মালদ্বীপ: বিদ্রোহের ঘটনার পরে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ

মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, যিনি মূলত এক পরিবেশবাদী হিসেবে অত্যন্ত সুপরিচিত, তার শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে পুলিশের সাথে সামরিক বাহিনীর যোগ দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২-এ, তিনি পদত্যাগ করেন

দেশটির প্রথম বহুদলীয় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর ২০০৮ সালে নাশিদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সম্প্রতি সামরিক বাহিনী যখন তার প্রতি আনুগত্য প্রত্যাহার করে নেয়, সে সময় তিনি সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে অবস্থান করছিলেন। একটি গাড়িতে করে তাকে কাছেই অবস্থিত রাষ্ট্রপতির দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি সাংবাদিকদের সামনে এক সারাসরি প্রদর্শীত টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন।

মালদ্বীপের বেশ কয়েকজন নাগরিক রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। মায়িদ লিখেছে :

একটি আন্তরিক অনুরোধ রয়ে গেছে, মালদ্বীপের একজন রাষ্ট্রপতিকে আঘাত করবেন না। মর্যাদা বজায় রাখুন এবং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না। তাকে রক্ষা করুন।

বান্দারা কোশির সামনে সমাবেত জনতা। এটি জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর (এমএনডিএফ)-এর সদর দপ্তর, যেখানে রাষ্ট্রপতি নাশিদকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছবি এমইউএইচ-এর। অনুমতি গ্রহণের মাধ্যমে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি এর এক পোস্টের পরবর্তী লেখায় যুক্ত করেছেন:

২০০৮ সালে আমরা স্বৈরশাসন পদ্ধতি থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রবেশ করি এবং সে সময় আমরা বিশ্বের সামনে একটা উদাহরণ স্থাপন করি। আমি নিরাপত্তা বাহিনীকে আবার সেই উদাহরণ স্থাপনের আহ্বান জানাচ্ছি।

আজকে, দিনের শুরুতে যখন পুলিশ দাঙ্গা শুরু করে, তখন এক উত্তেজনা দেখা দেয়। পুলিশ দাবী করে যে তারা অবৈধ আদেশের বিরুদ্ধে। দৃশ্যত যাকে মনে হচ্ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অবস্থান, সেই পর্যায় থেকে সামরিক বাহিনী সরে এসে নিজেদের সদর দপ্তরে অবস্থান গ্রহণ করে। তিন সপ্তাহ ধরে রাজধানী মালেতে সন্ধ্যায় পুলিশের এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল, বিরোধী দল যার আয়োজন করত। মূলত সরকার, সামরিক বাহিনীকে এক উচ্চপর্যায়ের বিচারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেবার পর থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত।

নাশিদ সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ ওয়াহিদ হাসান নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এমনকি যদিও শপথ গ্রহণের সময় হাসান সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান, তারপরেও দেখার বিষয়, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা বিক্ষোভ এত দ্রুত প্রশমিত হয় কিনা, সম্পত্তি বিনষ্ট করা এবং সাংবাদিক এবং প্রচার মাধ্যমের অফিসসমূহের উপর হামলা দ্রুত বন্ধ হবে কিনা।

যে সমস্ত সেনারা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল, তারা জনতার সাথে হাত মেলাচ্ছে। ছবি এমইউএইচএ-এর। অনুমতি গ্রহণের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়েছে।

যখন উত্তেজনা চরমে পৌঁছে, তখন মালদ্বীপে ক্রমাগত গণতন্ত্রের অনুশীলন প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। বিতাড়িত রাষ্ট্রপতির সমর্থকরা ক্ষমতার এই পরিবর্তনকে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে দেখছে, সেখানে তার বিরোধীরা মঙ্গলবারের এই ঘটনাকে জনতার দাবী বলে অভিহিত করছে।

যখন মালদ্বীপ এই বাস্তবতায় প্রবেশ করে যে, পরবর্তী নির্দ্ধারিত নির্বাচনের প্রায় দুই বছর আগে দেশটির সরকার পাল্টে গেল, তখন এই বিষয়ে দেশটি সামাজিক প্রচার মাধ্যম এবং টুইটারে মতামত বিভক্ত এবং অনুভূতি মিশ্র। আজ #মালদ্বীপ নামক হ্যাশট্যাগ টুইটারে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়।

ধানিশ টুইট করেছে

@ জিলআলি @ইয়াত্তেই, শীঘ্রই জনতা উপলব্ধি করবে যে, ওই সমস্ত বিরোধী দলের পশ্চাৎপদ নেতাদের তুলনায় নাশিদ কতটা যৌক্তিক ছিলেন! আমার কথা স্মরণ রাখবেন!””

হাম_ডন টুইট করেছে:

@হাম_ডন: যে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনে জেতানোর জন্য আমরা এত কঠোর পরিশ্রম করলাম, তাকে পদত্যাগ করতে দেখে দুঃখ পাচ্ছি এবং বেদনা অনুভব করছি

এপিক্লোজার তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছে :

@এপিক্লোজার: নাশিদ আপনি #ডিসে২৩-এর বিক্ষোভকে আমলে নেননি, আপনি আমাদের ঠাট্টা করেছেন এবং সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছেন। এটা হচ্ছে তার ফলাফল। শান্তি।

এই বিদ্রোহ সম্বন্ধে হাউমালদিভস-এর এই কথাগুলো বলার আছে:

@হাউমালদিভস: @ সিএনএন মালদ্বীপ; সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে নাশিদের অবৈধ গ্রেফতারের নির্দেশ, যা কিনা বিক্ষোভে পরিণত হয়…এবং সামরিক বাহিনীর এই অভিযানের ফলে পুলিশের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়।

উত্তেজনা প্রশমিত হবার পর জনতা মালদ্বীপের পতাকা নাড়ছে। ছবি এমইউএইচ-এর। অনুমতি গ্রহণের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়েছে।

লিমন্ট টুইট করেছ:

@লিমন্ট: নাগরিকের #নাশিদকে তার নিজের দেওয়া চালে পরাজিত করেছে। #মুজ্জাহাররা# মালদিভস#এমভিরেভ্যুলুশন

@প্রফইউলজিস্ট, পুলিশ দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল দখল করার তার অবস্থান পাল্টে যাবার বিষয়ে টুইট করেছে।

@প্রফইউলজিস্ট: প্রচার মাধ্যমে এত দ্রুত রূপান্তর এবং অবস্থানে পাল্টে ফেলার ঘটনা আর কখনো দেখিনি! টিভিএম থেক এমএনবিসিতে১-এ রাপান্তরিত হতে মাস পর মাস লেগেছে কিন্তুসেখান থেকে টিভিএম-তে ফেরত আসতে মাত্র ১০ মিনিট সময় লেগেছে।

ঘটনা পাল্টে যাবার বিষয়ে মাসাফিজের বক্তব্য হচ্ছে :

@মাসাফিজের:মালদ্বীপের গণতন্ত্রের এক নতুন যুগ, জনতা তাদের ক্ষমতাকে প্রমান করল এবং পদত্যাগ করে রাষ্ট্রপতি তার সাহস প্রদর্শন করল।

মালদিভস১১, মাসাফিজের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় টুইট করেছেন :

@মালদিভস১১: @মাসাফিজ, আমার সন্দেহ রয়েছে, এটা জনতার দাবী কিনা। আমি দুঃখিত, কিন্তু বিশ্বাস করি না যে এটা জনতার দাবী।

মাসাফিজ একই সাথে ভবিষ্যতের বিষয়ে চিন্তা করছে:

মাসাফিজ: অবশেষে, ডঃ ওয়াহিদের দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন পূরণ হল, বিষয়টি বিস্ময়কর হবে, জনতা কি ভাবে তার শাসনকে গ্রহণ কর! সবচেয়ে ভালো হচ্ছে অপেক্ষা করা এবং কিছুদিনের জন্য পর্যবেক্ষণ করা!# মালদিভস

নতুন সরকারে কাছে হালিম৭০৭-এর প্রত্যাশা অনেক

হালিম৭০৭:রাষ্ট্রপতি ওয়াহিদকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তার সরকার হবে দূর্নীতিমুক্ত। পুরষ্কার হিসেবে প্রদান করা সকল প্রকল্পে আমরা স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতার দাবী করি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .