মিশর: তাহরিরে আমার ৭৩ বছর বয়স্ক বাবা

এই পোস্ট মিশর প্রতিবাদ ২০১১ এর বিশেষ কভারেজের অংশ

গতরাতে মিশরের নাদিয়া এল আলওয়াদি টুইট করেন যে, আজ তাঁর ৭৩ বছর বয়স্ক বাবাকে তাহরিরে নেওয়ার জন্য তাঁর (নাদিয়ার) একটি হুইলচেয়ার প্রয়োজন। তাহরির এর সেই স্থানে রবিবারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিশরীয় খ্রিস্টান জনতা সমবেত হয়েছে।

সত্যিই তিনি তাঁর বাবাকে নিয়ে যান, নাদিয়া তাঁর বাবাকে নিয়ে কায়রোর সে স্থান যেখানে হোসনী মুবারকের পদত্যাগের দাবিতে মুখরিত সে ঐতিহাসিক স্থানটিতে সময় কাটান এবং একাধিক টুইটের মাধ্যমে তাঁর অনুভূতি আমাদের কাছে প্রকাশ করেন।

Nadia's father and other protesters take cover from the rain under the Egyptian flag

নাদিয়ার বাবা ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মিশরীয় পতাকার নিচে

চলুন আমরা নাদিয়া আর তাঁর বাবার সাথে তাহরির স্কোয়ারে যাই:

@ নাদিয়া ই খ্রিস্টান জনতার সাথে যোগদানের জন্য তাহরিরের পথে। আমার অসুস্থ, দাড়িওয়ালা গোড়া মুসলিম ৭৩ বয়স্ক বাবা আমার সাথে #জান২৫ # মিশর

যদিও সে কোন হুইলচেয়ার জোগাড় করতে পারেনি তবুও নাদিয়া আর তাঁর বাবা ট্যাক্সি করে স্কোয়ারে পৌছে এবং সেখান থেকে তাঁরা পায়ে হেটে জনতার সাথে যোগ দেয়।

@ নাদিয়া ই – আমার বাবা তাহরিরে তাঁর জীবনের সময় খুঁজে পেয়েছেন! তিনি বলেন যে তাঁর বাবা শেষ পর্যন্ত মুক্তির গন্ধ পেয়েছেন #মিশর

@ নাদিয়া ই আমার বাবা একে এক সেনাসদস্যদের সাথে করমর্দন করে তাহরিরে প্রবেশ করেন, এবং তাঁদের বলেন: ছেলেরা তোমরা কখনো মিশর ছেড়ো না।

তাহরিরে জনতার জমায়েত শুরু হলে নাদিয়া আমাদের জানান কিভাবে মুসলিম এবং মিশরের খ্রিস্টানরা হাতে হাত ধরে নতুন দিনের প্রত্যাশায় স্লোগান মুখরিত হয়ে ওঠেন।

এক হৃদয়স্পর্শী টুইটে, তিনি আমাদের ব্যক্ত করেন তাঁর বাবার উপর বিষয়টির প্রতিক্রিয়া:

খ্রিস্টান জনতার মাঝে আমি আমার অশ্রুসজল বাবাকে ধরে রেখেছিলাম।

তিনি আরো বলেন:

একটা বিষয় আমি আপনাদের বলতে পারি: তা হল এই যে তাহরিরে মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা নিজেদের মধ্যে সহিংসতায় লিপ্ত নয় #মিশর#জানু২৫

প্রতিবাদের সংঘর্ষের দিনগুলোতে সরকারি ভাড়াটে গুণ্ডা আর নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে জনতার সংঘর্ষের ফলে মিশরীয় খ্রিস্টানদের ভোগান্তির বিষয়টি নাদিয়া তুলে ধরেছেন।

তিনি টুইট করেন:

একজন মিশরীয় খ্রিস্টান এ বিপ্লবে আহত হন-তাঁর হাতে পট্টি বাধা- কণ্ঠে যিশুর গান

আরো বলেন:

আহত মিশরীয় তরুণ খ্রিস্টান জাতীয় সঙ্গীত গাইছেন।

তাঁর বাবার ঘটনায় ফিরে এসে নাদিয়া জানান কিভাবে তাঁর বাবা জনতার সাথে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন:

মাথায় আঘাত পাওয়া লোকটি বাবার হাতে চুমু দিতে চেষ্টা করেন কিন্তু বাবা তাঁকে প্রত্যাখান করেন আহত লোকটির হাতেই চুমু দেন#মিশর৩জানু২৫

আরেকটি টুইটে নাদিয়া বলেন : আমাদের সংস্কৃতিতে কর চুম্বন সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক।

তিনি আরো বলেন:

বৃদ্ধাঙ্গুল উঁচিয়ে বাবা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে শান্তি চিহ্ন প্রদর্শন করে ছবি তোলার জন্য দাঁড়ান। সত্যিই তিনি ব্যাপারটি উপভোগ করেছেন!#মিশর#জানু২৫

তিনি তাঁর বাবার সাথে তাহরিরের জনগণের কথোপকথন তুলে ধরেন:

৬০ বছর বয়সের একজন আমার বাবাকে বলেন: “ আমাদের প্রজন্ম সিনাইকে মুক্ত করেছিল আর এ প্রজন্ম মিশরকে মুক্ত করবে#মিশর”।#জানু২৫

@নাদিয়া ই : বাবা পরিবারের সাথে বলেন: আমি আমার জীবনে তিনটি মিশরীয় পতাকা দেখেছি। চতুর্থ পতাকা বলবে স্বাধীনতা, ন্যায় বিচার ও সমতা।

নামাজের পর বাবা ও মেয়ে একসাথে তাহরিরে যান:

বাবা আর আমি তাহরির পুরো চক্কর দেই। সামনের দিকে একটা ফিল্ড হাসপাতালে যাই, বাবা ডাক্তারকে ডাকেন এবং তাঁর কর চুম্বন করেন।

ছবি : নাদিয়া আল আওয়াদির সৌজন্যে

এ পোস্ট মিশর প্রতিবাদ ২০১১-এর বিশেষ কভারেজের অংশ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .