এখন থেকে ১ মাস আগে কুয়েতের নাগরিকত্বহীন বেদুঈন সম্প্রদায় তিনদিনের এক প্রচারণা শুরু করেছিল, যে প্রচারণার উদ্দেশ্য ছিল প্রচার মাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করা এবং বিশ্ববাসীর কাছে তাদের দাবীর কারণগুলো জানানো, আর এ কাজের জন্য তার “টুইটারের অবতারের ছবিটিকে উল্টে” দেয়। এই শুক্রবার তারা আরেকটি প্রচারণা চালায়, এইবার তারা আকাশে বেলুন ছেঁড়ে দেয়। তার এই বেলুনের নাম দেয়”স্বাধীনতার বেলুন (ফ্রিডম বেলুন)“.
জনতা এই প্রচারণার সাথে নিজেদের যুক্ত করে এবং তারা “তোমার অবতার উল্টে দাও” নামক প্রচারণার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। এই ঘটনায় অনেক টুইটার ব্যবহারকারী নিজেদের অবতার (প্রোফাইলের ছবি পাল্টে তালাল ওবেইদ-এর ডিজাইন করা ছবি গ্রহণ করে, (@তাতাবোতাতা) যা আরবী ভাষায় একটি শব্দকে তুলে ধরছে: ” বাইদুন” (বেদুঈন), যার মানে “রাষ্ট্রহীন”। তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে চায়, জনতা তাদের প্রতি সমর্থন এবং সহানুভূতি প্রদর্শন করেছে। তারা বেলুন উড়িয়ে তাদের অধিকার দাবি করে।এক মহিলা টুইটারকারী, যার নাম মানাইয়ের (@মানাইয়েরাআবস) তিনি তার টুইটে শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজেদের মতামত তুলে ধরার জন্য বেদুইনদের প্রশংসা করেছে:
@মানাইয়েরাআবস : দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় বসবাস করা সত্বেও, তারা তাদের দাবী আদায়ের জন্য এক শান্তিপূর্ণ প্রচারণা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
ওমার আলঅরাইমান (@ ওমারআলঅরাইমান ) কুয়েতের এক ছাত্র। সে নির্দেশ করছে, যখন কুয়েতের বেদুঈনরা তাদের দাবী আদায়ের চেষ্টা করছে, তখন তা শান্তিপূর্ণভাবে করছে:
@ ওমারআলঅরাইমান: #ফ্রিডমবেলুনস তারা পরিষ্কার শান্তিপূর্ণ এক দাবী আদায়ের কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের প্রদর্শন করছে যে তারা কতটা মহান, এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে তারা ধৈর্য্যের পরিচয় এবং কুয়েতের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করছে
কুয়েতের আইনজীবী নাসের নাজাফ (@নাসেরনাজাফ) তার টুইটে কুয়েতের বেদুঈনদের অবস্থা তুলে ধরে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, সে বলছে:
أتمنى ان تكف الحكومة عن المماطلة في توفير الحقوق الانسانية والمدنية لهذه الفئة المظلومة
কুয়েতের এক মহিলা যার ডাকনাম কোয়াবল (@কোয়াবল), সে বিগত কয়েকদিন ধরে @ফ্রিডমবেলুনস নামক প্রচারণা নিয়ে টুইট করে যাচ্ছে এবং সে তার এক টুইটে যারা বেলুন উড়িয়েছে তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে লিখেছে। যদিও গ্রেফতারের ঘটনার বিষয়ে এখনো কোন নিশ্চিত সংবাদ পাওয়া যায়নি:
@কোয়াবল : উদ্দীপনা ছাড়া মহান কোন কিছুই অর্জন করা যায় না। কিন্তু আজ তারা আমাদের স্বপ্নকে হত্যা করল, তারা আমাদের উদ্দীপনাকে হত্যা করল।
এক আমেরিকান ব্লগার যে কিনা কুয়েতে বাস করছে, যে নিজেকে “আমেরিকান গার্ল” হিসেবে অভিহিত করে থাকে। সে সম্প্রতি তার এক পোস্টে, এই বিষয়ের প্রতি তার সমর্থন প্রদর্শনের জন্য এই প্রচারণার বিবৃতি উদ্ধৃতি প্রদান করেছে:
বেদুঈন এবং তাদের সকল সমর্থকরা এক প্রচারণা চালু করেছে। এই প্রচারণায় তারা তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রজ্বলিত করার জন্য উড়ন্ত লণ্ঠন ছাড়বে, যে মত প্রকাশের মত বিষয়টি তাদের জীবন থেকে উধাও হয়ে গেছে, সেই বর্ণবাদের কারাগার থেকে এক বেলুন স্বাধীনতার আকাশে ছেড়ে দেবে। বেলুন ছাড়ার সময় হচ্ছে ২৯ জুলাই, ২০১১- তারিখে কুয়েতি সময় রাত ৮.৩০ মিনিটে। দয়া করে মানবাধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য বেদুঈনদের মানবিক এই অধিকার আদায়ের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করুন। উল্লেখিত সময়ে স্বাধীনতার জন্য প্রজ্বলিত বেলুন আকাশে ছেড়ে এই কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করুন।
আবদুলআজিজ আল-আসাফ কুয়েতের এক টুইটার ব্যবহারকারী (@ বো_এস৩সাইয়েদ)। তিনি এই প্রচারণায় সমর্থন প্রকাশ করার জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি এক ভিডিও ধারণ করেছেন যা পরে ইউটিউবে আপলোড করেন। তার ভাতিজি ফোউজ আবদুল্লাহ-এর সূত্রমতে (@ ফোউজআবদে ), আল আসাফকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবার উপক্রম করেছিল, কিন্তু যখন পরে তারা আবিষ্কার করে যে সে এক কুয়েতি এবং নাগরিকত্বহীন কোন ব্যক্তি নয়, তখন তারা তাকে ছেড়ে দেয়:
@ ফোউজআবদে : এখান কৌতুহলজনক বিষয় হচ্ছে, আমার চাচা @বো_এস৩সাইয়েদ, যে কিনা পুরোপুরি এক কুয়েতি নাগরিক তাকে পুলিশের সাথে যেতে বলা হয়েছিল, কিন্তু পরে পুলিশ আবিষ্কার করে যে সে এক কুয়েতি নাগরিক, তখন পুলিশ তাকে সাথে না নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে!
খালেদ নামের এক ব্লগার টুইটারে এই প্রচারণার ছবি সমূহ সংগ্রহ করেছে এবং সেগুলোকে একসাথে পোস্ট করেছে। সে সব ছবির মধ্যে থেকে এখানে একটি তুলে ধরা হল: