তিউনিশিয়া হচ্ছে সেই দেশ, যেখানে প্রায় এক বছর আগে তথাকথিত আরব বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ প্রজ্বলিত হয়েছিল। এখন দেশটিতে এক অর্ন্তবর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি শপথ গ্রহণ করেছেঃ যার নাম মনচেফ মারজোকি। তাঁর বয়স ৬৬ বছর। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিনে আবেদিন বেন আলীর সময় তিনি প্রথমে কিছুদিন জেলে বন্দী থাকেন এবং পরে নির্বাসনে চলে যান। তার, মধ্য বাম দল, কংগ্রেস ফর দি রিপাবলিকান, ইসলামপন্থী দল এননাহাদা এবং সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল- ফোরাম ফর লেবার এবং লিবার্টি-এর সাথে জোট বেঁধেছে।
অক্টোবরের ২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রেক্ষিতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদদের সম্মেলনে মনচেফ মারজোকিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি নির্বাচিত ২০২ জন সংসদের মধ্যে ১৫৩ জনের ভোট পান।
আমি, একটি দেশ, একদল জনতা এবং এক বিপ্লবের প্রতিনিধিত্ব করছি। তিউনিশিয়া দীর্ঘজীবী হউক। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার বার্তা হচ্ছে, আমাকে বিশ্বাস করার জন্য ধন্যবাদ, আর যারা আমাকে ভোট দেননি, তাদের বার্তা আমি গ্রহণ করলাম… আমি জানি যে আপনারা আমার কাজকে গণনার মধ্যে রাখবেন, ভোট পাওয়ার পর জনাব মারজোকি এই কথাগুলো বলেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর তার প্রথম টুইটটি ছিল এ রকম [ফারসী ভাষায়]:
Merci beaucoup de m'avoir accorder votre confiance. Je ferai tout pour être à la hauteur. Vive la #tunisie
মারজোকির সমালোচনা:
তাঁর সমালোচকরা দাবী করছেন যে ক্ষমতার প্রতি মোহের কারনে মারজোকি তার ধর্ম নিরপেক্ষ চরিত্র বিসর্জন দিয়েছে, যখন তার দল এননাহাদার সাথে মিলে ক্ষমতাসীন জোট গঠন করে।
এক্সট্রাব্লগ লিখেছে [আরবী ভাষায়] :
যদিও মারজোকি সংসদীয় নির্বাচনে একটি আসন লাভ করেছে, তারপরেও তার সমালোচকরা বিশ্বাস করে যে সে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নয়।
ফিরাস টুইট করেছে [ফারসী ভাষায়]:
Ça me fait marrer quand j'entends sur #TTN et partout ailleurs que notre président actuel est “élu”. #tnAC #Marzouki #Tunisie
কাসেম জিলদি, “আরব বিপ্লবের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি-প্রায়”, শিরোনামে একটি ব্লগ পোস্টে ব্যাখ্যা করেছে:
যদিও রাষ্ট্রপতির ভাবমূর্তি পরিষ্কার, তারপরেও তাঁর এই পদে নিয়োগ তিউনিশিয়ার নাগরিকদের আনন্দিত করে নি, তা হচ্ছে সংসদের সংখ্যা গরিষ্ঠদের জোট: এননাহাদা ৮৯ টি আসন, সিপিআর ২৯ টি আসন এবং এটতাকাটল ২০টি আসন পেয়েছে, এবং তারা মনচেফ মারজোকিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার ব্যাপারে একমত হয়।
এবং কাসেম আল গুয়েসমি টুইট করেছে [আরবী ভাষায়]:
মারজোকির সমর্থকরা:
মারজোকির সমর্থকদের মতে, সে এক মানবাধিকার কর্মী, এক আলোকিত মানুষ এবং একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ, যে কিনা বেন আলীর স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল।
ওয়ালিদা লিখেছে [ ফারসী ভাষায়]:
Docteur Moncef Marzouki est désormé le premier président de la république tunisienne démocratique .
Un homme vrai , au passé riche de lutte pour la démocratie et les droits de l'homme. Monsieur le Président.. On vous accorde notre confiance et on est avec vous.. Ne nous décevez pas.
এমনা এল হাম্মি টুইট করেছে [ ফারসী ভাষায়]:
Pas moyen de dormir ce soir, je crois que #Marzouki président a bcp plus d'effet sur moi que je pensais 🙂
এবং ফাতেন এর সাথে যুক্ত করেছে [ফারসী ভাষায়]:
#Marzouki:Bon il faut passer cette étape de critique de Marzouki et penser à 100 ans d'avenir de notre pays en étant attentif aux décisions.
দেশটির নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি করা এবং তা আইনে পরিণত করে ও এরপর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত মারজোকি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আল জাজিরার সংবাদদাতা নাজানাইন মোশিরির মতে বিতর্ক এবং সমালোচনা সত্ত্বেও এই সব ঘটনা হচ্ছে তিউনিশিয়ার জন্য ঐতিহাসিক মূহুর্ত। তিনি টুইট করেছেনঃ::
আজকের এই দিন #তিউনিশিয়ার জন্য বিশাল এক দিন। #মনচেফ#মারজোকি হলেন আরব বিশ্বের প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।