি ফেসবুকে একটি পাতা খুলেছিল।  তাদের ভাষায় ছিল সহিংসতা এবং ২৪শে মার্চের মতো গণহত্যার হুমকিপূর্ণ, ফ্যাসিবাদী। কোনো কোনো মন্তব্যকারী এমনকি হিটলারের কথা বলেছিলেন। সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার মতো ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল। যে কেউ অবাক হয় রাষ্ট্র সেটা “দেখেছিল” কিনা।

বাস্তব জীবনে দৃশ্যটি কুৎসিত। কিন্তু একটি জিনিস পরিষ্কার: একপক্ষ শান্তিপূর্ণ ছিল, অন্যপক্ষ নয় (এখানে পড়ুন)। একটি দল পাথর ছুড়ছে এবং অপমান করছে, অপরপক্ষ কিছুই করছে না।

মোহান্নেদ-এর পর্যবেক্ষণ চলতে থাকে:

বলবেন না যে আমরা প্রস্তুত অথবা স্বাধীনতা এবং মর্যাদার যোগ্য  নই। এটা গণতন্ত্র বিষয়ক নয়, কারণ গণতন্ত্র শুধুমাত্র একটি হাতিয়ার।  এটা আমাদের সম্পর্কে, আমাদের মানবতা সম্পর্কে। আমাদের জন্মগত মর্যাদাবোধ আর ঈশ্বরপ্রদত্ত স্বাধীনতার অধিকারের ব্যাপার। ভুল মূল্যবোধে গড়ে উঠা দলগুলোর ছড়িয়ে দেয়া ঘৃণা ও সহিংসতা কোনো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে না। কারণ “একাকী” বা আগে উল্লেখ করা দলগুলো থেকে দূরে থাকা ব্যক্তি, আঘাত করার এবং খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম। আসুন আমাদের অধিকারের পক্ষে দল তৈরী করি।

আজকে, এক বছর পর, বিক্ষোভ চলছে, উদ্বেগগুলো বাড়ছে এবং জর্দান যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি বিভক্ত বিদ্যমান পুনর্গঠন আলোচনার অবসাদে। একদিকে বছরের পর বছরের বেপরোয়া দুর্নীতি প্রকাশ করা মামলাগুলো সবার আলোচনায় পরিণত। বারবার রাজনৈতিক সংস্কারের ব্যর্থতা, সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং জনসাধারণকে যুক্ত করে কার্যকর সংলাপের অনুপস্থিতি। মাঝে মাঝে রাস্তা ও ক্যাম্পাসে সংঘটিত যুব সংঘাতের ফলে বন্দিত্ব। কোনটি কাজ করেছে বা কোনটি কাজ করেনি এমন কিছুর জ্ঞানগর্ভ এবং আন্তরিক আলোকপাতের অভাবে গত কয়েক দশকের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের যে কোনো কিছু নিয়ে মৌখিক দোষারোপ। এবং অপরপক্ষে এইসব উত্তেজনা নিয়ে খেলা অথবা ভাল করে শোনার প্রয়োজনের প্রতি দায়িত্বহীন অবহেলা এবং আমাদের মত-পথের আমূল পরিবর্তন। নতুন ফাটল দেখা দিচ্ছে এবং পুরাতনগুলো গভীরতর হচ্ছে।

জননিরাপত্তা বিভাগ (পিএসডি), গেন্ডারমেরি (দারাক), এবং সাধারণ গোয়েন্দা বিভাগ (জিআইডি) রাস্তায় ছোট্ট বিবাদ ও সংঘর্ষের মাধ্যমে সফলভাবে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সক্ষম হয়েছে। তবুও আমি বিশ্বাস করি যে উত্তেজিত গণ-আলোচনা এবং চলমান বিক্ষোভগুলো একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেসার-কুকারেরই ইঙ্গিত বহন করে। মহাসংকট। যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারার ব্যর্থতা।

২৪শে মার্চ এবং বছরটি সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে গত রাতে তায়সির আল ক্লুব ব্লগে বলেছেন (আরবী):

أين الأردنيين؟ هل اكتفوا من هذا الحلم؟ ما هذه الأعداد التي لا توصل الصوت؟ هل سئم الناس؟ هل اكتفوا؟ هل نسوا؟ هل شبعوا؟ هل تحقق حلمهم؟ أين أبطال الديجيتال بالآلاف على الفيسبوك والتويتر؟ أنا يا سادتي المراقبين لا أحرّض بل أتساءل وأستفسر، فأنا شاب أردني بسيط لا يملك لهذا الوطن من خير أو شر إلا حلما يحمله في قلبه الصغير.
জর্দানীরা কোথায়? তাদের এই স্বপ্ন কী যথেষ্ট হয়েছে? কণ্ঠস্বর নেই এমন কতজন আছে? জনগণ কী বীতশ্রদ্ধ? তারা কী ভুলে গিয়েছে? তারা  কী সন্তুষ্ট? তাদের স্বপ্ন কী পূরণ হয়েছে? ফেসবুক এবং টুইটারের হাজার হাজার ডিজিটাল বীরেরা কোথায়? আমি উস্কে দিচ্ছি না, বরং শুধু জিজ্ঞেস করছি সাধারণ একজন জর্দানী হিসেবে এবং যেহেতু আমি আমার এই ছোট্ট হৃদয়ে এই জাতির জন্যে স্বপ্ন দেখি বলে।

এই সপ্তাহে আম্মানে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং বিতর্কের পরিকল্পনা করা হয়েছে সারা বছরের রসদ নিয়ে এবং কিছু নাগরিক আন্দোলনের অবস্থান নিয়ে গভীর আলোচনা করতে। সারা সপ্তাহ জুড়ে গ্লোবাল ভয়েসেস অনুষ্ঠিত এইসব আলোচনার কিছু কিছু সংকলিত করবে:

-#জবিতর্ক, আজ সন্ধ্যায়, ২৪শে মার্চ জর্দান বিতর্ক ক্লাব-এর আয়োজনে, রাস্তার অব্যহত আন্দোলনগুলো জর্দানীদের প্রতিনিধিত্ব করে কিনা
-#মাকহাআম্মান, মঙ্গলবার ২৭শে মার্চ, মাকহা আম্মান আলসিয়াসি (ক্যাফে পলিটিক-আম্মান)-এর আয়োজনে গত বছরের দাখলিয়েহ সার্কেল বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আলোচনা
-#হ্যাশট্যাগবিতর্কগুলো, শনিবার ৩১শে মার্চ সাইবার(৭আইবিইআর).কম-এর আয়োজনে রাজনৈতিক এবং জর্দানের পুনর্গঠন আন্দোলনের  পটভূমিতে ২৪শে মার্চের বিক্ষোভগুলোর ফলাফল নিয়ে বিতর্ক

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .