মায়ানমার: থাই প্রধানমন্ত্রী কি অং সান সূচিকে উপেক্ষা করলেন?

গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা মায়ানমার সফরে আসেন। তার এই সফর কিছু নেট নাগরিকদের মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি করে কারণ ইংলাক কেবল নাই পি তাও নামে মায়ানমারের নতুন রাজধানী পরিভ্রমণ করেন। এই শহরে মায়ানমারের সরকারী কর্মকর্তারা বাস করে। মায়ানমারের প্রাক্তন রাজধানী ইয়াঙ্গুনে তিনি জাননি।

ইরাওয়াদ্দি (বার্মিজ সংস্করণের) পত্রিকার ফেসবুকের পাতায় ওয়াই মিয়ো চিট এই মন্তব্য করেছে [বার্মিজ ভাষায়]:

আমি মনে করি তিনি মায়ানমার সরকারের সাথে বর্তমান যে চাল রপ্তানী নীতি সেই বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছেন। তিনি নির্বাচনের সময় থাই কৃষকদের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিলেন চালের দাম বাড়িয়ে দেবেন-বাড়িয়ে তা বর্তমান বাজার মূল্যের দ্বিগুণ করে দেবেন। সম্ভবত তিনি এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে এসেছেন যে মায়ানমার সরকারের চাল রপ্তানী নীতি যেন তার এই পরিকল্পনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে। তিনি আমাদের অন্ধ সামরিক নেতাদের জন্য এক “বিনিময় নীতি” সেধেছেন। যাহোক, তার পরিকল্পনা সফল হোক বা না হোক, মায়ানমারে চালের দাম বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে! আমি সেই সব গরীব লোকদের জন্য ব্যথিত যাদের এই ঘটনার প্রভাবে বেশী দাম দিয়ে চাল কিনতে হবে! তবে হয়ত এই পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব কারণ আমাদের দেশে অনেক মহান ব্যবসায়ী এবং নীতি নির্ধারক রয়েছে।

থাইল্যান্ডের ব্যাংকক-এ, এক সংবাদ সম্মেলনে ইংলাক সিনাওয়াত্রা

থাইল্যান্ডের ব্যাংকক-এ, এক সংবাদ সম্মেলনে ইংলাক সিনাওয়াত্রা। ছবি আলেকজান্ডার উইডিং-এর সৌজন্যে। কপিরাইট ডেমোটিক্সের (২৭/০৬/২০১১)

কেন ইংলাক, দেশটির নেত্রী অং সান সূচির সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করলেন না এ নিয়ে অনেকে বিভ্রান্ত। মায়ানমারের এই নেত্রী বিশ্ব গণতন্ত্রের প্রতীক। নাইঙ্গিলুউইন ইলেভেন মিডিয়া ওয়েবসাইটে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন [ বার্মিজ ভাষায়]।

কেন তিনি অং সান সূচির সাথে দেখা করতে ব্যর্থ হলেন? আমাদের জনগণের নেত্রী কি তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়? উনার উচিত আমাদের জনগণের নেত্রীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা।

এছাড়াও ইংলাক জনাব জাও জাও এর সাথে দেখা করেন। জাও জাও মায়ানমার ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি। ছদ্মনামে একজন ইংলাকের এই সাক্ষাত-এর ব্যাপারে তার হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ইরাওয়াদ্দি নিউজ ব্লগে তিনি তার এই হতাশার বিষয়টি তুলে ধরেন [বার্মিজ ভাষায়]।

শুনুন (ইংলাক), জাও টু (যার নাম বলতে গেলে দুবার জাও জাও উচ্চারিত হয়) কি এক মন্ত্রী অথবা এখন সরকারের কোন পদে সে অধিষ্ঠিত? ঐ পেপসির থিয়েন হুতুন, জামাই বাবু, তিনি তথাকথিত নতুন সরকারের সর্বময় কর্মকর্তা হয়ে উঠেছেন। কেন এই থাই প্রধানমন্ত্রী তার সাথে দেখা করতে গেলেন? তারা কি পরস্পরের বন্ধু? কেন থাই প্রধানমন্ত্রী দাও এ. এস. এস. [অং সান সুচি] –এর সাথে দেখা করলেন না? জাও টু কি জনতার নেত্রীর চেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কেউ? থাই প্রধান মন্ত্রীর এই কাজটি করা উচিত হয়নি? খুব খারাপ।
Global democracy icon, Aung San Suu Kyi

বিশ্ব গণতন্ত্রের প্রতীক, অং সান সূ চি

অন্যদিকে, মায়ানমারের অনেক নাগরিক তার এই ভ্রমণকে স্বাগত জানিয়েছে। ওনাইয়ো, ইলেভেন মিডিয়ার “ইংলাক সিনাওয়াত্রা মায়ানমার ভ্রমণ করবে” নামক সংবাদে [বার্মিজ ভাষায়] যে মতামত প্রদান করেছেন এবং অনেক পাঠক তার তার সাথে একমত।

এটা ঠিক আছে। আন্টি অং [অং সান সু চি]-এর সাথে সাক্ষাৎ করার দরকার নাই। আমি চাই না যে তিনি যথাযথ কর্তৃত্ব গ্রহণ না করে সবকিছুতেই ব্যস্ত/যুক্ত থাকুক। যাই হোক, ইদানীং রাষ্ট্রপতি নতুন যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, তা শুনছি এবং তাতে হাততালি দিচ্ছি।

আইসকুলক্যান্ডি@জিমেইল.কমও, ইংলাকের সফরের ব্যাপারে তার অনুভুতি তুলে ধরেছে [মেইল কারীর লিঙ্গীয় পরিচয় স্পষ্ট নয়]।

আসুন থাইল্যান্ডের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাই। তারা হয়ত দুটি দেশের লাভের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে এবং এই বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা চালাবে।
এমকে, গুগল বাজ-এ তার অনুভুতি প্রকাশ করেছে।
কেন লোকজন দাও অং সান সূচির সাথে তার সাক্ষাৎ না করার বিষয়টি এত গুরুত্বের সাথে দেখছে? এই অঞ্চলের কোন নেতা কি মায়ানমারে এসে তার সাক্ষাৎ করেছে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .