ইরান: “কল্পনার চেয়েও বিস্ময়কর” সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনার ব্যাপারে ইরানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, আর সে বিষয়টি সারা বিশ্বের ওয়েবসাইট এবং সংবাদপত্রের প্রথম পাতা দখল করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দুই ইরানী নাগরিকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে এনেছে। বিশ্বাস করা হচ্ছে যে, সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার জন্য তারা মেক্সিকোর একটি মাদক চোরাচালানকারী দলের সদস্যদের ভাড়া করার চেষ্টা করছিল। ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইরানের ব্লগাররা ‘কল্পনার চেয়ে বিস্ময়কর’ এই ঘটনা সম্বন্ধে মতামত প্রদান করেছে যে, এই কাহিনী অন্য যে কোন কাহিনীর চেয়ে ভিন্ন।

ফারইয়াদ ২২ খোরদাদ বলেছেন [ফার্সী ভাষায়] :

বালাতারিয়ান-এ [ ইরানের একটি লিঙ্ক শেয়ার করা জনপ্রিয় সাইট] অনেকে বলছে যে, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা এবং কেবল কাল্পনিক এক অভিযোগ এনেছে। বিদেশী অনেক বিশেষজ্ঞ এই অভিযোগ সম্বন্ধে যা বলছে, সেটিও কল্পনাপ্রসূত, কারণ ইরানের শাসকদের সম্বন্ধে তাদের কোন পরিষ্কার ধারণা নেই। কিন্তু আমরা, ইরানিরা জানি যে, কারা ইরানকে শাসন করে এবং এর কারণসমূহ, আর তার মধ্যে যৌক্তিকতার কোন স্থান নেই… তারা দেখাতে চায় যে, ইরান নামক রাষ্ট্রটি যুক্তরাষ্ট্রে ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে সক্ষম।

আজাদি ও আবাদি লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]:

অনেক সময় লেখা খুব কঠিন, কিন্তু অন্তত এই একটা কাজ আমরা করতে পারি। এই কাহিনীর প্রচার মাধ্যমে প্রচণ্ড জোরালো এক আওয়াজ সৃষ্টি করেছে এবং ডান-পন্থী আমেরিকান নাগরিকরা এখন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলছে। বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ আছে যারা প্রচার মাধ্যমে এই কাহিনী নিয়ে কথা বলছে, যারা এমনকি মানচিত্রে এই দেশটির অবস্থান কথায় তা বের করতে পারে না। এখন যদি তারা নিজের মানচিত্রে ইরান কোথায় তা বের করতে না পারে, তাহলে স্মার্ট বোম্ব এবং মিসাইল যা করতে পারবে… ইরানের এক নাগরিক হিসাবে আমি বলতে পারি, যুদ্ধ বা ইরান দখল, কোনটাই কারো জন্য কোন লাভ বয়ে আনবে না; না ইরানের জন্য, না বিশ্বের বাইরের কোন রাষ্ট্রের জন্য।

ব্লগার এর সাথে যোগ করেছে , যে সব ব্যক্তি [ইরানী] ইরানের উপর হামলা চালানোর আশা প্রকাশ করে, তারা বিশ্বাসঘাতক।

মোসবাতে ১০০০ লিখেছে [ফার্সী ভাষায়] :

আজ ইরানের ১১ সেপ্টেম্বর দিবস। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের মুখোমুখি হবে। ইরানে যখন সংস্কারবাদীরা ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা বিশ্বকে একটা বার্তা প্রদান করেছিল যে ইরান একটি সহনশীল রাষ্ট্র, কিন্তু যখন আহমাদিনেজাদ ক্ষমতায় আসলো, সেই সহনশীলতার ইতি ঘটল। …… সামান্য আগে অথবা পরে, আমরা ইরানের নির্মম এবং দুর্নীতিপরায়ণ শাসকদের বিদায়ের দৃশ্যের সাক্ষী হব।

সোরেজার লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]

এই কাহিনীকে বাস্তবের চেয়ে হলিউডের এক চলচ্চিত্রের কাহিনীর মত শোনাচ্ছে…। ইরান নামক রাষ্ট্রটি ইরানের নাগরিকদের দমন করে রাখে, তাদের উপর সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়, কিন্তু এই ঘটনায় যে সব উপাদানের সন্নিবেশ ঘটেছে তাতে বাস্তবতা প্রতিফলিত হচ্ছে না…। অতীতে ইরান এমন কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেনি, যেখানে তার কোন লাভ ছিল না।

আরজেনসান, পরিহাসের সাথে লিখছে, ইরানের এখন এই ধরনের এক বিজ্ঞাপন প্রদান করা উচিত যে “ বর্তমানে আমাদের কয়েকজন আমেরিকান পর্যটকের প্রয়োজন, যাদের গ্রেফতার করা হবে এবং তাদেরকে দিয়ে স্বীকার করানো হবে যে তারা গুপ্তচর”।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .