নিউ ইয়র্ক সিটির গুরুত্বপুর্ণ অর্থনৈতিক এলাকায় অকুপাই ওয়াল স্ট্রীট (টুইটারে,#অকুপাইওয়ালস্ট্রিট) নামক একটি গ্রুপ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আয়োজন করেছে, আর কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান এ্যাডবাস্টারস এবং হ্যাকার গ্রুপ এ্যানোনিমাস এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে।
আরব ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নানা শহরে যে সব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। ওয়াল স্ট্রিট যে ভাবে কাজ করেছে, তাতে এই সব তরুণের মোটেও খুশি নয়। তাদের মতে এই অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটিকে “কর্পোরেটোক্রেসী” বা বাণিজ্যিকীকরণ করে ফেলেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে বেকার বানিয়ে ফেলেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে এই গ্রুপ জুকোত্তি পার্ক দখল করে রেখেছে এবং তারা আশা করছে যা সামনের মাসগুলোতে আরো অনেক নাগরিক তাদের সাথে যোগ দেবে।
সঙ্গীতকার, চিকিৎসা কর্মী, প্রয়োজন অনুসারে গড়া এক গ্রন্থাগার এবং একটি প্রযুক্তি টিম, যারা কম্পিউটার এবং অন্যান্য যন্ত্রসহ নিজেদের সজ্জিত করেছে, এদের সবাইকে পার্কে পাওয়া যাবে। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা পিচবোর্ডের এর টুকরা দিয়ে ব্যানার তৈরি করেছে। যার মধ্যে দিয়ে মধ্যে তারা পুঁজিবাদ এবং ট্রয় ডেভিসের প্রাণদণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেছে।
বিক্ষোভকারীরা এই আদর্শে এক হয়েছে যে,“আমরা হচ্ছে ৯৯ শতাংশ, যারা অবশিষ্ট ১ শতাংশের লোভ এবং দূর্নীতি সহ্য করব না”.
যদিও তেমন কোন ব্যাঘাত ছাডা বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়ে এসেছে, তারপরেও এতে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে: সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর-এ, ৮০ জনের মত নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত ” পথচারী ও যান চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও গ্রেফতার প্রতিরোধ এবং সরকারের প্রশাসনিক কাজে প্রতিবন্ধক সৃষ্টির কারনে এই সমস্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়।
তবে এই ঘটনা, বিক্ষোভকারীরা শহরের অন্যান্য অংশ,যেমন ম্যানহাটানের কেন্দ্রে ইউনিয়ন স্কোয়ারে মার্চ করে যাবার ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। যখন মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলো এই বিক্ষোভের তেমন একটা সংবাদ প্রদান করেনি, তখন সকল ডিজিটাল সামাজিক প্রচার মাধ্যম এই ঘটনার সংবাদ ভরে ওঠে (টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব, ভিম, ফ্লিকার)।
জাতীয় ব্যক্তিত্ব, যেমন অধ্যাপক এবং দার্শনিক কর্নেল ওয়েস্ট (@কর্নেল ওয়েস্ট) টুইটারের মাধ্যমে বিক্ষোভের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেছে:
তোমাদের অভিনন্দন। ‘নাগরিক অবাধ্যতা’ আমেরিকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। #ওকুপাইওয়ালস্ট্রিট,http://ow.ly/6DNj1
ভ্যান জোনস (@ভ্যানজোনস), যুক্তরাষ্ট্রের এক অন্যতম একটিভিস্ট, তিনিও এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রদর্শন করেছেন, আর একই সাথে পুলিশের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত কথা বলে যাচ্ছেন।
অকুপাই ওয়াল স্ট্রীটের ওই সমস্ত বিক্ষোভকারীরা সত্যিকার অর্থে খানিকটা ভালবাসা লাভের যোগ্য। কিন্তু এনওয়াইপিডি? ডাব্লিউটিএফ? এই ভিডিওটি দেখুন! @লাইভস্ট্রিম-এর মাধ্যমে http://livestre.am/PlNN-এর ঘটনা দেখছি।
তবে মিশেল ক্যাটালোনার-এর (@ইনদিফেড) মত টুইটার ব্যবহারকারীরা বিশ্বাস করেন যে, এই প্রতিবাদ নিজেই নিজের বৈপরীত্য প্রকাশ করছে:
এটা দেখতে এতই সুন্দর লাগছে যে অকুপাই ওয়াল স্ট্রীটের এই সমস্ত তরুণরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের আইফোন এবং অ্যানড্রয়েড দিয়ে টুইট করছে। ক্ষমতার যুদ্ধ।
এ সবের মাঝেও রিকার্ডো (@জেরইকিমায়ো) [স্প্যানিশ ভাষায়] ২৪ সেপ্টেম্বর-এর রাতের ঘটনায় আরেকটি বৈপরীত্য আবিষ্কার করেছেন:
y esto pasa en el pais mas [sic] libre Al menos 80 detenidos en Nueva York durante las protestas para ‘ocupar’ Wall Street http://bit.ly/onHB4C
নীচে “অকুপাই ওয়াল স্ট্রীট-এর একটি ভিডিও রয়েছে, যেটিতে দেখা যাবে কি ভাবে এক শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা বিক্ষোভকারীরা অবরুদ্ধ হয়ে ছিল: