আজ রাতে টুইটার, উত্তেজনার সাথে এক গুঞ্জনে ভরে যায় যখন আরব বিপ্লবে ভূমিকার জন্য আরব নেট নাগরিকদের নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারিত হতে শুরু হয়।
মিশরীয় নাগরিক ওয়াএল ঘানিম এবং (@ ঘোনিম) এবং এসরাআব্দেলফাত্তাহ (@ এসরা২০০৮), ৬ এপ্রিল যুব আন্দোলন (এপ্রিল ৬ ইয়োথ মুভমেন্ট), গ্লোবাল ভয়েসেস অনলাইন-এর তিউনিশীয় লেখিকা এবং ব্লগার লিনা বেন মেহেন্নি (@বেনমেহন্নিলিনা), যে কিনা এ তিউনিশিয়ান গার্ল নামে ব্লগ করে থাকে, এরা সবাই নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে, রয়টার্সের এক সংবাদে এই তথ্য জানা গেছে। ৭ অক্টোবর পুরষ্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।
সাইবার-এক্টিভিজমের মাধ্যমে ঘোনিম এবং আব্দেলফাত্তাহ উভয়ে মিশর বিপ্লবের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। মিশরের বিপ্লবের সময় ঘোনিম ১১ দিন কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করে। পরে আবিষ্কার হয় যে গুগলের এই নির্বাহী ছিলেন খালেদ সাইদের সমর্থনে ফেসবুকে তৈরি করা পৃষ্ঠার অন্যতম এক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। আমরা সবাই খালেদ সাইদ (ইউ আর অল খালেদ সাইদ) নামক ফেসবুকের এই পাতাটি আলেকজান্দ্রিয়ার এই তরুণের স্মরণে তৈরি করা হয়, পুলিশ কর্মকর্তা হাতে যার নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনার ফলে পুলিশের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখা দেয়। ২৫ জানুযারিকে বিপ্লব দিবস ঘোষণা করা হয়, ঘটনাক্রমে সে দিনটি ছিল পুলিশ দিবস। পুলিশের নির্মমতার বিরুদ্ধে এবং শাসকরা যে সমস্ত অন্যায় করেছে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য তরুণরা এই দিনটিতে তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরে।
এসরা আব্দেলফাত্তাহ নামক ভদ্রমহিলা, ৬ এপ্রিল ফেসবুক গ্রুপ, নামক পাতার অন্যতম এক প্রতিষ্ঠাতা, যা ২০০৮ সালে তৈরি করা হয়। মিশরের এল মহল্লা এল কুবরা নামক বস্ত্রশিল্প এলাকা জুড়ে শ্রমিকদের ডাকা একদিনের সাধারণ ধর্মঘটের প্রতি সমর্থনে-এই পাতা সৃষ্টি করা হয়। এ ছাড়াও এই দিনটিকে ক্রোধের দিন (দি ডে অফ এ্যাঙ্গার) নামে অভিহিত করা হয়। মূলত এটি বিপ্লবের পূর্বাবস্থা হিসেবে কাজ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে তরুণদের সংগঠিত করা এবং সেখানে কি ঘটছে সেই বিষয়ে সারা বিশ্বকে জানানোর জন্য এই পাতা সৃষ্টি করা হয়েছিল ।
ঘোনিমের মত, আব্দেল ফাত্তাহ তার অনলাইন কার্যক্রমের জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন।
এদিকে তিউনিশিয়ার ব্লগোস্ফেয়ার এখনো বেন মেহন্নির সম্ভাব্য মনোনয়নের সংবাদ তেমন একটা আলোড়িত নয়, টুইটার কেবল ঘোনিম এবং আব্দলফাত্তাহ-এর মনোনয়নের সংবাদে মিশরীয় টুইটারের প্রতিক্রিয়ার সাথে মৃদু কন্ঠ মিলিয়েছে।
ওমার এলহাদি মনোনয়নপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়েছে:
ডালিয়া মোঘাদ ব্যাখ্যা করেছে :
@ ডিমোঘাদ: : @ ঘোনিম এবং এসরা, নোবেল শান্তি পুরস্কারে জন্য মনোনীত হওয়ার মানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সামগ্রিকভাবে #ইজিপশিয়ানরেভ্যুলুশন বা মিশর বিপ্লবের উপর আলো ফেলল ..
গিগি ইব্রাহিম প্রশ্ন করেছে :
@জিস্কোয়ার৮৬: মিশর বিপ্লবের নাগরিকদের নোবেল শান্তি পুরষ্কারে মনোনয়ন পবার বিষয়টির কি হল?!!
এবং আহমেদ হাসান তান্তাউয়ি এর সারমর্ম করেছে, যা নীচে প্রদান করা হল :
@ তান্তাউয়ি:অনেক মিশরীয় একটিভিস্ট, নোবেল শান্তি পুরস্কার এর জন্য মনোনীত হওয়ায় ঘোনিম, এসরা এবং ৬ এপ্রিলের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ ,কি এক লজ্জা# ফেল#ইজিপ্ট
এই মনোনয়ন লাভের ঘটনায় বিশেষ করে ঘোনিম সমালোচনার মুখে পড়েছে।
আরাবিস্টা বলছে:
@আরাবিস্টা: @জাস্টআমিরা # ঘোনিমের এটা প্রাপ্য নয়, অনেক অখ্যাত বীর ছিল, যারা এই বিপ্লবে অনেক বেশি সাহস প্রদর্শন করেছে. সে আসলে নিজেকে খুব ভালভাবে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে টম গারা ঘোনিমকে রক্ষায় এগিয়ে এসেছে, সে বলছে:
@টমগার: @ আরাবিস্টা, এই কথাটা বলা আসলে খুব অন্যায়, এই ব্যক্তিটি প্রচার মাধ্যমের সামান্যতম প্রিয়পাত্র নয়। সে প্রায় সকল সব বিদেশী মিডিয়ার অনুরোধ অগ্রাহ্য করেছে>@জাস্টআমিরা
তারেক শালাবাই এর একটা ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করেছে।
@তারেকশালাবাই:বিশেষ করে মুক্তির পর @ ঘোনিমের উপর যে চাপ ছিল এবং এখন মনোনয়ন লাভের পর যে যে অপরিসীম চাপ তৈরি হয়েছে, মানুষ তা বুঝতে পেরেছে। সে নিজে এর কোনটাই পছন্দ করেননি।
মোহাম্মেদাব্দেলফাত্তাহ এর সাথে যোগ করেছে:
@এমফাত্তাহ ৭: @ঘোনিমের প্রতি সকল সমর্থন রইল এবং দেখতে চাই যে সে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেছে। আমাদের প্রজন্মের একজন, আমাদের সবার জন্য এক গর্ব
এদিকে লিবিয়ার ঘাজি ঘেবলাউয়ির। এই বিষয়ে ভিন্ন এক চিন্তা রয়েছে, সে টুইট করেছে :
@ঘেবলাউয়ি: আশা করি #নোবেল শান্তি পুরস্কার আরব বিপ্লব থাকে দূরে থেকে থাকবে, অনেকবার এর সুনাম কলঙ্কিত হয়েছে, শঙ্কা রয়ে যায় যে, এই ঘটনা না আবার প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামকে মূল্যহীন করে ফেলে।