মিশরঃ তাহরিরে লড়াই আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে

এই পোস্টটি মিশর বিপ্লব-২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

তাহরির স্কোয়ারে আবার এক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে। তাহরির স্কোয়ার ছিল মিশর বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল। এই দাঙ্গা শুরু হয় গতকাল এবং আজকে পর্যন্ত তা চলে। সেখানে আসলে কি ঘটেছিল এবং কি ভাবে এটি আরো তীব্র হয়, সে সম্বন্ধে নানাবিধ তথ্য অনলাইনে প্রকাশ হয়-এর সাথে মিশর বিপ্লবের সময় শহীদ হওয়া পরিবারের লোকজন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল-এবং তারা ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছিল। বিক্ষোভকারী, গুণ্ডা এবং পুলিশ একে অন্যের সাথে এক লড়াইয়ে যুক্ত হয়ে পড়ে। সংবাদে জানা গেছে যে, পুলিশ প্রতিবাদকারীদের উপর কাদানে গ্যাস ছুঁড়ে মারে, এবং প্রতিবাদকারীরা (অথবা গুণ্ডারা) এর জবাবে পাথর এবং মলোটভ ককটেল ছুঁড়ে মারে- তবে তা এমন নয় যে, একই ভাবে তারা প্রতিউত্তর করেছিল।

মিশরীয় একটিভিস্টরা এই ঘটনায় দ্রুত তাদের পর্যবেক্ষন টুইট করে এবং তা ব্লগে লেখে, তাদের আশে যা ঘটেছিল তারা তা ১৪০ শব্দের মধ্যে (টুইটে), ছবিতে এবং ভিডিও-র মাধ্যমে প্রদর্শন করে, যেমনটা আমি লিখেছি এবং ক্ষয় কষতির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে।

মানবাধিকার কর্মী রামি রউফ আমাদের জানাচ্ছে এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত যতজন ব্যক্তি আহত হয়েছে তার সংখ্যা:

@রামিরউফ: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে #তাহরির স্কোয়ারের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ১০৩৬ জন #ইজিপ্ট

গতরাতে করা, তার এক আগের টুইটে সে লিখেছে:

@রামিরউফ: বিষয়টিকে পরিষ্কার এবং যৌক্তিক করার জন্য বলছি- আমি তাহরির স্কোয়ারে কোন গুণ্ডা দেখিনি। সেখানে জনতা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশের সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়।

স্যালই সামি বিষয়টিকে পরিষ্কার করছে:

@সালমানন্ডার: তারা যাদেকে গুণ্ডা বলছে তারা শহীদদের পরিবার এবং একটিভিস্ট, যারা #২৫ জানুয়া্রির বিপ্লবকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিছুটা মর্যাদা, রক্ষা করা#তাহরির।

এই ব্লগ যার শিরোনাম “ ২৮ জুনঃ দ্বিতীয় এক তীব্র লড়াই’, সেখানে একটিভিস্ট গিগি ইব্রাহিম গত রাতে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে, তা এখানে রয়েছে।
আল জাজিরার সংবাদদাতা দিমা খাতিব তার এক ব্লগ পোস্টে এই রাতের ঘটনায় তার অভিজ্ঞতার কথা আমাদের জানাচ্ছেন। এটি রয়েছে এখানে, এবং আমিরা আল তাহউয়ি যা লিখেছেন সেটি রয়েছে এখানে [আরবী ভাষায়].

গিগি তার ব্লগে লিখেছে:

সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে এই প্রথমবারের মত আমি পাথর ছুড়েছি। সে সময় আমি মোটেও ভয় পাইনি। আমি মৃত্যুর জন্য তৈরি ছিলাম, কারণ রক্ত ছাড়া স্বাধীনতা আসে না। অনেকের মত আমারও টিয়ার গ্যাসের আঘাতে দম বন্ধ হয়ে আসছিল, যাদের মধ্যে ছিল @আলা, @লোবনা, @সালামসাইদেরা । আমার মোবাইল, ল্যাপটপ, এবং ফ্লিপ-এর তোলা ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি আপলোড করার জন্য আমি সে রাতের জন্য তাহরির স্কোয়ার ত্যাগ করি। এ সব যন্ত্রের ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এই রাতের ঘটনার উপর তোলা আমার ভিডিও আপনার শীঘ্রই দেখতে এখানে দেখতে পাবেন।

মোহাম্মেদ এল দাহশান, যে ট্রাভলারডাব্লিউ নামে টুইট করে থাকে তিনি একটি ছবি প্রদর্শন করেছেন, এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ ফুটপাথের অংশ ভেঙ্গে পাথর সংগ্রহ করছে পুলিশের দিকে ছুঁড়ে মারার জন্য।

 

@ ট্রাভলারডাব্লিউ: একজন মানুষ খালি হাতে ফুটপাথের পাথর ভেঙ্গে তার লড়াইয়ের রসদ সংগ্রহ করেছে, অবিশ্বাস্য। #তাহরির # জানু২৮ http://twitpic.com/5id261

Egyptian man picking rocks from the sidewalk

মিশরীয় এক নাগরিক ফুটপাথ থেকে পাথর সংগ্রহ করছে

মাহমোদ সালেম যিনি নামে, স্যান্ডমাংকি নামে টুইট এবং ব্লগিং করেন, তিনি বিবৃতি প্রদান করেছেন যে:

@ স্যান্ডমাংকি: ঘটনা ক্রমে আপনি ঠিক বুঝে উঠতে পারবেন না এখানে আসলে কি হচ্ছে। খুনের দায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি বা এই কাজটি করার চেষ্টা করা হয়নি #জানু২৫বিক্ষোভ

তিনি ব্যাখ্যা প্রদান করেন:

@ স্যান্ডমাংকি: এখানে বিষয় হচ্ছে ন্যায়বিচার। আমরা ন্যায়বিচার চাই, আমরা এমন এক বিচার ব্যবস্থা চাই, যা কাজ করবে। যদি এই ন্যায়বিচার নামক ব্যবস্থা বজায় থাকে তাহলে সবকিছু শান্ত হয়ে থাকবে।

তিনি সতর্ক করে দেন:

@ স্যান্ডমাংকি: আবেগের সাথে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করার ব্যাপারে ধারণা করা যায় এবং তা আমাদের প্রতি সন্দেহ তৈরি করবে এবং লোকজন এতে যোগ দেওয়া বন্ধ করবে, খুব ঠাণ্ডা মাথায় যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে হবে।

এখানে কি ঘটেছিল, সে বিষয়ে সারাহ এল সিরাগানে, এই বিষয়ে সে যে তত্ত্ব বের করেছে তা জানাচ্ছে, সে বলছে:

@এসসিরাগানে: কি ভাবে ঘটনার সূত্রপাত তা নিয়ে নানা ধরনের পরস্পর বিপরীত কাহিনী/ তত্ত্ব পাওয়া যাচ্ছে, কেন এই ধরনের গল্প ছড়াচ্ছে এবং কেন সেগুলো তাহরির স্কোয়ারে গিয়ে তৈরি হচ্ছে। # জানু২৮ (১/২)

তিনি এর সাথে আরো যোগ করেছেন:

@এসসিরাগানে: কিন্তু অন্যতম এক প্রধান বিষয় হচ্ছে এই সব বিচার কার্যের ধীর গতির কারণে তৈরি হওয়া হতাশা এবং বিচারের মুখোমুখি হওয়া অভিযুক্ত পুলিশদের মুক্তি পাওয়া। # জুন২৮ (২/২)

তার ব্লগে, হোসাম এল হামালাউয়ি এই ভিডিওটি প্রদর্শন করেছে, যেখানে গতরাতের কিছু কর্মকাণ্ডের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

এবং লিলিয়ান ওয়াগডে আজকের এই ভিডিওটি প্রদর্শন করেছে:

সে টুইট করেছে:

@লিলিয়ানওয়াগডি: দুপুরের পরে #তাহরির স্কোয়ারে যে লড়াই শুরু হয় তার ভিডিও http://youtu.be/SjAJSgQ3FYA #জানু২৮

এচাড়াও রাউফ পুলিশের সাথে অন্যদের লড়াইয়ের একটা সরাসারি ধারণ করা ভিডিও-র একটা লিঙ্ক প্রদর্শন করেছে, যা এখানে পাওয়া যাবে।

এই ঘটনার উপর আসা আরো প্রতিক্রিয়ার জন্য # তাহরির এবং #জানু২৮ হ্যাশট্যাগ দেখুন।

এই পোস্টটি মিশর বিপ্লব-২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .