তিউনিশিয়া: তালার এক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা

তিউনিশিয়ার ব্লগ খায়াল ওয়া লায়াল (ঘোড়া এবং রাত্রি) তালার এক রমণীর লেখা চিঠি পোস্ট করেছে (আরবী ভাষায়)। এই চিঠিতে তারা এই কয়দিন যে ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে, তার কিছু বর্ণনা করেছে।

তালা তিউনিশিয়ার রাজধানী তিউনিশ থেকে ২০০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত একটি এলাকা। সংবাদে জানা গেছে: গতকাল যখন পুলিশ গুলি ছোঁড়ে, তখন এখানে ছয়জন লোক মারা যায় এবং ছয়জন লোক আহত হয়।

তার চিঠিতে, ভদ্রমহিলা লিখেছে:

بدأت الإعتصمات منذ سنة 2008 لكن رغم تتاليها في السنوات الأخيرة لم يستجب أحد لمطالبهم رغم بساطتها كان آخرها إثر وفات البوعزيزي مع العلم انها كانت سلمية في ظل القمع المتواصل للسلطة و في ظل غياب ابسط الحريات كحرية التعبير كان مقاومة رجال الأمن للمتظاهرين القطرة التي افاضت الكأس فتم إحراق اول رموز النظام دار التجمع واول رموز انتهاك الحرمات مركز الشرطة

২০০৮ সালে আমাদের এই প্রতিবাদ শুরু হয়, কিন্তু আগের বছরগুলোতে আমাদের বার বার দাবি সত্ত্বেও, কেউ আমাদের দাবির প্রতি সাড়া দেয়নি, যদি এই দাবিগুলো ছিল খুব সাধারণ। আমাদের সর্বশেষ দাবিটি বোয়াজিজির মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে দিয়ে তৈরি হয়। এখানে আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, শাসকদের ক্রমাগত চাপের মাঝেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাতে থাকি এবং আমরা মৌলিক কিছু অধিকারের দাবি জানাই, যেমন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবি। প্রতিবাদকারীদের উপর নিপীড়ন চালানোর বিষয়টি ছিল শেষ প্রচেষ্টা। তাইতো প্রতিবাদকারীরা, শাসকের প্রথম যে প্রতীক, একত্রিত হবার জন্য তৈরি করা সভাকক্ষ এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের প্রথম প্রতীক, পুলিশ স্টেশন পুড়িয়ে দিয়েছে।

চিঠিতে আরো লেখা রয়েছে:

كان ذلك ليلة الإثنين الماضي… الثلاثاء 10 صباحاً حاول تلاميذ معهد الخروج في مظاهرات تم حصارهم داخل المعهد نجح البعض في الهروب فيما خنق الباقون بالقنابل المسيلة للدموع وفي تمام 12 نجح الباقون في الخروج وبدأت المواجهات. نام أهالي المدينة البارحة على أصوات الرصاص الحي و إستفاقوا على نواح أمهات الشهداء وأصوات القرأن و بدا الحداد. تم حصر عدد الشهداء وهم كالآتي: أحمد عمري 17 سنة تلميذ ، أحمد بلعابي 30 سنة ، أيمن رطيبي 14 سنة ،مروان جملي 19 سنة بكالوريا ،غسان شنيتي 18 سنة جزار العائل الوحيد للاسرة كل هذا و تونس مشغولة بلقاء الترجي التونسي والنجم الساحلي وما كنت نتيجة اللقاء بين أهل، حبيبتي تالة، الأعزل و قوات مدججة بالسلاح !!!!!!!!!!!!!!!!!!وتواصل القمع بقطع الكهرباء والماء و كانت كل المحلات التجارية مغلقة وبصعوبة تم نقل الجرحى للعلاج وحتى دفنهم اشترط السفاحون أن يتم على يد نساء المدينة !!! وفي لحضة تشييع جثمان أحد الشهداء هوجم الأهالي بالقنابل المسيلة لدموع حتى إسقاط النعش!!! و بعد محاولة عديدة تم دفنهم وفي طريق العودة جوبهوا أيضاً بالرصاص والقنابل هذا وأفاد مصدر موثوق من المستشفى المحلي بتالة وفاة ممرض من جراء الصدمة بعد هجوم قوة الأمن
সেদিন ছিল শেষ সোমবার। মঙ্গলবার বেলা ১০ টা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেবার জন্য প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার চেষ্টা করতে শুরু করে। সে সময় নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের ঘিরে রেখেছিল, কিন্তু তার মধ্যে দিয়ে কয়েকজন ছাত্র পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এদিকে, অবশিষ্ট ব্যক্তিদের কাঁদানে গ্যাসের ধোয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম হয়। বিকেল বেলা বাকীরা এলাকা ত্যাগ করতে সমর্থ হয় এবং সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। গত রাতে শহরের লোকজন গোলাগুলির শব্দে ঘুমাতে পারেনি এবং আজ সকালে তারা শহীদ জননীর কান্নার শব্দে জেগে উঠে। সকাল বেলা কোরান পাঠের শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে। যে সমস্ত ব্যক্তিরা এই ঘটনায় শহীদ হয়েছে, তারা হচ্ছে: আহমেদ কাদরি; ১৭ বছরের এক ছাত্র, আহমেদ বালা’বি; বয়স ৩০ বছর, আইমান রুতাবি; বয়স ১৪ বছর, মারওয়ান জামিল; বয়স ১৯ বছর, এবং ঘাসান সেনতি, যার বয়স ছিল ১৮ বছর। ঘাসান সেনতি পেশায় ছিল একজন কসাই, এবং সেই ছিল তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এই সকল ঘটনা তখন ঘটে, যখন সকলেই এক ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তারা আমার প্রিয় তালার নিরস্ত্র লোকজন এবং অস্ত্রসজ্জিত সেনাদের লড়াইয়ের ঘটনাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে, শাসক নিপীড়ন চালিয়ে যেতে থাকে। সকল দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং আহত লোকদের আমরা খুব কষ্ট করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সক্ষম হই। এমনকি যাদেরকে কবর দেওয়া হয়, তাদের কবর দেবার সময় বর্বর এই সব ব্যক্তি শর্ত জুড়ে দেয় যে, কেবল মহিলারা কবর দিতে যেতে পারবে! এবং যখন এক শহীদের লাশ নিয়ে সবাই যখন কবর দিতে যাচ্ছিল, তখন তাদের উপর কাঁদানো গ্যাসের হামলা চালানো হয়। এর ফলে লোকজন কফিনটিকে রাস্তায় রেখে সরে যেতে বাধ্য হয়। পরে বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর, তারা আবার মৃতদেহটিকে সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়, এবং তাদের ফিরে যাবার পথে শহীদ এই ব্যক্তিটিকে এক জায়গায় দাফন করা হয়। সে সময় আবার তাদের উপর গুলি এবং বোমা নিক্ষেপ করা হয়। তালার একটি হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলিতে এক নার্স মারা গেছে।

ভদ্রমহিলা এই বলে তার চিঠি শেষ করেছে:

ويسود تالة ألان حزنٌ وهدوء فهل هو الهدوء الذي يسبق العاصفة؟؟؟ أم ستستمر بحار الدم في ضل صمت و إستهزاء عجيب وتونس 7 التي تنقل الحقائق على غير حقيقتها ….
তালা এখন এক বেদনা এবং নীরবতায় ঢেকে রয়েছে। এটা কি, ঝড়ের পূর্বে সবকিছু নিরব হয়ে যাবার লক্ষণ? নাকি ক্রমাগত এক রক্তের নদীতে তিউনিশ ৭-এর (টেলিভিশন চ্যানেলের) মুখ ভরে যাবে, সেই চ্যানেল যে পুরো ঘটনাকে উপেক্ষা করেছে, যে চ্যানেল সত্য কথা বলেনি!!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .