ইজরায়েল: মিথ্যা, সত্য এবং (একটি সৈনিক ও একটি মেয়ের) মাইম

নিচের ছবিতে এক সৈনিক একটি ছোট্ট মেয়ের ওপর পা রাখছে – ইজরায়েলী নিরাপত্তা বাহিনীর (আইডিএফ) সদস্য এবং ফিলিস্তিনী মেয়ের কথিত এই ছবিটি সামাজিক ওয়েবে ঘুরে ফিরছে গত কয়েকদিন ধরে। ছবিটি পোস্টকারী ওয়েসলি মুহাম্মদ এটি আরেকজনের নিউজ ফিডে একই ক্যাপশনে দেখেছেন বলে দাবি করেন এবং অবাক হচ্ছেন এটা তার পাতা থেকে কেন ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে গেল। দুইদিনের মধ্যে ছবিটি (এখন নামিয়ে ফেলা হয়েছে) ৫০০ মন্তব্য লাভ করে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ ছবিটিকে ভূয়া বলে দাবি করে ।

ইওসি গাভনি, ইজরায়েলী নিরাপত্তা বাহিনী (আইডিএফ) এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার বা পোশাক পরে না- এই দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে ছবিটি আবার পোস্ট করেন, যা মূলতঃ ইজরায়েলীদের মধ্যেই প্রচারিত হয়েছে। আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে গতবছর ফরাসীতে ছবিটি টুইট করা হয়েছিল সিরীয় বিক্ষোভের বাস্তব ছবি ভেবে একে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে। কিন্তু আরব ব্লগার ওমর দাখানে, আসল ছবিটি (নিচে) পেয়েছিলেন না সিরিয়া বা ইজরায়েল থেকে, পেয়েছিলেন বাহরাইনে পথনাটকের এক প্রদর্শনী থেকে।

এই গল্পটি একা শিক্ষার মাধ্যমে এখনেই শেষ হয়ে যেতে পারতো যে মিডিয়া অপব্যবহার আর উন্মাদনার যুগে যা কিছু প্রচারিত হয় তার সবকিছু বিশ্বাস করতে নেই। কিন্তু আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোন কোন ইজরায়েলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিকৃষ্ট মিথ্যার সবচেয়ে ভাল জবাব হচ্ছে হাস্যকর মাইম। গত ২৪ ঘণ্টায় অনেক ছবিতে সৈনিকটিকে পাল্টে বিভিন্ন চরিত্র বসিয়ে ১০গ্যাগ-এর শুরু করা ৯গ্যাগ কৌতুক আর মাইমসৃষ্টির ইজরায়েলী জবাব ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ একটি ছবিতে সত্যিকার ইজরায়েলী নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরিহিত একটি কুকুরকে সৈনিকটির স্থলাভিষিক্ত করে, সম্ভবতঃ ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করার জন্যে ইজরায়েলী নিরাপত্তা বাহিনী কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেয় আগেকার এই অভিযোগের জবাব হাস্যকরভাবে দেয়ার জন্যে। অন্যান্য যেসব চরিত্র মেয়েটির ওপর পা দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে স্টার ওয়ারস্-এর এক সাম্রাজ্যবাদী সৈনিক, এ্যাংরি বার্ড, এ্যান্ডরয়েড, অবতারের নাভি, চাক নোরিস এবং আরো অনেক।

ছবিটিকে মাইমে পরিণত করে ইজরায়েলীরা ‘সামাজিক মিডিয়ার ভাষা‘তে বলছে যে এরকম পরিস্থিতি হাস্যকর ও কাল্পনিক। যদিও এই উন্মাদনার শুরু করা ওয়েসলি মুহাম্মদ ইতি টেনেছেন এভাবে: “আমি ছবিটি নামিয়ে ফেলেছি (যদিও ইজরায়েলী-ফিলিস্তিনী সংঘর্ষে এধরনের ঘটেই থাকে)“। এর প্রতিক্রিয়া শানি ইয়াকোভ এক কোলাজ ছবি পোস্ট করেছে, যার শিরোনাম “ এটা হচ্ছে আইডিএফ-এর আসল ছবি” (নীচে) যেখানে সেনাদের ইতিবাচক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সাথে মিশতে দেখা যাচ্ছে। তবে সত্য হচ্ছে, সে সব সময় যেখানে অবস্থান করে, সম্ভবত এই দুইয়ের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছে।

 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .