ইরান: হাসুন, শাসকেরা আপনার ইমেল পাঠ করছে

ইরানের বেশ কিছু ব্লগার সেই সময় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে, যখন তারা জানতে পারে যে গত দুই মাস ধরে তাদের জিমেইল ইনবক্স ইরান সরকারের পাঠের জন্য উন্মুক্ত হয়ে রয়েছে এবং তাদের ভিন্ন মতাবলম্বীদের শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।

রেডঅরবিট বলছে:

যে কোন গুগল সাইট থেকে এইচটিটিপি সংযোগে ডিজিটালি সাইন করতে দুর্বল এসএসএল সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হয়েছে এবং ২০১১ সালে এটি ইস্যু করেছে ডিজিনোটার নামের হল্যান্ডের এক কোম্পানী। বিশেষ করে যে সমস্ত ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতিবিদেরা গুগল সিস্টেমের নিরাপত্তার উপর তাদের আস্থা রেখেছে, তারা হয়তোবা এই হামলার শিকার হতে পারে।

২ আগস্ট ২০১১-এ গুগল তার প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে, সে জানায়:

আজ আমরা গুগল ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে এসএসএল-এ ম্যান ইন-দি-মিডিল (এমআইটিএম) নামক আক্রমণের সংবাদ পেয়েছি, সম্ভবত কেউ তাদের মেইলে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে এবং গুগল সেবার গোপনীয়তা উদ্ধারের চেষ্টা করছে… গুগল ক্রোম ব্যবহারকারী এই আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত, কারণ ক্রোম প্রতারণাকে চিহ্নিত করতে পারে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান আরেশ সেভম সতর্ক করে দিয়েছে যে টর, ইয়াহু এবং মজিলাও এই আক্রমণের শিকার হতে পারে।

এখানে আলি বোরহানীর (ইরান-ভিত্তিক এক আইটির ছাত্র) সাথে গুগলের যে আলোচনা হয়েছে, তা তুলে ধরা হল:

কেমন আছেন
আজ সকালে আমি যখন আমার জিমেইল এ্যাকাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করি, সে সময় আমি ক্রোমের এক সার্টিফিকেট সতর্কতা খেয়াল করলাম। আমি এর এক স্ক্রিনশট নিলাম এবং এই সার্টিফিকেট ফাইলে সংরক্ষণ করে রাখলাম।

এই সেই সার্টিফিকেট ফাইল যা স্ক্রিনশট সহ এক জিপ ফাইলে পাঠানো হল।
http://www.mediafire.com/?rrklb17slctityb
এবং এই সেই ভূয়া ডিকোড সার্টিফিকেট-এর টেক্সট:
http://pastebin.com/ff7Yg663
যখন আমি একটা ভিপিএন ব্যবহার করলাম, তখন আমি কোন সতর্কবার্তা দেখিনি। আমি মনে করি আমার আইএসপি কোম্পানী বা ইরান সরকার এই আক্রমণ করেছে (কারণ আমি ইরানে বাস করি এবং আপনারা হয়ত কমোডো হ্যাকার-এর কাহিনী শুনে থাকবেন!)।

ইরান অনলাইন সিকিউরিটি লিখেছে, যখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তাদের গুগল ডকসে প্রবেশ করতে গেছে, তখন তারা এক সতর্কতা সঙ্কেত পেয়েছে।

এদিকে বেশ কিছু ব্লগার নিরাপত্তার সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেছে, যেমন ইমেইলে প্রবেশ করার জন্য প্রক্সি ব্যবহার করা। নিমা রাশেদান একজন এক সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, আসলে কি ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে, তিনি ইরানের নেট ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।

ইমেইলের মাধ্যমে নিমা রাশেদান আমাকে বলেছে যে ইরানের বেশীরভাগ প্রচার মাধ্যম এই আক্রমণের গুরুত্ব উপেক্ষা করেছে। হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড, ফাইল, আর্কাইভ প্রবেশ করতে পারে এবং দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই আক্রমণ কেবল গুগলের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল না, একই সাথে ইয়াহু এবং ফায়ারফক্স এর লক্ষ্যবস্তু ছিল। এই ঘটনায় ডিজিনোটার এখনো চুপচাপ রয়েছে, যদিও “ইরানিয়ান হ্যাকার” নামের একদল গ্রুপ এটি হ্যাক করে নিয়েছিল। রাশেদান বলছে যে এতে যে ক্ষতি হল তা কল্পনার বাইরে এবং কমোডো হ্যাকিং এর সাথে এর কোন রকম তুলনা করা যায় না।

ইরানের নেট ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন এক প্রচারণা শুরু হয়েছে, যার লক্ষ্যবস্তু সম্বন্ধে আমরা পাঠ করি:

ইরানের নেট নাগরিকরা এক বিপজ্জনক পরিবেশের মধ্যে রয়েছে সে বিষয়ে সচেতন করা আমাদের লক্ষ্য, বিশেষ করে ডিজিনোটার নামক কেলেঙ্কারির পর।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .