১১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে তারা ইরান সরকারের সাথে মিলিত হয়ে এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আদেল আল জুবায়েরকে হত্যা এবং সৌদি ও ইজরায়েল দূতাবাসে বোমা হোমা হামলার পরিকল্পনা করেছিল, দুটো দূতাবাসই ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত।
এটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রশংসা করেছেন, যারা একটি যড়যন্ত্রের কাহিনী উদঘাটনে একসাথে কাজ করেছে। এই ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত, এতে অর্থ সাহায্য এবং এর সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে ইরান থেকে।”
আল আরাবিয়া এবং অন্য সব সংবাদপত্রের সংবাদ অনুসারে
এই ঘটনার নাম অপারেশন রেড কোয়ালিশন। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস প্রতিরোধ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, এর কর্মকাণ্ড শুরু হয় এ বছরের মে মাসে, যখন এক ইরানী-আমেরিকান নাগরিক কর্পাস ক্রিষ্টি, যুক্তরাষ্ট্রের এক তথ্য প্রদানকারী কাছে সে দেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার জন্য মেক্সিকোর মাদক পাচারকারী দলের সাহায্য কামনা করে। উক্ত ইরানী-আমেরিকান নাগরিক মনে করেছিল যে সে আসলে মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক পাচারকারী দল জেটাসের কোন সদস্যের সাথে আলাপ করছে। এবিসি নিউজকে প্রদান করা এক কর্মকর্তার উদ্ধৃত বক্তব্যে এই তথ্য জানা যায়……
ইরানের রাষ্ট্রপতির মাহমুদ আহমাদিনেজাদের একজন মুখপাত্র, যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে যে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান কোন সৌদি কূটনীতিককে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে। রাষ্ট্রপতির সংবাদপত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এএফপিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার থেকে সবার মনোযোগ সরিয়ে দেবার জন্য এই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
এই ঘটনার উপর স্প্যানিশ ভাষায় লিখিত প্রবন্ধের জন্য এনিমাল পলিটিকা দেখুন।
এই ষড়যন্ত্রের ঘটনা নিয়ে প্রথম যে সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এই বিষয়ক কাগজপত্র প্রকাশ করে, তার ঠিক পরপরই ব্লগসঅফওয়্যার.কম এই উত্তেজনাপূর্ণ সংবাদের উপর আসা টুইট সরাসরি প্রদর্শন করা শুরু করে। দৃশ্যত এই বিষয়ে এক সংযুক্ত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই সাইট আসতে থাকা টুইটগুলোকে তারা বিস্তারিতভাবে তিনটি কলামে সজ্জিত করে। যেগুলোর তারা “ইরানের ষড়যন্ত্রের কাহিনী”, “মেক্সিকোর মাদক পাচারকারী” এবং “সৌদি আরব” এই তিনটি শিরোনাম ভাগ করেছে। এমনি এই পোস্ট লেখার সময়ও তারা এই ঘটনার উপর আসা টুইট সমূহ সরাসরি প্রদর্শন জারী রেখেছিল।
এর প্রতিক্রিয়ায়, #মেক্সিকো এবং #ইরান নামক টুইটার হ্যাশট্যাগের মধ্যে দিয়ে টুইটার অনুসন্ধান বাছাই করার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে প্রাথমিক টুইটের বেশীর ভাগ এই ষড়যন্ত্রের কাহিনীর বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ জানিয়ে করা হয়, কখনো কখনো সংবাদের লিঙ্ক প্রদান করে, যা সম্পাদকীয়তে যাবার খুব সামান্য আগে গ্রহণ করা হয়।@সারমাসটিয়ান-এর বাস টটেনহাম-এ, এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে উত্তেজিত এই নাগরিক দ্রুত দুইবার টুইট করে :
@সারমাসটিয়ান: #ইউএস, যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে মেক্সিকোর সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করার অজুহাত খুঁজছে, তারা মাদক পাচারকারী এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানকে একসাথে যুক্ত করে সেই অজুহাত সৃষ্টি করল। #ইরান #মেক্সিকো #মিডিলইস্ট
@সারমাসটিয়ান: #ইরান, #সৌদি, ইরানী নয়, এরকম যে কারো মাধ্যমে খোদ সৌদি আরবে তারা যে কোন সৌদি নাগরিককে হত্যা করতে পারে। এই কাহিনীর কোন ভিত্তি নেই। #ইউএস #মিডিল ইস্ট #মেক্সিকো
মেক্সিকো থেকে, কার্লোস (@আলকুইকার্লোস) তার লেখায় একটি উদ্ধৃতি, হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন, এবং এই ঘটনায় হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে নত হয়ে থাকার জন্য মেক্সিকোর রাষ্ট্রপতি ফেলিপে ক্যালডেরনের কথা সরাসরি উল্লেখ করেছেন:
Que #NarcoUSAterror “descubrió” que los Z les maquilan armas de destrucción masiva a Iran #IRAN#MEXICO#INVASION traidor @felipecalderon
রিও গ্রান্ডের অন্য প্রান্ত, সান এন্টোনিও থেকে @লিমা৫৭০ লিখছে:
আমি আশা করি, সন্ত্রাসবাদীরা যে [অসুস্থ্য] মেক্সিকোর মাদক পাচারকারীদের সাথে কাজ করছে, এই বিষয়ে কেউ বিস্মিত হবে না।
বেশ কয়েকজন নাগরিক ষড়যন্ত্রের এই কাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান ইউ.এস অপারেশন “ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস” নামক অভিযানের ক্ষেত্রে যে কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে, তার সাথে যুক্ত করেছে। যেমন @জেমসইনসেলা, সকালের এক রেডিও অনুষ্ঠানে টুইট করেছে :
@সিএসপানডাব্লিউজে যদি মেক্সিকোর মাদক পাচারকারীরা এখন নতুন এক সন্ত্রাসী সংগঠন হয়, তাহলে হোল্ডার কি এই সন্ত্রাসীদের অস্র সরবরাহ করবে?
@টেহগোল্ডেনরুল একটি প্রশ্ন পোস্ট করেছে, যা কেবল সাধারণ এক প্রশ্ন নয়।
@রায়ান_কোঙ্কি যদি এটা একটা যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেবার মত কাজ হয়, তাহলে মেক্সিকোর মাদক পাচারকারীদের হাতে তুলে দেবার জন্য যে ১,০০০ ভয়াবহ অস্র পাঠানো হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে কি হবে? ?
টুইটারভার্সের (টুইটার জগতের) এক অজানা স্থান থেকে @ব্রাউনডাব্লিউসি এক সন্দেহ ব্যক্ত করেছেন, যে সন্দেহ বিশ্বের অনেক নেট নাগরিক প্রদর্শন করেছে:
ইরান, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার জন্য মেক্সিকোর মাদক পাচারকারীদের ভাড়া করেছে। আর যুক্তরাষ্ট্র সেই ষড়যন্ত্রের ঘটনা উন্মোচন করেছে, এই চলচ্চিত্রের জন্য আর তর সইছে না। #ইসদিসরিয়াললাইফ?