মেক্সিকো: পেন প্রতিবাদ! আন্তর্জাতিক লেখক সংঘ মেক্সিকোর সহকর্মীদের সাথে সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ করলো

মেক্সিকোর লেখক, কবি এবং সাংবাদিকদের সাথে সংহতি জানাতে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সাহিত্য ও মানবাধিকার সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনাল গত ২৯ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মেক্সিকো সিটিতে একটি কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচীর নাম পেন প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ কর্মসূচীর মাধ্যমে মেক্সিকোর গণমাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবি তোলা হয়।

মেক্সিকো সিটির কিংবদন্তি শহর কলোনিয়া রোমা শহরের ক্যাসা লাম নামের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এই পেন প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হয়। এটার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে, পেন ইন্টারন্যাশনাল ওই কর্মসূচীর বর্ণনা দিয়ে বলেছে, “মেক্সিকোতে সাংবাদিক হত্যা ও গুম হওয়া নিয়ে জবাবদিহিতার দাবী করে জনগণের সংহতি সমাবেশ।“ এখানে আরও বলা হয়:

একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংগঠন হিসেবে পেন লেখকদের নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নিয়োজিত। পেন সাংবাদিক হত্যার ঘটনার নিন্দা জানায়। যারা গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছেন, তারা যেন শাস্তির আওতার বাইরে না থাকতে পারেন, সেটার আহবান জানানো হয়। ‍”পেন প্রতিবাদে” উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য, যারা লেখক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে বেশ পরিচিত। তারা মেক্সিকের গণমাধ্যম কর্মীদের কার্যকর সুরক্ষা দিতে জাতীয় পর্যায়ের ওঠা দাবির সাথে সংহতি জানান।

জানুয়ারির ২৭ তারিখে মেক্সিকের পত্রিকা এল ইউনিভার্সাল-এ পেন এই বিজ্ঞাপনটি দেয়:

মেক্সিকোর সাংবাদিক এবং লেখকদের প্রতি:

আমরা, সারাবিশ্বের লেখকরা, আপনার এবং মেক্সিকোর জনগণ, যারা হত্যা, শাস্তির বাইরে থাকা এবং দায়মুক্তি বন্ধ চান, তাদের সাথে আছি।

আমাদের এই হুমকি এবং অধিকার লংঘনগুলো কমাতে হবে। মেক্সিকোর জনগণের অধিকার আছে, শান্তিপূর্ণ ভাবে বাস করার এবং সেন্সরশিপ থেকে মুক্ত থাকার।

আপনার অধিকার আছে একটি নিশ্চিন্ত জীবনের। ভয়কে দূর করে সঠিকভাবে পেশাদার কাজ চালিয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তার অধিকারও আপনার আছে। আমরা সরকারকে অনুরোধ করি, যারা আপনার সহকর্মীদের মেরে ফেলেছে, এবং আপনাকে মেরে ফেরার আগেই যেন তাদের গ্রেফতার করে এবং মামলা দায়ের করে। এটা নৈতিক দায়িত্ব- জনগণকে সম্মান করা, তাদের অধিকারকে রক্ষা করা।

আমরা আপনার সাহসের সম্মান করি এবং আমাদের সবার মানবতার নামে এই দাবী জানাই।

এই বিজ্ঞাপনে সারাবিশ্বের ১৭০ জন লেখকের স্বাক্ষর রয়েছে। এর মধ্যে জে এম কোয়েটজি, চিনুয়া আচেবে, ড্যানিয়েল অ্যালারকন এবং টনি মরিসনও রয়েছেন।

PEN International Delegation at PEN Protesta! in Mexico City on January 29, 2012. Photo by Alain Pescador, used with permission.

২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি তারিখে মেক্সিকো সিটিতে পেন প্রতিবাদে পেন ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি দল। অ্যালেইন পেসক্যাডরের তোলা ছবি অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

জিয়োগ্রাফিয়া দি রিসগোজের ব্লগে {স্প্যানিশ ভাষায়) কর্মসূচীর উল্লেখ রয়েছে:


En México 56 periodistas fueron asesinados y 18 desaparecieron entre el 2000 y el 2011, según datos de la Sociedad Interamericana de Prensa. La ONU y la OEA consideran a México como el país más peligroso para el ejercicio periodístico en el continente americano.

En este contexto, una delegación compuesta por 12 personas de la asociación de escritores PEN Club Internacional visitó México bajo el lema PEN Protesta, para emitir “un mensaje de solidaridad de decenas de miles de escritores del mundo con el pueblo mexicano que tanto admiramos”, informó John Ralston Saul, escritor canadiense y presidente de PEN.

ইন্টার আমেরিকান প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের হিসেবে মতে ২০০০ – ২০১১ সালের মধ্যে মেক্সিকোতে ৫৬ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরো ১৮ জন সাংবাদিক। জাতিসংঘ এবং ওএএস মেক্সিকোকে সাংবাদিকদের জন্য আমেরিকার সবচেয়ে বিপদজনক দেশ হিসেবে অভিহিত করেছে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই সারাবিশ্বের লেখকদের সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনালের ১২ জন প্রতিনিধি মেক্সিকো সফরে এসেছিলেন। তারা পেন প্রতিবাদের মাধ্যমে “সারাবিশ্বের হাজার হাজার লেখক মেক্সিকোর জনগণের পাশে আছে, তাদের ভালোবাসে” এই বার্তা দিতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন পেন ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি, কানাডার লেখক জন রালসটন সউল।

সাংবাদিক রেনাতো কনসুইগ্রা কিউবা নুয়েস্তা ব্লগে কবি হোমেরো আরিদ্রজিদের বক্তব্য হাইলাইটস করেছেন

La frase del poeta Homero Aridjis no podía ser más emotiva: “México es un país mágico, donde hay asesinados pero no asesinos”. Por ese motivo la delegación más grande de PEN viajó a México —los 7 de Norteamérica, Japón e Inglaterra y todo el Ejecutivo—, en muestra de solidaridad con los periodistas asesinados y con la exigencia a flor de labios, en la jornada de este medio día: PEN protesta.

কবি হোমেরো আরিদ্রজিদের কথাগুলো মোটেও আবেগতাড়িত শোনাবে না: “মেক্সিকো এক আশ্চর্য জাদুময়তার দেশ, যেখানে লোকে খুন হয়, কিন্তু কোনো খুনি নেই।” এই কারণে পেন-এর বড় একটি প্রতিনিধি দল মেক্সিকো সফর করে গেল। পুরো নির্বাহী পর্ষদসহ, এর ৭ জন উত্তর আমেরিকা, জাপান এবং ইংল্যান্ড থেকে এসেছিলেন। যারা খুন হয়েছেন তাদের সাথে সংহতি জানাতে, তাদের মুখে দাবী তুলতে, আজকের দুপুর অনুষ্ঠিত হলো: পেন প্রতিবাদ।

পরে রেনারে তার পোস্টে মেক্সিকোর খ্যাতিমান লেখক এলেনা পোনিয়াতোস্কার আরো জোরালো বক্তব্য উদ্ধৃত করেন (স্প্যানিশ ভাষায়):

La escritora Elena Poniatowska dijo que “en México decir la verdad es jugarse la vida; lo terrible es que el número (de asesinatos) aumente; hasta cuándo ejercer el periodismo será una sentencia de muerte; cuánto tiempo más debemos esperar para que las autoridades ofrezcan garantías reales que garanticen la vida y la profesión, cuánto tendrá que pasar para que México deje de ser el país más peligroso de América Latina para ejercer el periodismo”.

লেখক এলেনা পোনিয়াতোস্কা বলেছেন, “মেক্সিকোতে সত্য বলার মানে হচ্ছে, নিজের জীবনকে সংকটাপন্ন করা; সবচেয়ে আতংকের ব্যাপার হলো, খুনের সংখ্যা বাড়ছে; এখানে সাংবাদিকতার চর্চা মানেই মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নেয়া; জীবন, জীবিকার নিশ্চয়তা পেতে কতকাল কর্তৃপক্ষের মুখ চেয়ে অপেক্ষা করতে হবে; সাংবাদিকতার জন্য লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বিপদজনক দেশ থেকে মেক্সিকো কবে যে বের হতে পারবে!”

পেন প্রতিবাদ সম্পর্কে আরো জানতে পারবেন সংগঠনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .