বসন্তের প্রথম দিনে (২০শে মার্চ) ইরানী নববর্ষ নওরোজ উদযাপনে গোল্ডফিশের একটি বিশেষ স্থান আছে। কিন্তু প্রতি বছর প্রাণী অধিকার কর্মী ও ব্লগাররা এদের না কিনতে উৎসাহ জানিয়ে প্রচারাভিযান চালায়। মাছগুলোকে প্রায়শঃই খারাপ অবস্থায় রাখা হয় এবং প্রতিদিন লাখ লাখ মারা যায়।
নওরোজ পালনে আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু হল “হাফৎ সিন” টেবিল, যা ‘স’(ফার্সি سین) অক্ষর দিয়ে শুরু সাতটি প্রতীকি খাবার দিয়ে সাজানো। এছাড়াও টেবিলটি মোমবাতি, আয়না, রঙ্গিন ডিম… এবং জীবন্ত (লাল মাছ বলে ডাকা) গোল্ডফিশ দিয়ে সাজানো থাকে। অনেক ইরানী এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন।
জাদিদ অনলাইন ২০০৮ সালে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র (ইংরেজি সাবটাইটেলসহ) নির্মাণ করে। এতে কীভাবে নওরোজের মাছগুলো কেনা-বেচা ও ব্যবসায়িকভাবে চাষ করা হয় সেটা দেখানো হয়।
ইরানী ব্লগার নাসিম সাবা লিখেছেন [ফার্সি ভাষায়]:
দয়া করে গোল্ডফিশ কিনবেন না। গত কয়েক বছর ধরে প্রাণী অধিকার কর্মীরা এই সুন্দর প্রাণীগুলো রক্ষার্থে জনগণকে গোল্ডফিশ না কিনতে উৎসাহিত করার একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে। প্রতি বছর তাদের এই প্রচারাভিযানটি আরো সফল হচ্ছে। নববর্ষ উদযাপনের জন্যে জনগণ কেনাকাটা শুরু করলে দোকানগুলোতে আবার গোল্ডফিশ দেখা দেয়। প্রচারাভিযানকারীরা এই ভয়ানক বাণিজ্য বয়কট করতে শুরু করে। গোল্ডফিশ ইরানী ঐতিহ্য নয়, এটা এসেছে চীনা ঐতিহ্য থেকে। নওরোজের সময় ইরানে প্রতি বছর অর্ধকোটি গোল্ডফিশ মারা যায়।
.
গ্রীনব্লগ একই ধারণা পোষণ করেন না। ব্লগার লিখেছেন [ফার্সি ভাষায়]:
আমাদের গোল্ডফিশ কেনা বয়কট করা উচিৎ নয়। প্রাণীদের জন্যে প্রতিকূল পরিবেশ সৃস্টির পরিবর্তে আমাদের এর পরিবহণকারী থেকে এর ক্রেতা পর্যন্ত সকল জনগণকে জানানো ও শিখানো উচিৎ কীভাবে গোল্ডফিশ নাড়াচাড়া করতে হয়… গোল্ডফিশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণার পরিবর্তে আমাদের গোল্ডফিশ সরবরাহকারীদের পর্যবেক্ষণ করা উচিৎ… নেতিবাচক প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোনো কোনো ইরানী গোল্ডফিশের বদলে কচ্ছপ ব্যবহার করছে।
ব্লগার আরো বলেছেন যে অনেকে বলেন গোল্ডফিশ ঐতিহ্য এসেছে চীন থেকে, কিন্তু গুগলে পরীক্ষা করে তিনি জেনেছেন যে স্বয়ং চাইনিজ ঐতিহ্যই এসেছে ইরান থেকে!