গ্যাবন: অদৃশ্য বিদ্রোহ

মিশর সংকটে সবার দৃষ্টি থাকায় গ্যাবনের প্রতিবাদ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। সাংবাদিক রক্ষার জন্য গঠিত কমিটির (সি পি জে) মোহাম্মদ কেতিয়া গ্যাবনের প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেল টিভি+ এর সমাপনী আলোচনায়  ভুয়া সংবাদে কেন প্রকৃত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়না সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। আলি বঙ্গো সরকারের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোকে তিনি গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করেন। মধ্য আফ্রিকার এ ছোট দেশটিতে আলি বঙ্গো ও তাঁর রাজনৈতিক দলের সদস্যরা যে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে তা তাদের জন্য মোটেও সাধারণ বিষয় নয়। বঙ্গোর দলের বাগাড়ম্বরপূর্ণ কৌশল হল বিরোধী দলকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা।

বঙ্গো রাজনৈতিক দলের সদস্য সেকু ওমর দোম্বিয়া আলি বঙ্গোর ফেসবুক পাতায় লিখেন:

“Continuez de travailler et laissez les ridicules rêver.”

“কাজ করে যাও এবং হাস্যকর  জনতাকে স্বপ্ন দেখতে দাও”

তা সত্বেও মনে হয় পরিস্থিতি আরো জটিল: গত পাঁচ দিনে দেশ অনেক নাগরিক অস্থিরতা দেখেছে। আফ্রিকা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া সাময়িকী ধরণের ওয়েবসাইট আইকিউফোরনিউজ বলে- “মিশরে প্রচার মাধ্যমের দৃষ্টি থাকায় ব্যাপকাংশে অলক্ষ্যে রয়ে গেছে” গ্যাবনের প্রতিবাদ।

লিবারভিলে গণবিক্ষোভ এবং ইউএনডিপি ভবন আক্রান্ত

স্থানীয় আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ। এ ঘটনার প্রচার হয়েছে এবং বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গত শনিবার রাজধানী লিভারভিলে ক্যারিফোর রিও এক মিছিলের আয়োজন করে। ২০০০ এরও বেশি এম্বা ওবামের সমর্থকরা আলি বঙ্গোর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নেয় এবং তাঁদেরকে গণবাহিনীর মোকাবেলা করতে হয়।

লিবারভিলে ক্যারিফোর রিওর প্রতিবাদ মিছিল, ২৯ জানুয়ারি ২০১১

এ বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে এমবা ওবামের সমর্থক ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সহিংস সংঘাত ঘটে। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার স্থানের কাছের এক বস্তিতে বিক্ষোভকারী গণ পুলিশকে কোণঠাসা করে ফেলে।

একই দিনে লিভারভিলে এম্বা ও তাঁর সরকার  জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ভবনে আশ্রয় গ্রহণ করায় সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য আদেশ দেওয়া হয়। ক্যামারেড নামের একজন গ্যাবনিজ আন্দোলনকারী তাঁর ব্লগ (ফ্রা)-এ আক্রমণে আহতদের ছবি পোস্ট করেন:

২৯ জানুয়ারি ২০১১-এ ইউএনডিপি তে আক্রমণের পর এম্বা ওবামের রাজনৈতিক কর্মী (সি) লেপোস্ট এ ক্যমারেড

গ্যাবনী জনগণের কণ্ঠস্বর (লা ভো পিপল গ্যাবনে এলভিডিপিজি) তাঁদের ওয়েবসাইটে(ফরাসী ভাষায়) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন ৩১ জানুয়ারি সোমবার দেশের উত্তরাংশে বিতাম এ ২০০০ এর ও বেশি জনতা বিক্ষোভ করেছে। একই সাইটে আরও বলা হয় ২রা ফেব্রুয়ারি লিবারভিলের বিভিন্ন জেলায় দাঙ্গা সংগঠিত হয়। আতং আবেতে একজন পুলিশ আহত হন।

ফ্র্যান্কলিন টুইটারে ব্যাখ্যা করেন:

“Gabon:Crise politique:Soulèvements populaires en cours; quartiers pauvres de Nkembo, Cocotiers, Gare-routière, Atong Abè. Un blessé grave.”

“গ্যাবন: রাজনৈতিক সঙ্কট: কেম্বো, কোকোটিয়ারস, গারে রুতিরি, আতং আবের মত দরিদ্র জেলাগুলোতে গণজাগরণ এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে; একজন গুরুতর আহত।”
মেয়ো-কাই উত্তর গ্যাবন, ২রা ফেব্রুয়ারি ২০১১

মেয়ো-কাই উত্তর গ্যাবন, ২রা ফেব্রুয়ারি ২০১১

“তিউনিসিয়ায় বেন আলি ভেগেছেন। গ্যাবনে আলি বেন বহিস্কৃত হবেন।”

২ ফেব্রুয়ারি দাঙ্গার পর লিবারভিলের আতং আবেতে গাড়ি জ্বলছে

সহমর্মী ও নির্বাহীদের গ্রেফতারের ঢেউ

গত পাঁচ দিনে প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল ইউনিয়ন (এনইউ) এর ১২ জন নির্বাহী ও সহমর্মী জনগণকে গ্রেফতার করা হয়। কোয়াচি.কম এনইউ-এর সভাপতির একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশকরে। তাতে বলা হয়:

“A 5 heures du matin plusieurs compatriotes ont été arrêtés, brutalisés et transférés au camp Aïssa (caserne du Bataillon des parachutistes gabonais), puis au camp de gendarmerie de Gros-Bouquet, avant d’être finalement gardés à vue, à partir du 28 janvier, dans les sous-sols de la Direction générale des Recherches de la Gendarmerie Nationale et ce, au mépris de la loi qui interdit toute garde à vue au-delà de 72h.”

“ভোর ৫ টায় আমাদের সহকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়, নির্দয়ভাবে পেটানো হয় এবং তাঁদের আইশা ক্যাম্পে পাঠানো হয় (গ্যাবনি প্যারাট্রুপারদের ছাউনী), সেখান থেকে গ্রস-ব্যান্কুয়েট পুলিশ স্টেশনে পাঠানো হয়। ২৮ জানুয়ারি থেকে তাঁদের ন্যাশনাল জন্ডারমারির রিসার্চ জেনারেল ডিরেকশন সেলে রাখা হয় যা ৭২ ঘন্টার অন্তরীণ রাখার পরিপন্থী।”

পরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো বেন মোবাম্বা আজ সকালে সংসদ সদস্য আলেক্সিস বেনগোনের ছেলের অপহরণের বিষয়ে টুইট করেন:

“গ্যাবনে সংগঠিত দমন ও নৃশংসতা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মুখ ঢাকা লোকদের দ্বারা অপহৃত হয়েছেন ।#রিভোগাব #মিশর #তিউনিসিয়া #সিভ২০১০

অনেকে ধারণা করেন তাঁর অনলাইন  সক্রিয়তার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তিনি সামাজিক নেটওয়ার্ক “গ্যাবাও রে পাবলিকা” চালান এবং সম্ভবত: তিনি তাঁর নিবন্ধ “গ্যাবন: গণতান্ত্রিক অনুভূতির অনুসন্ধানে এক প্রজন্ম”-এর মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে জাগরণের চেষ্টা চালান।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .