- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

বেলারুশ: স্বাধীনতা দিবসে হাততালি প্রতিবাদ (ভিডিও)

বিষয়বস্তু: পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, বেলারুশ, আইন, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, রাজনীতি, রুনেট ইকো

৩ জুলাই, ২০১১, ছিল বেলারুশের স্বাধীনতা দিবস। এই দিনে দেশটির বিভিন্ন শহর এবং নগরগুলোর রাস্তা জনতায় ভরে যায়, আর এবার তারা যারা সেখানে উপস্থিত হয়েছিল একটাই কারণে, হাততালি দেবার জন্য।

হাততালির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর জন্য তারা এই দিনে এ সব রাস্তায় হাজির হয়, যদিও সরকার এই দিনে হাতাতলি দেওয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল এবং ভিকোনটাকাটে নামের যে সামাজিক প্রচার মাধ্যম এই প্রতিবাদের সম্বনয়ক ছিল, তাদের সাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যেমনটা তারা বলেছিলে, যে তারা এমনকি কেবল প্রতিবাদে করার জন্য উপস্থিত থাকবে না, তার সাথে তারা তাদের নিজের ভেতরে যে ভয়, সেটার সাথে লড়বে।

হাততালি দেওয়া একটা অপরাধ?

এর আগে এ রকম ঘটনায় [1], বেলারুশ সরকার অবিশ্বাস্য সব সৃষ্টিশীল উপায়ে জনতাকে রাস্তায় সমাবেত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে।

২৮ জুন-এ, বেলারুশের আইনমন্ত্রী ভিক্টর গোলাভানভ, বলেন [2] [রুশ ভাষায়] যে যে মুহূর্তে একদল লোক কোন “স্কোয়ারে” জমায়েত হয়ে তালি দেওয়া শুরু করবে, “তখনি তাদের স্বাধীনতার ইতি ঘটবে এবং […]যারা এই স্কোয়ারে আসবে বিশ্রাম নিতে বা তদের সন্তানসহ হাঁটতে আসে, তাদের স্বাধীনতা শুরু হবে’। “হাতাতালি দেওয়া জনতা এই সব মানুষদের বিরক্ত করে [সাধারণ জনতাকে]”। এর সাথে তিনি বলেন, কোন স্থানে যদি সমবেত জনতা হাততালি দিতে শুরু করে, তাহলে তাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

২ জুলাই, ২০১১-এ, একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয় [3] [রুশ ভাষায়], যেখানে বলা হয় যে যুক্তরাষ্ট্র, বেলারুশে এক শান্তিপুর্ণ আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছে এবং এই ভিডিওতে আহ্বান জানানো হয় যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়।

http://www.youtube.com/watch?v=QV8FnS9bfqI [3]

পুলিশ বিভাগ থেকে টুইটারকারীরা @জিইউভিডি_মিনস্ক ক্রমাগত এক “ভালো পুলিশের” ভুমিকায় কাজ করে যাচ্ছে। তারা উপদেশ দিচ্ছে [4] [রুশ ভাষায়], ছবি প্রদর্শন করছে [5] [রুশ ভাষায়], তারা সাংবাদিকদের মুক্ত করে দেবার [6] সংবাদ জানাচ্ছে [রুশ ভাষায়], এবং তারা মানবাধিকার কর্মীদের সাহায্য করার [7] [রুশ ভাষায়] চেষ্টা করে।

ভকোনটাকটে গ্রুপ, “ যারা বেলারুশের অরেঞ্জ বিপ্লবের বিপক্ষে [8]” [রুশ ভাষায়], নামক একটি পাতা খোলা হয়েছে, যা এই শান্তিপুর্ণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে, সেটি ততটা সফল হতে পারেনি: এর সদস্য সংখ্যা ২০০০ জনেও ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।

A 'girl-tractor' and perhaps the only person in Minsk who was allowed to clap. Photo by Anton Motolko, used with permission. [9]

একটি মেয়ে ট্রাক্টর এবং সম্ভবত মিনস্কের একমাত্র ব্যক্তি যার হাততালি দেবার অধিকার রয়েছে। ছবি অন্তন মটোলকো-এর, অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।

৩ জুলাই, ভকনটাকটে গ্রুপের “ফিউচার মুভমেন্ট” সাইট ( যার প্রায় ২১৬,০০০ জন সদস্য ছিল) বন্ধ [10] করে দেওয়া হয় এবং সেটিকে আবার ৪ জুলাইতে পুনরায় চালু করা হয় ( এই মুহুর্তে, কেবল মাত্র ১৭,০০০ সদস্য পুনরায় এই গ্রুপে যোগদান করেছে)। ফেসবুক গ্রুপ ( [11], [12], [13]), যা এর বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, তার কোনটাই মুছে দেওয়া গ্রুপ থেকে সমান্যতম দর্শক লাভ করতে পারেনি। ভিকোনটাকাটে ব্যাখ্যা করেছে [14] [রুশ ভাষায়] যে এই গ্রুপ শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছে এবং এর সদস্যরা অন্য ব্যবহারকারীদের কাছে স্পাম ছড়াচ্ছে।

সত্যিকারের এক কফাকিয়ান প্যারেড বনাম হাততালি নামক কর্মকাণ্ড

এ বছরের স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড-এ, বরাবরের মত গতানুতিক অনুষ্ঠানের এর বাইরে কিছু ছিল না। তবে এবার, এ সব অনুষ্ঠানের বাইরে এই দিবসে আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে তার পুত্র নিকোলাইকে দেখা গেছে [15], যার গায়ে ছিল সামরিক বাহিনীর পোশাক, ঠিক তার পিতার মত। এই ঘটনার সূত্র ধরে কয়েকজন টুইটারকারী উপসংহার টেনেছে যে লুকাশেঙ্কো ইতোমধ্যে তার উত্তরসূরিকে পেয়ে গেছে। এখানে অদ্ভুত কিছু পোশাকে সজ্জিত কিছু শিশু পতাকা হাতে [16] দাঁড়িয়ে, যাদের মাঝে লেখা রয়েছে ” স্রস্টা আমাদের সাথে রয়েছে”। একটি পুরুষ ট্রাক্টর [17] এবং একটি বালিকা ট্রাক্টর [18], রোলার ব্লেড নিয়ে একদল আইস হকি প্লেয়ার [19], এবং আরো অনেক কিছু এখানে রয়েছে ( বিস্তারিত সংবাদের জন্য অন্তন মটোলকোর ব্লগ দেখুন [20] [রুশ ভাষায়] এবং সেই ভিডিওটি দেখুন, যেখানে লুকাশেঙ্কো ভাষণ দিচ্ছে [21] [রুশ ভাষায়])।

একই দিনে, একটু কম বিচিত্র, কিন্তু কাফকিয়ানের চেয়ে কম নয়, এমন এক অনুষ্ঠান মিন্সক রেলওয়ে স্টেশন স্কোয়ারে ( এবং বেলারুশের আরো অনেক জায়গায়) অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ তাদের কথা রেখেছে এবং হাততালি দেওয়া সকল জনতাকে গ্রেফতার করেছে (ভিডিও [22], [23])।

যে সমস্ত ভিডিওকে সক্রিয় ভাবে টুইট এবং পুনরায় টুইট করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে [24], [25], [26]:

অনলাইনের কার্যক্রম ছাড়াও, বাস্তব জগতে (অফলাইনে) এই প্রতিবাদের জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এদিকে বেলারুশের নিরাপত্তা বাহিনী সক্রিয়ভাবে ইন্টারনেটে সাইট বন্ধ করার উপাদান ব্যবহার করছে। কিছু সময়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগ সাইট লাইভজার্নাল For some time, social network LiveJournal was ঠিক মত কাজ করছিল না [27] [রুশ ভাষায়], সে সময় the uploading speed was ইচ্ছাকৃত ভাবে কমিয়ে দেওয়া হয় [28] [রুশ ভাষায়], এই সময়টাতে নেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে ২ মেগা বাইট-এ নেমে আসে।

সারংশ

প্রতিবাদকারীদের বন্দী করার ঘটনায় কঠোর প্রতিক্রিয়া এসেছে। সুইডেনের এক টুইটারকারী এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল ব্লিডট টুইট করেছেন [29]:

বেলারুশের স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীন চিন্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হল। তারা সমাজিক প্রচার মধ্যম বন্ধ করে দিল। এক শাসন ব্যবস্থা পতনের অপেক্ষায় রয়েছে। # বেলারুশ [30]

পাভেল শেরমেট এক রুশ সাংবাদিক, সে লিখেছে [31] [রুশ ভাষায়]:

Лукашенко страшно, очень страшно. Он сходит с ума, когда слышит аплодисменты. Поэтому в воскресенье хлопать президенту не разрешали даже ветеранам.
[…]
Спецслужбы бесятся. Они начали массированную атаку на молодежь еще накануне. Еще в субботу арестовали несколько десятков человек, как им казалось, – организаторов акции.
[…]
Но люди все равно вышли. Тысячи людей по всей стране.

লুকাশেঙ্কো এখন শঙ্কিত, খুব ভীত, যখন সে এই হাততালির শব্দ শুনতে পায় তখনই সে উন্মাদ হয়ে যায়।
[…]
নিরাপত্তা বাহিনীও এই হাততালির শব্দে পাগল হয়ে যায়। এই ঘটনার আগের দিন তারা তরুণদের উপর প্রচণ্ড হামলা চালায়। শনিবারে তারা ডজন খানেক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, নিরাপত্তা বাহিনী তাদেরকে এই প্রতিবাদের সংগঠক বলে ধরে নিয়েছিল।
[…]
কিন্তু তারপরেও, লোকজন এসেছিল। সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছিল।