- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

যুক্তরাষ্ট্র : ১৫ই অক্টোবর রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

বিষয়বস্তু: উত্তর আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, তাজা খবর, নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, প্রযুক্তি, রাজনীতি, সরকার

এটা এখন আর কোন গোপনীয় বিষয় নয় যে, অন্য সব সামাজিক প্রচার মাধ্যমের সাথে ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউব সাম্প্রতিক আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সংঘটিত বিক্ষোভে অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০০৯ সালে বিশ্ব ইরানের রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত সবুজ বিক্ষোভ সম্বন্ধে জানতে পারে, যার জন্য এই সমস্ত প্ল্যাটফর্মকে ধন্যবাদ। অন্যদিকে কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে [1] এবং মাদ্রিদের ইন্ডিগান্ডোসতেও [2] একই ঘটনা ঘটে। যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ঠিক সে ভাবে ১৫ অক্টোবর [3] তারিখে বিশ্ব জুড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের সময় এই সমস্ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

১৫ অক্টোবর নামক প্রতিবাদ আন্দোলন, টুইটারে অজস্র হ্যাশট্যাগের জন্ম দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে #অকুপাইওয়ালস্ট্রিট, #ওডাব্লিউএস, #গ্লোবালডে, #১৫অক্টো, #অক্টো১৫ এবং #অকুপাইএভরিহয়্যার। এর বাইরে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা এখানে যোগ দিতে চায়, তাদের ফোন করা হয়েছে। এই মুহুর্তে যখন বিক্ষোভকারীরা টাইম স্কোয়ারে অবস্থান নিচ্ছে, তখন শত শত, হাজার হাজার জনতা টুইট করেছে বা সেখানে যা কিছু ঘটছে তা রেকর্ড করার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর কর্মকাণ্ড এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল না, নীচের ভিডিওটি তার প্রমাণ:

ব্লগাররা এই সব ঘটনাকে সবার সামনে তুলে না ধরে পারেনি। মিডিয়া ডিকোডারের [4] জেনিফার প্রেস্টন সারা বিশ্বের মানুষদের এই প্রতিবাদের কিছু নমুনা ভিডিও প্রদর্শন করছেন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শনের সাথে তুলনা করে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সংখ্যা বের করার সুযোগ প্রদান করেছেন।

অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট নামক আন্দোলন নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অনলাইনে সামাজিক প্রচার মাধ্যমের প্লাটফর্মে আলোচনা ক্রমেই বাড়ছে এবং যখন বিশ্ব জুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে বিদেশী ব্যবহারকারীদের নেট ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে যায় । সামাজিক প্রচার মাধ্যম সাইট বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ডআরআর-এর মতে শুক্রবারে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে রাষ্ট্র থেকে টুইটারে অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট নিয়ে পোস্টের সংখ্যা বেড়ে যায়। এটি তার আগের সপ্তাহের ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়।

(অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট সম্বন্ধে গ্লোবাল ভয়েসেস-এর লেখা পড়ুন, এখানে [5] এবং এখানে [6])।
যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভকারীরা কেবল স্কোয়ার বা পার্কে অবস্থান গ্রহণ করেনি, একই সাথে তারা ইন্টারনেটও দখল করেছে। এই আন্দোলনের উপর একটি ব্লগ রয়েছে, যার নাম, আমরা ৯৯ শতাংশ [7]। এই ব্লগের কিছু ছবিতে কয়েকজন মানুষকে দেখা যাচ্ছে যারা বিস্তারিত অর্থনৈতিক কারণ উল্লেখ করে পোস্টার বহন করছে। ডেমোক্রেসি ইন আমেরিকা [8] নামক ব্লগ এই সমস্ত ব্লগকে কেবল প্রশংসার বিষয় বলে মনে করে না, একই সাথে মানুষের উপর এই সমস্ত বার্তার প্রভাবের বিষয়ে ফেসবুক এবং টুইটারে ভুমিকা তারা পরিমাপ করছে:

ফেসবুকের সমর্থকরা নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে না, ফেসবুকে আপনি একবার কোন একটা ঘটনার অংশ হলেন এবং তারপর সেই পুরোপুরি ভুলে গেলেন। টুইট এক্ষেত্রে চেয়ে এগিয়ে, বিশেষ করে যখন কোন ঘটনা ঘটতে থাকে, টুইটার ব্যবহারকারীরা সেই বিষয়ে সচেতনতা প্রদর্শন করে। কিন্তু টুইটারও নির্দেশ করছে যে, এর ব্যবহারকারীরা সচেতন, কিন্তু তারা কোন ঘটনার সমর্থক নয়। আর বিগত কয়েকদিনের সামগ্রিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে, আলোচ্য বিষয় নিয়ে কাজ করা খুব কঠিন হয়ে ওঠে, কারণ জনতা #অকুপাইওয়ালস্ট্রিট নামক হ্যাশট্যাগ সংক্ষিপ্ত করে #ওডাব্লিইউএস করে ফেলেছে।

আর এভাবে আমরা টুইটারে, ১৫ অক্টোবর বিষয়ে আসা সংবাদ সংগ্রহ করি। কেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচার মাধ্যমে এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য ডিসি ডেবি (@ডিসি ডেবি) [9] #ওডাব্লিইউএস নামক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন:

ফক্স নিউজ নামক সংবাদ সংস্থা, #ওডাব্লিইউএস নামক জনতার প্রতিবাদ সমাবেশকে নির্দেশনাহীন বলে চিহ্নিত করতে চায়, এ কারণে তারা কখনো এই ভিডিওটি প্রচার করেনি: http://www.observer.com/2011/10/exclusive-occupy-wall-street-activist-slams-fox-news-anchor-in-un-aired-interview-video/ [10]

কিছুক্ষন আগে রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার-এর স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচনের সময় ঘোষনা করেন, মৃত এই নেতা যদি আজ জীবিত থাকতেন, তাহলে তিনি ১৫ অক্টোবরের আন্দোলনকে সমর্থন করতেন। এ ক্ষেত্রে লিজা সাবাতের জিজ্ঞাসা (@ব্লগডিভা [10]):

আসলে কি তিনি তাই করতেন?” #ওডাব্লিইউএস আরটি @থাইপারামপিল: ওবামা: এমএলকেজুনিয়র (মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র) হয়ত অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট নামক আন্দোলনকে সমর্থন করত। পরিস্কার নির্ভেজাল এক রাজনীতি। http://is.gd [11]

হারাকাডেইলি টুইট (@এইচডেইলি০৯ [12]) একটি উদাহরণ, যে কি ভাবে একটি গল্পকে গুছিয়ে আনতে সামাজিক নেটওয়ার্কের ব্যবহার করা হচ্ছে:

অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট নাম বিক্ষোভ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। লন্ডন ১৭ অক্টোবর, অকুপাই ওয়াল-এর অনুপ্রেরণায় আন্দোলন… http://dlvr.it/qzsdz [13]

নীচে নিউইয়র্ক শহরে অনুষ্ঠিত ১৫ অক্টোবরের বিক্ষোভের ছবি, যা কিনা টাইম স্কোয়ারের জাকুত্তি পার্কে অনুষ্ঠিত হয়:

টাইম স্কোয়ারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং  সাংবাদিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। [14]

টাইম স্কোয়ারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সাংবাদিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য ছবি তুলেছেন রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

পুলিশ পথচারীদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। [15]

পুলিশ পথচারীদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

[16]

টাইম স্কোয়ারের কেন্দ্রে বিক্ষোভকারীদের সমাবেশ। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ হয়নি। [17]

পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ হয়নি। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

১৫ই অক্টোবর বিক্ষোভের রেফারেন্সে হিসেবে ১৫ নাম্বার চিহ্ন। [18]

১৫ই অক্টোবর বিক্ষোভের রেফারেন্সে হিসেবে ১৫ নাম্বার চিহ্ন। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

এই পোস্টার বলছে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করা আমাদের টাকা আমাদের ঘরে ফিরিয়ে আন। [19]

এই পোস্টার বলছে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করা আমাদের টাকা আমাদের ঘরে ফিরিয়ে আন। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

যখন বিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠছে [20]

যখন বিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠছে, তখন পুলিশদের সাথে বিক্ষোভকারীদের উত্তেজনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

বিক্ষোভকারীরা টাইম স্কোয়ারের নাসডাক নামক সূচক পার হচ্ছে। [21]

বিক্ষোভকারীরা টাইম স্কোয়ারের নাসডাক নামক সূচক পার হচ্ছে। গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

এদিকে অকুপাই অয়াল স্ট্রিট নামক আন্দোলনের কিছু বিক্ষোভকারী জকুত্তি পার্কে  থেকে যায়। [22]

এদিকে অকুপাই অয়াল স্ট্রিট নামক আন্দোলনের কিছু বিক্ষোভকারী জকুত্তি পার্কে থেকে যায়। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

নারীরা জম্বির (এক ধরনের প্রেতাত্মা) চেহারায় বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। [23]

নারীরা জম্বির (এক ধরনের প্রেতাত্মা) চেহারায় বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

এমনকি শিশুরাও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে। [24]

এমনকি শিশুরাও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

জাকুত্তি পার্ক [25]

জাকুত্তি পার্ক, যা লিবার্টি পার্ক নামেও পরিচিত, সেখান প্রাতঃকৃত্য (প্রসাব এবং পায়খানা) সারার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং খাবারের দোকান বসানো হয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

ভেড়ার মুখোশ হাতে বিক্ষোভকারীরা [26]

ভেড়ার মুখোশ হাতে বিক্ষোভকারীরা এবং সে একটি পোস্টার হাতে ধরে আছে, যেখানে লেখা দুনিয়ার ভেড়ারা জেগে ওঠো। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর জন্য ছবি তুলেছে রবার্ট ভ্যালেন্সিয়া, ২০১১।

টাইম স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট নামক আন্দোলনের মূল ছবি প্রদান করেছে স্টিভানি কেইথ [27]। কপিরাইট ডেমোটিক্সের (১৫/১০/২০১১)।