নির্যাতনের শিকার নাগরিকদের জন্য গঠিত আর্ন্তজাতিক পুর্নবাসন সংস্থা (আইআরসিটি) সম্প্রতি ১৫ মিনিটের একটি তথ্য চিত্র প্রকাশ করেছে। এই চলচ্চিত্রের নাম “নির্যাতন বিহীন বিশ্ব” (ওয়ার্ল্ড উইদাউট টর্চার)। এই চলচ্চিত্রে কেবল নির্যাতন প্রতিরোধের গুরুত্বের উপর মনোযোগ প্রদান করা হয়নি, একই সাথে নির্যাতনের ঘটনাসমূহকে দলিল হিসেবে সংরক্ষণ করা এবং এই ধরনের নির্যাতনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া নাগরিকদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থার উপরও তারা গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।
.
উক্ত চলচ্চিত্রে খালেদ সাঈদের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পুলিশের হাতে তাঁর মৃত্যু ঘটে- এবং সরকারী ময়না তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনাকে চাপা দেবার চেষ্টা করা হয়- যা মিশরে এক প্রচণ্ড বিক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং পরবর্তীতে তা এক বিপ্লবে পরিণত হয়, যে বিপ্লবের ফলে নিপীড়ক হোসনি মুবারক সরকারে পতন ঘটে।
এই চলচ্চিত্রের ভাষা ইংরেজি, তবে আরবী, স্প্যানিশ এবং ফরাসী ভাষাতেও এর সাবটাইটেল নির্মাণ করা হয়েছে।
খালেদ সাইদের মামলার বিষয়ে মিশরীয় নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া এবং ন্যায় বিচার অনুসন্ধান নিয়ে ভাবনাকে গ্লোবাল ভয়েসেস অনুসরণ করে আসছে। এই খুনের ঘটনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়া এবং সাইদের বিরুদ্ধে প্রথমিক ভাবে যে অভিযোগ আনা হয়, তাঁর সম্মানে যে ওয়েবসাইটের জন্ম হয় সে সব ঘটনাকেও।
খালেদের মৃত্যুর এক বছর পর বিপ্লবের অন্যতম এক কারণ হিসেবে ব্লগাররা তাকে স্মরণ করছে। আদালত তার মামলা গ্রহণ করতে এক বছর সময় নেয়। দেরীতে মামলা শুরু করার পর, সেই দুই বিশেষ গোয়েন্দা পুলিশ, যাদের প্রহারের মাধ্যমে হাসান সাইদের মৃত্যু ঘটে, তাদের ৭ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আর এই রায়ের বিরুদ্ধে নেট নাগরিকরা পরিষ্কার ভাবে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে।
এই তরুণের মৃত্যুর ফলে মিশরে এই ধরনের নির্যাতন এবং নির্যাতনের শিকার নাগরিকদের বিষয়ে সচেতনতার চেয়েও বেশী কিছুর সৃষ্টি হয়। সে বিপ্লবের এক প্রতীকে পরিণত হয়, এমন এক চরিত্র, যার মধ্যে দিয়ে মিশরীয় নাগরিকদের চরিত্রকে চিহ্নিত করা যায়। “উই আর আল খালেদ সাইদ” নামক ওয়েবসাইট স্বয়ং ঘোষণা প্রদান করেছে, মিশরে নির্যাতন এবং মিশরের নাগরিকের প্রতি যে তাদের নিজ দেশে যে অমানবিক আচরণ করা হয়-তারা এর বিরুদ্ধে” এবং মিশরীয় পুলিশের এ রকম নির্যাতনের ঘটনার উপর নজর রাখা হচ্ছে।
পরবর্তী ভিডিওটি একটি গানের ভিডিও যে গানের ভিডিও-র শিরোনাম “খুব জোরে আওয়াজ তোলার ক্ষেত্রে খুব শঙ্কিত” । এটিকে সম্পাদনা এবং ইংরেজি সাব টাইটেল সহ আপলোড করেছে, উই আর অল খালেদ সাইদ নামক সাইট। এটিতে সমাজ পরিবর্তন এবং নির্যাতন বন্ধের উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১-এ বার্লিনে খালেদ সাইদকে মরণোত্তর মানবাধিকার পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় এবং তার বোন জাহরা সাইদ কাশেম তার মৃত ভাইয়ের পক্ষে এই পুরষ্কার গ্রহণ করে। বিপ্লবের এক প্রতীক হিসেবে তাঁর মুখের ছবি বা গ্রাফিতি সারা মিশরের অসংখ্য স্থানে দেখা যাবে। কাজেই, “ডুডস ফ্যাক্টারী” (ফ্রিডম পার্ক) এবং ফ্রেডরিশ-এবার্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় লেখক ডন কার বার্লিন প্রাচীরের খণ্ডিত এক অংশে তাঁর মুখের এক ছবি এঁকে তারা বার্লিনে খালেদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে:
জাহরা সাঈদ কাশেম বলেন, “স্বাধীনতা এবং ঐক্যের লক্ষ্যে বার্লিন প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের মত কারণে খালেদ সাঈদও খুন হয়। আজ যদি খালেদ আমাদের সাথে থাকত তাহলে সে ভারী খুশী হত। খালেদ, আমরা তোমাকে ভুলব না, আমরা তোমাকে ফিরিয়ে আনব, আমরা সকল মিশরীয় নাগরিকের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনব। আমরা সকলে খালেদ সাঈদ”।
পরবর্তী ভিডিওটি, খালেদ সাঈদের দেওয়াল চিত্রের উপর তৈরি করা এক তথ্যচিত্র। আর এই ভিডিও-তে যে র্যাপ সঙ্গীত ব্যবহার করা হয়েছে তা খালেদ সাঈদের নিজের তৈরি করা: