কুয়েতঃ সংসদে, সংসদ সদস্যরা মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে!

A picture of the Kuwaiti parliamentary fight as posted by blog Frankom.com on May 18, 2011.

সংসদে, সংসদ সদস্যদের মারপিটের এক ছবি। ১৮ মে,২০১১-তে এটি পোস্ট করেছে কুয়েতের ব্লগ ফ্রাঙ্ককম.কম।


গুয়ানতানামোতে আটক বন্দীদের উপর এক আলোচনা চলার সময় কুয়েতের সংসদে, সংসদ সদস্যরা পরস্পরের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয়। সংসদের শিয়া সদস্য হুসাইন আল কালাফের প্রতি সালাফি সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন যে তিনি ওই সমস্ত বন্দীদের সন্ত্রাসী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই বর্ণনার প্রেক্ষাপটে সালাফি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হায়েফ, ওয়ালেদ আল তাবতাবি এবং জিম্মান আল-হিরবিশ তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে, যারা তাদের ইকলাল (মাথার পাগড়ি ) দিয়ে আল কালাফকে প্রহার করতে শুরু করে। যখন আরেকজন শিয়া সংসদ আদনান আল-মুতায়া এই ঘটনা থামতে যান, তখন তাকে প্রহার করা হয়।

কুয়েতি নাগরিকরা এই সংবাদে স্তম্ভিত হয়ে গেছে। তার এখন বিতর্ক করছে সংসদের প্রদর্শন কতটা নিম্নমানের এবং তারা বিতর্ক করছে কি ভাবে এই মারপিট, দেশের পরিস্থিতিকে উন্নত করার বিষয়ে তাদের ভাবনাকে অসহায় করেছে তুলেছে।

কুয়েতের প্রাক্তন গণ যোগাযোগ (কমিউনিকেশন) মন্ত্রী এবং কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ সাদ বিন তিফলাহ আবিষ্কার করেছে [আরবী ভাষায়] যে সংসদে এই একই অধিবেশনে এক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় ছিল, তার থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য এই লড়াই। সে সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা সংসদে একটা প্রশ্ন উত্থাপন বাতিল করে দেয়, যে প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীকে এক বছর পরে নতুন করে অবস্থান নেবার অনুরোধ জানানোর কথা ছিলঃ

ستكون “هوشة” النواب هي حديث البلد، وبالتالي ينسى الشعب أن دستوره قد أفرغ من محتواه أمس بتأجيل الاستجواب وتحويله للدستورية، وهذا هو المطلوب

সংসদে মারপিটের বিষয়টি সারা দেশে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়, এবং এর ফলে দেশটির নাগরিকরা তাদের সংবিধান সম্বন্ধে ভুলে যাব এবং ভুলে যাবে, কি ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে করা প্রশ্ন বাতিলের মাধ্যমে সংসদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে, যেটি ছিল এই অধিবেশনের মুল উদ্দেশ্য।

ফায়সাল আল-কিনাই কুয়েতের সাংবাদিক সংস্থার প্রধান, তিনি এই লড়াইয়ের ঘটনার উপর এক ব্যঙ্গাত্মক টুইট লিখেছে [আরবী ভাষায়]। সেখানে তিনি বলছেনঃ

حرس مجلس الأمة بحاجة لدورة كراتيه إستعدادا للجلسات المقبلة

আগামী সংসদ অধিবেশনের প্রস্তুতির জন্য এর প্রহরীদের কারাতের প্রশিক্ষন নেবার প্রয়োজন।

ডঃ থাকাল আল-আজমি কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং মানবাধিকার-এর অধ্যাপক, তিনি এই বলে মন্তব্য [আরবী ভাষায়] করেছেনঃ

ما يحصل الآن في مجلس الأمة هو مهزلة وجرأة غير مسبوقة في الاستهزاء بالدستور وبالشعب الكويتي

সংসদে যা ঘটল তা হচ্ছে কুয়েতের সংবিধান এবং জনগণের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন।

কুয়েতি ব্লগার আলি আলসারাফ লিখেছেন [আরবি ভাষায়], কি ভাবে এই মারপিটের ঘটনা কুয়েতের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটাচ্ছেঃ

إن تقاتل أبناء الوطن الواحد تحت قبة البرلمان التي تشرع فيها القوانين تأكد أنه لا يوجد لا غالب ولا مغلوب فالكل قد خسر .. الشعب والوطن #

যখন নাগরিকরা সংসদের ভেতরে মারপিট করে, যে সংসদে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তখন আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে এখানে কেউ জেতেনি বা কেউ হারেনি, কারণ সকলেই এখানে পরাজিত হয়েছে; জনতা এবং দেশ।

কুয়েতের আইনের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক একটিভিস্ট ডঃ ওবাইদ আল-ওয়াসিম এই মারপিটের বিষয়ে মন্তব্য করেছে [আরবী ভাষায়], সেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন কি ভাবে এই ঘটনা স্রেফ সরকারে জন্য সুবিধা বয়ে আনবেঃ

تحرشات القلاف بالقبائل لا تعكس موقفا طائفيا, بل دورسياسي منظم سبق أن شارك فيه زميله الكومبارس الجويهل قبل اعتزاله ولذلك استبدل المدرب

আল-কালাফ এর ঘটনা উপজাতীয়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়ানো সম্প্রদায়গত অবস্থানের প্রতিফলন ঘটায় না, কিন্তু তা এক সংগঠিত রাজনৈতিক ভূমিকার প্রতিফলন ঘটায়, যা সংখ্যালঘূ সম্প্রদায়ের নেতা আল জুওয়াইহিল অবসর গ্রহণের আগে পালন করত এবং এ কারণে কোচ একজনকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে প্রবেশ করালো।

কুয়েতের একজন ব্লগার যার ডাক নাম “পানাডোল” সে সংসদে মারপিটের ঘটনায় এক বিস্তারিত পোস্ট লিখেছে [আরবী ভাষায়], সে বলছেঃ

كيف ستحترم الحكومة النواب، وكيف سيحترمنا العالم، وكيف سنعلم أبناءنا، وكيف وكيف وكيف عندما نشاهد مثل هذه الصور (البايخة) وهي من أفعالكم

কি ভাবে সরকার সংসদ সদস্যদের শ্রদ্ধা করবে, কি ভাবে বিশ্ব আমাদের সম্মান করবে, কি ভাবে আমরা আমাদের সন্তানদের শিক্ষা দেব, এবং কি ভাবে, কি ভাবে, কি ভাবে, যখন আমরা তোমাদের এই বাজে কর্মকাণ্ডের ছবি দেখি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .