- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সিঙ্গাপুর: “প্রশ্রয় পাওয়া” সৈন্যদের বিষয়ে বিতর্ক

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, সিঙ্গাপুর, নাগরিক মাধ্যম, যুবা, শিক্ষা

সিঙ্গাপুরের সৈন্যরা কি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত? নেটিজেনদের করা অনেকগুলো প্রশ্নের মধ্যে এ প্রশ্নটি অন্যতম। একজন তরুণ চাকুরিরত সৈন্য সম্ভবতঃ তাঁর গৃহকর্মীকে দিয়ে কাঁধের ব্যাগ টানানোর ছবিটি প্রকাশ হওয়ার পর এ বিষয়ে নেটিজেনদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া হয়।

ফেসবুকে ছবিটি প্রথম প্রকাশিত হবার পর এটি প্রচার মাধ্যমের [1] দৃষ্টি আকর্ষন করে। পরবর্তীতে সৈন্যটি তাঁর আচরনের জন্য গভীর অনুশোচনা বোধ করে। বর্তমানে তাঁকে বোঝানো হচ্ছে।

[2]

সিঙ্গাপুরের সৈন্যরা যে‘বাতিল অকর্মা’ [3]সে বিষয়ে ছবিটি নিশ্চিত ধারণা দেয় বলে সেনাং দিরি মনে করেন:

এসএএফ –এর নিন্দুকেরা দীর্ঘদিন ধরে যে যুক্তিতর্ক করছিল এবং তা সামলাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে যে যন্ত্রণা সইতে হয়েছে সে বিষয়ে ছবিটি সবকিছু ইঙ্গিত করে – সিঙ্গাপুরের সৈন্যরা হল আদুরে শহুরে বালক। বাতিল, অকর্মা, বাবা-মার অত্যাধিক প্রশ্রয় পাওয়া সন্তান, গৃহকর্মীদের বাড়াবাড়িতে বেড়ে উঠা, যুদ্ধের অযোগ্য, পরিস্কার ভাবে কঠিন যুদ্ধ মোকাবেলায় অসমর্থ। ছবিটির জন্য কোন শিরোনামের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না, আপনি কি বলেন?

সিঙ্গাপুরের শিশুদের দুর্বল নিয়মানুবর্তিতার জন্য রজার পোহ বাবা-মা কে দায়ী [4] করেন:

সমস্যার মূল হল আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে বিদ্যমান দুর্বল নিয়মানুবর্তিতা। আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মানুবর্তিতার বিষয়ে নরম ভূমিকা প্রজন্মকে নষ্ট করে দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের নিয়মানুবর্তী না হবার শিক্ষা দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত: আমাদের বাবা-মা রাও এর জন্য দায়ী।

লোহ এবং বিহোল্ড ব্যঙ্গাত্বক এ চিঠিতে [5] কিছু বিষয়ে আলোকপাত করেন:

আমাদের প্রিয়তম ওয়াসি,

তুমি বিখ্যাত হয়ে গেছ!

সবখানে তোমার ছবি!

আর আমাদের সমগ্র জাতি তোমার মুখ দেখার জন্য ব্যাকুল আগ্রহে উদগ্রীব কিন্তু পুত্র, তোমার বাবা-মার পরামর্শ তুমি ওভাবেই থাকো আর কিছুমাত্র কুণ্ঠিত না হয়ে এগিয়ে যাও।

নিন্দুকদের যা খুশি ভাবতে দাও আর তোমার নিজের কাঁধের ব্যাগটি নেওয়ার সাহস করো না।

তোমার ভবিষ্যত উজ্জ্বল, প্রিয় ওয়াসি, বাবা-মা, তোমরা সবাই নিজের কাঁধের ব্যাগটি যা কিনা জিংসেং, বাক ওয়া, মুরগীর গন্ধ, আর তোমার রাতের খাবারের জন্য কয়েক ক্যান আ্যাবলনের মত মহার্ঘ্য জিনিসে পূর্ণ তা বহন করার মত তুচ্ছ, নীচ কাজটি না করার জন্য ব্যথিত হইও না। (ক্যান খোলার যন্ত্রটি তোমার ব্যাগের বাম দিকের পাশের পকেটে আছে প্রিয় পুত্র।)

জনাব ব্রাউন জনতাকে ছেলেটির প্রতি “খুব বেশি কঠোর [6]” না হওয়ার জন্য বলেছেন:

আমি মনে করি ছেলেটির প্রতি খুব বেশি কঠোর হওয়া উচিত নয়। আসলে সে তাই করেছে যা সিঙ্গাপুরের জনগণ করতে পছন্দ করে: বিদেশীদের দিয়ে এ সমস্ত কাজ করানো যা আমরা নিজেরা করতে পছন্দ করিনা।

খারাপভাবে শিশু প্রতিপালনের বিষয়টিকে ওয়ান্ট সাম তাও হুয়েই? অভিযুক্ত করেছেন কিন্তু তিনি প্রশ্ন [7] করেছেন কেন একজন ১৮ বছর বয়স্ক সিঙ্গাপুরিয়ানকে তাঁর রাইফেল বহন করার জন্য সাবালক ভাবা হবে যেখানে তাঁর নিজেরই ভোটাধিকার নেই:

হ্যা ছেলেটি তাঁর গৃহকর্মীকে তাঁর ফিল্ড ব্যাগ বহন করতে বলে ভুল করেছে,কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তাঁর বাব-মার উপরেও বর্তায়।

যুক্তি হল ১৮ বছর বয়স্কদের এরই মধ্যে শেখানো হয়েছে কিভাবে রাইফেল ধরতে হয় (১৮ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরিয়ান ছেলেদের বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্যবাহিনীতে ভর্তি করা হয়), সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে কেন তাঁদের কোন কিছু বলার থাকে না? আমি এ যুক্তিতে অনঢ়। কিন্তু উপরের এ ছবিটি আমার মত জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগের বয়সসীমা কমানোর বিষয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় না।

সিঙ্গাপুর কোপি টক বিশ্বাস করেন যে সৈন্যটির ছবি সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত [8] করেছে:

এ সৈন্যটি এস এ এফ কে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এটা একটা কারন হতে পারে কিন্তু এটা সার্ভিসের সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, এবং তাঁদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যারা এস এ এফ জাতীয় সার্ভিসম্যান হিসেবে গর্বের সাথে ইউনিফর্ম পরে থাকেন তাঁদেরকেও।

নিজের ফিল্ড ব্যাগ নিজেই বহন করো আর নিজের জুতো নিজেই পলিশ করো এত সৈন্য হিসেবে তোমার মর্যাদা এতটুকুও কমবে না।

ভিকিস রাইটিংস মনে করেন যে ছেলেটি বিদ্যালয়শিশুদের [9] প্রজন্মের প্রতিনিধি যারা গৃহকর্মীদের দিয়ে নিজেদের স্কুল ব্যাগ বহন করানোর মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছে:

হাজার হাজার ছেলেমেয়ে যারা তাঁদের গৃহকর্মীদের দিয়ে নিজেদের স্কুল ব্যাগ বহন করানোর মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠে সম্ভবতঃ ছেলেটি হল তাঁদেরই একজন। আমি আমার ব্লগে এর আগে আমার এক প্রতিবেশী ছেলের কথা বলেছিলাম যে তাঁর বাসা থেকে বড় জোর ১০ মিটার দূরের গেটে স্কুল বাসে চড়ার জন্য গৃহকর্মীকে দিয়ে তাঁর স্কুল ব্যাগ বহন করায়। ( ঘটনাটি মনে করতে মাথা ঝাঁকাতে হল।

আমার ছেলেরা আগামী বছর থেকে স্কুলে যাবে। আমি তাঁদেরকে সংবাদটি দেখিয়েছি এবং তাঁরা দৃঢ়সংকল্প যে আমরা ঘটনাটিকে তিল থেকে তাল বানিয়েছি। এতে দোষের কি আছে? আমরা বড়রা ছোটদের ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করি।