আমাদের এ পোস্ট ইয়েমেন প্রতিবাদ ২০১১- সংক্রান্ত স্পেশাল কাভারেজের অংশ
ইয়েমেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর তায়েজ ইয়েমেনি বিপ্লবের প্রাণকেন্দ্র। গত ২৬ মে তে যখন রাষ্ট্রপতি আলি আব্দুল্লাহ সালেহর অনুগত বাহিনী যখন শহরটিতে সহিংস আক্রমণ চালায় তারপর থেকেই গত কয়েক মাস ধরে শহরটি রক্তাক্ত হৃদে পরিনত হয়েছে। ২৬ মে দিনটিকে তায়েজ গণহত্যা নামে অভিহিত করা হয়েছে। সেদিন স্বাধীনতা চত্বরে আক্রমণ চালানো হয় এবং প্রতিবাদকারীদের তাঁবু গুলোতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অনেকে হত হন অনেকে আহত হন। ঘটনার পর থেকে তায়েজ সিটি অব রেজিলিয়েন্স (প্রতিরোধের শহর) নামে পরিচিতি লাভ করে।
নাজলামো : তাঁর টুইটে বলেনঃ
বহু বছর আগে আমাদের যা শুরু করা উচিত ছিল তা শুরু করার জন্য (ভবিষ্যতে শেষ হবে) #তায়েজ কে ধন্যবাদ। তুমি একটি সাহসী শহর, তোমার লোকেরাও সাহসী।# ইয়েমেন
গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের মধ্যস্ততায় অজনপ্রিয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরেও ইয়েমেনে বিপ্লব অব্যাহত রয়েছে। চুক্তি বাতিল, সালেহ শাসনামলের অবসান ও সালেহ কে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে মিছিল আরও জোরালোভাবে এখনও চলমান আছে।
২৩ নভেম্বর তারিখে জিসিসি উদ্যোগ স্বাক্ষরের পরেও তায়েজ শহরের কোন পরিবর্তন হয় নি। শহরে সালেহ বাহিনীর আক্রমণ এবং আবাসিক এলাকায় গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
চুক্তি অনুসারে মিলিটারি কমিটি গঠিত হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে শহরের সকল রাস্তা থেকে সকল সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করে ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে যা আদৌ বাস্তবায়িত হয় নি। শহরে আরও বেশি করে সেনা নিয়োজন করা হয়েছে যা সুস্পস্টভাবেই চুক্তির খেলাপ।
চুক্তিতে সালেহ কে পদত্যাগ ও উপ- রাষ্ট্রপতি আব্দ-রাব্বু মানসুর হাদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে।
ফ্রিডমতায়েজ এর পোস্ট করা ভিডিওতে তিনি দেখিয়েছেন যে তায়েজে গত কয়েকমাস ধরে তায়েজে সহিংস আক্রমণ তীব্রতর হয়েছে:
তায়েজের স্বস্থানে থাকা জনগণ প্রতি রাতেই বোমা বর্ষণের শিকার হন। এতে তাঁদের ঘরবাড়ি ধংশপ্রাপ্ত হয়, প্রিয়জনের মৃত্যু ঘটে আর সন্তানেরা আতংকিত হয়ে পড়ে। তার পরদিন সকালে তাঁরা প্রতিদিন যে সহিংসতার শিকার হন তার প্রতিবাদে মিছিল করেন। বিপ্লবের প্রতি তাঁদের দৃঢ়তা প্রদর্শন ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করার জন্য তাঁরা রাস্তায় নামেন। তাঁরা উচ্চস্বরে বলেন “তায়েজ মুক্ত, হাজারও কামান গোলা ছুড়লেও আমরা নতজানু হব না”। ( ভিডিওটি তায়েজসিটিভিনেট কর্তৃক পোস্টকৃত)
নিচের দুটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে শহরে আক্রমণ করা হচ্ছে (দুটো ভিডিওই মিডিয়াসেন্টারসানা কর্তৃক পোস্টকৃত):
ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর চলমান সহিংসতা বিষয়ে ইয়েমেনি সক্রিয়তাবাদী আতিয়াফ আলয়াজির জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করে প্রশ্ন করেন এ ধরণের চুক্তি ভঙ্গের ক্ষেত্রে কী উপবিধি প্রযোজ্য হবে:
#তায়েজে সহংসতার কারনে # জাতিসংঘ কি # জিসিসি মেজানিজম ভংগকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে অথবা # ইয়েমেনে সামরিক সরবরাহ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানাবে?
সালেহ এবং তাঁর বাহিনীর জন্য জিসিসি চুক্তিকে অনেকেই “হত্যার লাইসেন্স” হিসেবে ধরে নিয়েছেন। @সাপোর্টবাহরাইনরাইটস তাঁর টুইটে এভাবেই অভিমত ব্যক্ত করেনঃ
@উইমেনফ্রমইয়েমেন: #ইয়েমেনে জিসিসি চুক্তি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠনের বৈধতা দিয়েছে। @নুনারাবিয়া@সামেরনাসের@আফ্রানাসের #তায়েজ #জাতিসংঘ #নো টু জিসিসি ডীল
@ফাহদআকলান বলেনঃ
#তায়েজে হত্যাকারী ছাড়া আর কেউ …হত্যা করার বৈধতা প্রাপ্ত নয়!! #ইয়েমেন # নো টু জিসিসি ডীল
তায়েজের সহিংসতার বিষয়ে নিরব থাকার জন্য জিসিসি চুক্তির সমালোচনা এবং পশ্চিমাদের সমালোচনা করে @আলরুয়াইশান টুইট করেনঃ
পশ্চিমারা সাহায্য করতে চায় না, জিসিসি আর তার চুক্তি মূল্যহীন, প্রচার মাধ্যমগুলো অচেতন # তায়েজ জ্বলছে।
@উ১ফ্যাট বলেনঃ
উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে #জিসিসি কিভাবে সাড়া দিচ্ছে? তাঁরা যদি #তায়েজের সহিংসতার বিষয়ে নিন্দা না জানায় তবে তারা #ইয়েমেনে সফলতা অর্জন করতে পারবে না
দুজন জাতিসংঘ কর্মকর্তার টুইটার একাউন্টে তিনি প্রশ্ন করেনঃ
@ইউএন_ স্পোক পারসন @ ইউএন_এইচ আর সি আজ #তায়েজের বাইরে থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কি? # ইয়েমেন
৩ ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইয়েমেনের স্থানীয় পত্রিকা ইয়েমেন পোস্ট এর প্রতিবেদনে সর্বশেষ পরিসংখ্যান @ বিবারইয়েমেন টুইট করেন:
# তায়েজ # ইয়েমেনে গত তিন দিনে মৃতের সংখ্যা ২৮ এ দাঁড়িয়েছে yemenpost.net/Detail12345678…
জিসিসি চুক্তি স্বাক্ষরের পর এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যার বিষয়ে আইন ইয়েমেন ইং টুইট করেছেন:
#ইয়েমেন আইন নিউজঃ রিয়াদে স্বাক্ষর হওয়ার পরে: ৩৩ জন শহীদ এবং গালফ স্বাক্ষর হওয়ার পর ১৫২ জন আহত হয়েছেন… fb.me/U0Ap9ksS
সম্প্রতি ঐকবধ্য সরকার গঠন ও সামরিক কমিটি গঠন স্থগিত রয়েছে, কারন সামরিক কমিটির অংশ হিসাবে জে এম পি (জয়েন্ট মিটিং পার্টি) সদস্যদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সালেহ আবারও আপত্তি জানিয়েছেন।
@আলগুইএনিদ তায়েজ এ বসবাসকারী একজন ইয়েমেনি সক্রিয়তাবাদী দেরি হওয়ার কারন ব্যখা করেনঃ
সালেহ ও বিরোধী দলগুলো সামরিক কমিটির বিষয়ে একমত হতে না পারায় # ইয়েমেনে এখন পর্যন্ত মন্ত্রিসভা গঠিত হয় নি। # জে এম পি মননয়নে সালেহ আপত্তি জানিয়েছেন akhbaralyom.net/news_details.p…
@আলগুইএনিদ আরও বলেনঃ
হাদিঃ সামরিক কমিটি গঠিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত বিরোধী দল মন্ত্রিসভা গঠন না করবে। বিরোধী দলঃ মন্ত্রিসভা গঠিত হবে না যে পর্যন্ত না হাদি কমিটি গঠন না করবে। আপনি @ইয়েমেনে আছেন
রাজনীতিবিদদের অস্বীকৃতির কারনে সামরিক বাহিনী শহরে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। বেসামরিক জনগণকে রক্ষার জন্য সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইয়েমেনের সক্রিয়তাবাদীরা মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি সহ সাপোর্ট তায়েজ নামক ক্যারাভান ভর্তির কাজ তদারকি করছে। এ ক্যারাভানে শহরের প্রতিনিধিত্বকারী এমপি থাকবেন আরও থাকবেন যুবক দল ও বিদেশি সাংবাদিক। অবরুদ্ধ তায়েজ শহরের সমর্থনে ইয়েমেন এবং ইয়েমেনের বাইরে থেকে অনুদান সংগ্রহ করা হবে।
@ইয়েমেন পিস নিউজ ব্যখ্যা করেঃ
# সাপোর্ট তায়েজ ক্যারাভান এর অনুদান সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। জীবন রক্ষার জন্য আপনিও আমাদের সাহায্য করতে পারেন! bit.ly/nTCPem # সাপোর্ট ইয়েমেন #ইয়েমেন # তায়েজ# ওআইএফ
সাংবাদিক জেব বুন জিসিসি চুক্তি বিষয়ে তাঁর ব্লগে লিখেন। কি করা উচিত সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেনঃ
ইয়েমেনে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে প্রাত্যহিক রাজনীতির পুরনো নেতা এবং সামরিক বাহিনীকে অপসারন করতে হবে, বিশেষতঃ সালেহ পরিবারের সদস্যদের। তাঁর দল- জেনারেল পিপলস কংগ্রেস এখনও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং নির্বাচনের পরেও তা অব্যাহত থাকতে পারে কারন বর্তমানে সালেহর অনুগতরা নির্বাচনী ফলাফলে হস্তক্ষেপের ক্ষমতা রাখে।এনডিপি ও মিসরের মত ইয়েমেনকে নতুন করে শুরু করতে হবে, নতুন করে শুরু থেকে নতুন সংসদীয় কাঠামো দাঁড় করানর স্বার্থে ইয়েমেনের জিপিসি (জেনারেল পিপলস কংগ্রেস) বিলুপ্ত করা উচিত। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হল একজন বহিষ্কৃত স্বৈরশাসকের সন্তান কোনভাবেই জাতীয় সামরিক বাহিনীতে থাকতে পারে না। সার্বিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ই ইউ, জিসিসি ও জাতিসংঘের নীতিনির্ধারকেরা যদি দেশ থেকে সালেহকে বহিস্কারের বিষয়ে সহায়তা করার ইচ্ছা পোষণ করে তবে কেবলমাত্র সেক্ষেত্রে তাঁর ক্ষমতা লুপ্ত হবে।
হাজারও বেসামরিক লোককে হত্যার জন্য দায়ী সামরিক বাহিনীকে সালেহর পরিবার এখনও নিয়ন্ত্রন করে। জিসিসি চুক্তি সরেজমিনে কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারে নি। ইয়েমেন জুড়ে শান্তিপূর্ণ বিপ্লব চলমান, একই ভাবে চলমান ইয়েমেনি শহরগুলোতে বেসামরিক জনগণের উপর সালেহ বাহিনীর সহিংসতা। তায়েজকে আরও চড়া মূল্য দিতে হবে। শহরের বলিদানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য #সেভতায়েজ ও # তায়েজইসব্লিডিং নামে হ্যাসট্যাগে টুইপ্স ব্যাবহার করা হয়েছে।
@ এ _আল৩আনসি “ তায়েজে গোলাগুলি, সহিংসতা বন্ধ করুন”-শিরেনামে একটি ছবি পাঠিয়ে সহিংসতা বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন।
#সেভতায়েজ # তায়েজ# ইয়েমেন# সাপোর্ট ইয়েমেন pic.twitter.com/qbF5CHNV
আমাদের এ পোস্ট ইয়েমেন প্রতিবাদ ২০১১- সংক্রান্ত স্পেশাল কাভারেজের অংশ