এই লেখাটি আমাদের বিশেষ প্রবন্ধের এক অংশ।
- বাহারাইন বিক্ষোভ ২০১১
- মিশর বিপ্লব ২০১১
- মরোক্কো প্রতিবাদ ২০১১
- সিরিয়া বিক্ষোভ ২০১১
- তিউনিশিয়া বিপ্লব ২০১১
- ইয়েমেন বিক্ষোভ ২০১১
২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন তিউনিশিয়ার একটি ছোট্ট শহর সিদি বোউজিদের এক রাস্তার ফলের দোকানদার মোহাম্মদ বোয়াজিজি নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, এই ঘটনার পর সারা আরব বিশ্বে এক অভূতপূর্ব জনপ্রিয় এক বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর ফলে এই অঞ্চলে অভূতপূর্ব সব ঘটনার সৃষ্টি হয় যা কেউ জীবনেও কল্পনা করতে পারেনা।
আরবের তিনজন স্বৈরশাসক ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে যায়, অন্য অনেককে শাসন ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে বাধ্য হয়, এদিকে অন্য রাষ্ট্রগুলোতে যে সব সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে তা বেদনাদায়ক এবং রক্তাক্ত বলে প্রমাণিত হয়।
২০১১ সালের যে কোন ঘটনার ক্ষেত্রে, আরব বিশ্বের ইতিহাসে বছরটা স্মরণীয় ভাবে চিরজাগরূক হয়ে রইবে এই কারণে, বিশেষ করে যখন জনতা তাদের নিপীড়ক শাসকদের বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে শুরু করে।
যখন আমরা ২০১১ সালকে বিদায় দিয়েছি এবং ২০১২ সালের সামনের দিকে তাকাতে যাচ্ছি, সেই অবস্থায় আমরা আমাদের লেখদের অনুরোধ করেছিলাম, তাদের দৃষ্টিতে ধরা পড়া ছবি আপনাদের প্রদর্শন করে, যে সব ছবি গত বছর তাদের নিজ নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। নীচের নির্বাচিত ছবিগুলো তাদের পছন্দের প্রতিনিধিত্ব করছে।
তিউনিশিয়া
১৪ জানুয়ারি, ২০১১-এ তিউনিশিয়ার রাজধানী, তিউনিশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবনের সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী, দেশটির স্বৈরশাসক জিনে এল আবেদিন বেন আলীর পতনের দাবীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে একই দিনে, বেন আলি সৌদি আরবে পালিয়ে যায়।
সিরিয়া
সিরিয়ার” দখলকৃত কাফার নাবেল শহর থেকে” এক শক্তিশালী বার্তা।
লেবানন
এমনকি যদিও ২০১১ সালে লেবানন কোন বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেনি, সিডার বৃক্ষের এই দেশটি তারপরেও প্রচণ্ডভাবে অত্র এলাকার ঘটনাবলী এবং দুর্দশার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। তবে লেবাননবাসীদের জীবনযাত্রার মানে উচ্চ হারে ব্যায় বৃদ্ধি তাদের জীবনকে তাড়া করে ফেরে। এই ঘটনার পরে সরকারের প্রতিটি বিভাগে নিদৃষ্ট বেতন বৃদ্ধি এবং এমনকি এর পরিকল্পনার আগে, সবকিছুর দাম ভায়াবহ ভাবে বেড়ে যায়।
প্যালেস্টাইন
প্যালেস্টাইন: “সম্মিলিত ভাবে স্বাধীনতার পথে যাত্রা শুরু করা”
ইয়েমেন
ইয়েমেনে ব্যাপক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, যা সারা বছর জুড়ে চলছে, তা ছিল ইয়েমেনের জনতার ধারাবাহিক এবং দৃঢ় মানসিকতার উদাহরণ এবং তা অবশেষে এই বিলবোর্ড-এর লেখাকে প্রমাণ করেছে যে “জনতার হয় জয়”।
বাহরাইন
@আলমাকানা উপরের ছবিটা টুইটারে প্রদর্শন করে। এতে দেখা যাচ্ছে, এক রাতের মধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকায় বাহারাইনী কর্তৃপক্ষ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। উক্ত বিশেষ দিনে আমি নিজের কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ার মধ্যে পড়ে যাই। সেই রাত এবং তার পরের দিন আমি অসুস্থ অবস্থায় কাটাই এবং সারা দেশের টুইটার ব্যবহারকারীদের টুইট এবং অভিযোগ অনুসরণ করতে থাকি।
@সানাবিসভয়েস-এর এই ছবিটি, আমাদের খালি কাঁদানে গ্যাসের শেল প্রদর্শন করেছে, যা একটি ছোট্ট একটা এলাকা থেকে একদিনে সংগ্রহ করা হয়েছে।
অনলাইনে এ ধরনের অজস্র ছবি রয়েছে, যা নেট নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তুলে ধরেছে এবং তারা এমন এক গল্প বলেছে যা ১১ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে- এটি এমন এক ঘটনা যার প্রতি বিশ্ব তেমন একটা গুরুত্ব প্রদান করেনি।
মিশর
২৫ জানুয়ারি,২০১১ তারিখে, মিশরের রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে প্রথম বিক্ষোভের সূত্রপাত। এটাই ছিল বিপ্লবের শুরু।
মরোক্কো
মরোক্কোর সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই মরোক্কোর সুপারম্যানের দিকে এই ছোট্ট বালিকাটি এক বিস্ময়ে তাকিয়ে রয়েছে যেন সে উড়ে চলে যায়। হয়তবা উক্ত ব্যক্তিটি এক উগ্র জাতীয়তাবাদী, যে এখানে একটি যুক্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে? অথবা সে হয়ত ফেব্রুয়ারি ২০ নামক সংস্কারপন্থী দলের সমর্থক? কিন্তু তাতে কি আসে যায়। তবে আমিনে হাচিমোতো-এর অসাধারণ ছবির পেছনে মরোক্কোর এক নতুন বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে। ২০১১ সাল হচ্ছে এমন এক বছর যখন দেশটির রাস্তা এক অহিংস রাজনৈতিক প্রকাশভঙ্গীর নাট্যশালায় পরিণত হয়। এ সব হচ্ছে এমন সব ঘটনা, যা আগামী বছরেও দেখা যাবে।
এই লেখাটি আমাদের বিশেষ প্রবন্ধের এক অংশ।