এই পোস্টটি ২০১১ সালে মিশরের প্রতিবাদ বিপ্লব সম্পর্কে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ
মিশরে চলমান বিপ্লবের আরেকটি দিক রয়েছে, সেটা হচ্ছে যারা তাহরির স্কোয়ারে অবস্থান করে আছে, তাদের প্রতিদিনের জীবন যাপন। গত ১২ দিন ধরে তারা সেখানে খাচ্ছে, পান করছে, স্লোগান দিচ্ছে, উল্লাস প্রকাশ করছে- সহজ কথায় সেখানেই দিবারাত্রি যাপন করছে। এখন এখানকার জীবনের একটা ছন্দ আছে, এখানে যে চেতনা প্রদর্শিত হচ্ছে তাতে এটি একটি ছোটখাট ইউটোপিয় এলাকা (সুখের এক কল্প রাজ্য)।
এখানকার বাসিন্দাদের সকাল শুরু হয় শারীরিক কসরতের সাথে। ব্যায়াম করার সময় সবাই আওয়াজ দেয় “মুবারক নিপাত যাক“ ।
বেলা বাড়তে থাকলে আরো লোকজন এসে তাহরির স্কোয়ারে জমা হতে থাকে। সে সময় এখানকার পুরোনো বাসিন্দারা আরো জোরালো স্লোগানে তাদের স্বাগত জানায়। যেমন @আশুক্রাই বলছেন:
সবার মনে যে প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে, সিরিয়া থেকে @মেসালুন টুইটারে সেই প্রশ্নটি করেছেন:
আজকে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছে, তাহরির স্কোয়ারের লোকগুলো শৌচ কর্ম সম্পাদন করছে কি ভাবে? এর জন্য, আমি সেখানে কোন আলাদা ব্যবস্থা দেখিনি …
উত্তরে আমি (মেসালুন) জানাচ্ছি:
হয়ত তারা কাছাকাছি কোন মসজিদ বা ভূগর্ভস্থিত পাবলিক টয়লেট বা বিল্ডিং অথবা কোন দোকানের শৌচাগার ব্যবহার করেছে। এমনকি কেউ কেউ শৌচ কর্মের জন্য বাড়ি গিয়েছে। উক্ত কর্ম সম্পাদন করে আবার এখানে ফিরে এসেছে।
উদাহরণস্বরূপ তাহরির স্কোয়ারে অবস্থানের সময় @তাফাতেফো টুইটারে বলেছেন:

এমনকি বৃষ্টির সময় জনগণ প্লাস্টিকের চাদরে ঢেকে মিছিল চালিয়ে গেছে। টুইটপিকে নাদিয়া আল আওয়াদির পাঠানো ছবি।
এক একটি দিন পার হচ্ছে, স্কোয়ারের চেহারা আরো বেশী করে জনগণের নিজের জন্য, নিজের আয়োজিত একটা প্রতিদিনের উন্মুক্ত উৎসবে রূপ নিচ্ছে। যেমন @ইথারকামাল টুইটারে লিখেছেন:
মিশরীয় উদ্ভাবন: ১ লিতে [এক মিশরীয় পাউন্ড] একটি ৭ আন্তর (ঘোড়ার গাড়ি) কাসর এল-নিল সেতু হয়ে আপনাকে #তাহরিরে নিয়ে যাবে#জান২৫
@তারেকশালাবি আরো যোগ করেছেন:
তাহরির স্কোয়ারে আপনি পপকর্ন, কুসকুস নামক খাবার, মিষ্টি আলু, স্যান্ডউইচ, চা ও পানীয় পাবেন! মিশরীয় নাগরিকরা জানে কীভাবে বিদ্রোহ করতে হয়! #জান২৫

প্রার্থনারত জনগণ, যে দৃশ্য দিনে পাঁচবার পুনরাবৃত্ত হয়। ছবি ফ্লিকারের ফ্লোরিস ভন কুয়েলার্টের( সিসি বাই-এসএ ২.০)
রাতে অনেকটাই শান্ত, তবে একই চেতনা বিদ্যমান। রবিবার রাতে @তারেকশালাবাই বলেছেন:
তাহরির স্কোয়ারে শীতল বর্ষণমুখর রাত। গান আর কবিতায় উৎসবের/বিনোদনের মেজাজ।#জান২৫
@এস্টার৪এনজি৩ডি বলেছে:
এখন উচ্চ স্বরে উল্লাসের গান বাজছে। জনগণ নাচছে আর তালি দিচ্ছে #তাহরির
এক রাতে শান্তি, স্বাধীনতা আর পরিবর্তনের জন্যে এগিয়ে আসা মিশরীয় তারুণ্যকে উদযাপন করতে “জনগণের ক্ষমতা“ গানটিতে সবাই সমস্বরে কণ্ঠ মিলিয়েছিল:
কোন কোন দিন ভিন্ন রকম আর বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, রবিবারে @একরামইব্রাহিম টুইটারে লিখেছে:
১ - কপ্ট সম্প্রদায়ের জমায়েতের পরে, খ্রিস্টান ও মুসলমানরা হাতে হাত ধরে #তাহরিরে প্রার্থনা সঙ্গীত গাইছে, এমন চমৎকার মনোভাব [আগে] কখনো দেখা যায়নি। #তাহরির#জান২৫
২- আজ #তাহরির স্কোয়ারের এক দম্পতির বিয়ে হয়েছে। ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুন। খুবই সৃজনশীল ও উষ্ণ মনোভাব বজায় রয়েছে। #জান২৫#মিশর
@এস্টার৪এনজি৩ডি অনেকের প্রদর্শিত একটি অনুভূতি প্রকাশ করেছেন:
নিশ্চিতভাবে #তাহরির এখন #মিশরের সবচেয়ে সুখের স্থান। #জান২৫
এই পোস্টটি ২০১১ সালে মিশরের প্রতিবাদ বিপ্লব সম্পর্কে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ