- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বাহরাইন: লিলিয়েন খলিল, আরেক ব্লগীয় তামাশা নাকি প্রচারণা?

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., বাহরাইন, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, প্রযুক্তি, রাজনীতি

লিলিয়েন খলিল (@লিলিয়েন_খলিল [1]) নামে তথাকথিত আরব-আমেরিকান সাংবাদিকের পরিচয় ও অনুসন্ধান বিষয়ে গত ২ আগস্ট ২০১১ তারিখে ব্রিটিশ ব্লগার ও পিএইচডি ছাত্র মার্ক ওয়েন জোন্স (@মার্কোওয়েনজোন্স [2]) একটি পোস্ট [3] লিখেন।

ঐ সাংবাদিকের সকল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখা যায় যে সব অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন, যে সব সাক্ষাতকার তিনি গ্রহণ করেছেন এবং যাদের সাথে তিনি দেখা করেছেন তা সবই সাজানো। এছাড়াও তিনি আটলান্টায় সিএনএন-এ কাজ করেছেন এবং সাংবাদিক হিসেবে তিনি তুর্কী সংবাদপত্র সাবাহ-তে কাজ করেছেন মর্মে তিনি যে দাবি করেছেন সে বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানই তাকে চেনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সাবাহ-তে যে তিনটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বলে তিনি যে দাবি করেন তা আসলে রয়টার থেকে নকল করা ।

[4]

লিলিয়েন খলিলের টুইটার অবতার

যখন তিনি বাহরাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর (সরকার সমর্থিত সংবাদপত্র যা বর্তমানে রহস্যজনকভাবে উধাও) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন তখন খলিলের সাথে বাহরাইনী শাসনামলের সম্পর্কের বিষয়টি জোন্স খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন।

খলিল তাঁর অনলাইন যোগাযোগে বাহরাইন ছাড়া আরবের সকল দেশের গণজাগরণের বিষয়টিতে ইরানের হস্তক্ষেপ আছে বলে মনে করেন। এতে করে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে হয় সে একজন বাহরাইনী এজেন্ট অথবা সম্প্রতি “ দামাস্কাসের সমকামী মেয়ে ব্লগের [5]” মত তিনি কোন পশ্চিমা তামাশা। পরে উদঘাটিত হয় এ ব্লগটির লেখক একজন মাঝ বয়সী পুরুষ অধ্যাপক।

জোন্সের আনীত অভিযোগের বিষয়ে খলিল কোন প্রতুত্তর দেন নি, তিনি আজ বলেছেন যে তিনি শীঘ্রই এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন:

@লিলিয়েন_খলিল [6]: ডক্টর জোন্স কোন বিষয়টি “উন্মোচন” করতে আগ্রহী হয়ে উদ্যোগী হয়েছেন সে বিষয়টি আমি নিজেও বুঝতে পারছি। তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি উদগ্রীব।

খলিলের পেছনে কে?

বাহরাইনী ব্লগার মোহাম্মেদ আলমাসকাতি(@ইমুডজ [7]) সন্দেহ প্রকাশ করেন যে বাহরাইনী শাসক তার ভাবমূর্তি ধরে রাখার জন্য প্রচার মাধ্যমকে কিভাবে ব্যবহার করেছেন তার একটা অন্যতম উদাহরণ হতে পারেন খলিল:

@ইমুডজ [8]: আমি বুঝতে পারছি যে সত্যকে বিকৃত করা হয়েছে, উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পুরোপুরিই গ্রহণযোগ্য, আবর্জনা থেকে সরকার পক্ষীয় আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব দাড় করানো এক নতুন প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

মিসরীয় সাংবাদিক মোনা এলতাহাওয়ী(@মোনাএলতাহাওয়ী [9])লিলিয়েন খলিলের তামাশার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন:

@মোনাএলতাহাওয়ী [10]:@নাবিলারাজাব-এ লিলিয়েন খলিলের বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমনে আমি বিস্মিত ও ক্রোধান্বিত হয়েছিলাম। আর এখন জানা গেল যে সে ভূয়া?

মিসরের ওয়েবসাইট ভিত্তিক সংবাদপত্র বিকিয়া মাসর খলিল সম্পর্কে মন্তব্য করেছে। খলিল তাদের ওয়েবসাইটে লিখতেন। ‘লিলিয়েন সম্পর্কে আমরা কি জানি’ শিরোনামে জোসেফ মেটন একটি পোস্ট [11] লিখেছেন। তিনি বলেন যে খলিলের টাম্বলার অ্যাকাউন্ট টি যখন সরিয়ে ফেলা হয় তখনই আমাদের সন্দেহ হয়েছিল, যদিও তিনি (খলিল) বলেছিলেন যে তাঁর অ্যাকাউন্ট টি হ্যাকড হয়েছে, মিসরীয় রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মেদ এল বারাদি [12] ও অন্যান্যদের সাক্ষাতকার গ্রহণের বিষয়ে তাকে বলা হলেও সে তাদের ওয়েবসাইটের জন্য কোন সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন নি। মেটন তাঁর পোস্ট শেষ করেন এভাবে:

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লিলিয়েন খলিল পরিপূর্ণভাবে অনেক লোক ও সংগঠনকে ব্যবহার করেছেন এটা দুঃখজনক এবং অনৈতিক একটা বিষয়।

পরবর্তীতে মেটন (@জেমেটন [13] ) টুইট করেন:

@জেমেটন [14]:মেটন: তো দেখা যাচ্ছে লিলিয়েন খলিল (সে যেই হোক না কেন) আমার বিরদ্ধে এই http://t.co/eS6eA1O [15] নিবন্ধের জন্য মামলা করার হুমকি দিয়েছেন।

ফরেন পলিসি সাময়িকীর নির্বাহী সম্পাদক ব্লেক হানসেল(@ব্লেকহানসেল [16]) খলিলের আরবি কথনের সক্ষমতা নিয়ে মজার মন্তব্য করেছেন:

@ব্লেকহানসেল [17]:লিলিয়েন খলিল নামের মহিলা যদি আরবিভাষী হয় তাহলে আমি শিবার রাণী http://t.co/GfWyOxz [18]

গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের সাংবাদিক ব্রায়ান হুইটেকারও লিলিয়েন খলিল সম্পর্কে তাঁর ব্লগ [19] আল-বাব-এ লিখেনঃ

দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁর লেখালেখির বিষয়টি যদি বিবেচনাও করি, তাহলেও দেখা যায় ইন্টারনেটে তাঁর সম্পর্কে খুব কম তথ্যই আছে (এখন তো আর অনেক কম, কারন সম্প্রতি অনেক তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে), আর তাঁর প্রকাশিত লেখার সংখ্যাও খুব কম।

বাহরাইনী বিষয়ে একজন প্রখ্যাত ব্লগার চানা’দ (@চান্দবিএইচ [20]) খলিল বিষয়ক একাধিক টুইট করেন। একটাতে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন:

@চান্দবিএইচ [21]:#লিলিয়েন খলিল [22] ভূয়া জানার পর এত লোক কেন মর্মাহত হয়েছে সে বিষয়টি আমাকে বিস্মিত করেছে। কেউ কি গুগল ঘেঁটে দেখে নি?

মার্কিন সক্রিয়তাবাদী জিলিয়ান সি ইয়র্ক (@জিলিয়ানসিইয়র্ক [23]) খলিলের ভূয়া পরিচয়ের বিষয়ে রসাত্মক মন্তব্য করেন:

@জিলিয়ানসিইয়র্ক [24]:তো, এটি #লিলিয়েনখলিল [22] নামের আরেকটা তামাশা। আমার মনে হয় এখন আমার বলার সময় হয়েছে যে মারাকেশের রাস্তায় আমি একটা ছয় বছর বয়সী বেড়াল।