- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

আর্মেনিয়া: পুলিশ ইমোসকে লক্ষ্যবস্তু করেছে

বিষয়বস্তু: মধ্য এশিয়া-ককেশাস, আর্মেনিয়া, জাতি-বর্ণ, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, মানবাধিকার, যুবা, শিল্প ও সংস্কৃতি, সঙ্গীত, সরকার

যদিও আর্মেনিয়া তুলনামূলক রক্ষণশীল এবং ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির এক দেশ, তারপরে সেখানে সংবাদে প্রকাশ যে পুলিশ, ইমোসকে [1]লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ইমোস হচ্ছে গতানুগতিক বিষন্নতায় ভুগতে থাকা বিশেষ গোষ্ঠী বা সাব-কালচার, বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের দলের সাথে যুক্ত (সঙ্গীতের ধারা), যা অনেক বেশী খোলামেলা মনের ব্লগার এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ভেতরে শঙ্কা এবং ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।

যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত মাসে বিশেষত আনজিপড তার চিন্তা ব্যক্ত করেন [2], ব্যাঙ্গাত্মক এক পো্স্টে উল্লেখ করেন যে, পুলিশ ইমোসের উপর হামলা চালিয়েছে এবং সেখানে গণ বিধ্বংসী অস্র জব্দ করেছ [3]

এর সকল কিছু শুরু হয় এক বা দু মাস আগে, যখন আর্মেনিয়ার প্রচার মাধ্যম পদ্ধতিগত ভাবে সংবেদনশীল প্রবন্ধ এবং সংবাদ ছাপা হতে থাকে, যা মূলত আর্মেনিয়ার যে সকল কিশোর-কিশোরী বা তরুণ-তরুণী, আত্মহত্যা করছে তাদের উপর। এই সব সাংবাদ তারা এদের আত্মহত্যার সাথে ইমোসেকে যুক্ত করে। বলার বাহুল্য, যদিও সকল ক্ষেত্রে নয়, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের দাবীর সাপেক্ষে কোন প্রমাণ হাজির করতে পারেনি, এই বিষয়ে কেবল তার ধারণা করেছে মাত্র।[…]

এবং কত সহজেই এই দাবী করা হয়েছে। কেউ খেয়াল করল না, কেন এই সমস্ত তরুণ ব্যক্তিরা আত্মহত্যা করল এবং অবশেষে তারা এই সব ঘটনার এক সহজ সমাধান বের করল। খুঁজে পেল জাতীর এক নতুন শত্রু। এ সব করা হল এই বিষয়ে “আলোচনা থামিয়ে” দেবার জন্য।

[…]

বাস্তবে এটা তরুণদের বিরুদ্ধে অনেক সংগঠিত এক আক্রমণ অথবা যে কেউ এই বিষয়কে যারা, ভিন্নভাবে দেখছে বা আচরণ করছে, এমন এক ভিন্ন অবস্থান, যা স্বাভাবিকতার ধারণা মধ্যে পড়ে না, “গ্রহণযোগ্য” চেহারা বা আচরণ নয়, তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ।

ইমিগ্র্যান্ট ইমো, আর্মেনীয় নয় এমন একজনের ব্লগ। যে সাব কালচার বা বিশেষ গোষ্ঠী বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তিনি সংবাদপত্রে প্রকাশিত ভূল তথ্য প্রদান করার কথা উল্লেখ করেছেন [4], কিন্তু মনে করেন যে, এই সব সংবাদ স্থানীয় সামাজের সাধারণ মানসিকতার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে।

একেকটি দিন অতিক্রান্ত হচ্ছে এবং ইমো ক্রমেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এইবার, তাকে ভুল ভাবে নিষিদ্ধ এক সংস্কৃতি হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস, হয়ত ভুল নয়, কারণ যে ভাবে ইমো চিন্তা এই নতুন এলাকায় প্রয়োগ করছে, যদিও সাইরানুয়েস জিওভারজিয়ান চিহ্নিত করেছেন যে, ইমোসের উৎস সাধারণ সব বিভ্রান্তির কারণ। তবে সেই সংজ্ঞা জিওভারজিয়ান-এর আদি আর্মেনিয়ার সংজ্ঞা।

[…]

ইমোর ভাষাকে কি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে? জিওভারজিয়ান, জনতাকে এই ধারণা দেবার ক্ষেত্রে এর কৃতিত্ব পুরোনো প্রচার মাধ্যমকে প্রদান করছেন, সাথে তুলনামূলকভাবে কিশোরদের প্রতি সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছেন- যে সব কিশোররা দারুণভাবে গতি পরিবর্তন করে, কিন্তু এখানে তার এই নিজ দেশে, সংস্কৃতি ব্যক্তির ভাষায় প্রকাশ হয়।

[…]

তবে, আর্মেনিয়ার জনগোষ্ঠী তার ইতিহাসের সাম্প্রতিক দশক ও শতকে যে কঠিন সময় পার করে এসেছে, তার কথা বিবেচনা করলে, আমি মনে করি এবং (আশা) করি এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে নিষ্পাপ ভাবনার চেয়ে বেশি পরিমাণ বিদ্রোহের চেতনা বিরাজ করবে, জিওভারজিয়ান যে ভাবে এই বিষয়ে বর্ণনা করেন, তাতে ইমো ফ্যাশান সম্বন্ধে অনেকটা একই অনুভূতি তৈরি হয়। অন্য ভাবে বলা যায়, তারা এটি তাদের নিজস্ব উপায়ে করছে এবং তা শক্ত ভাবনার উপর তৈরি, বিশেষ করে ভুল বুঝে থাকা অনেক ব্যক্তিগত মানুষের চেহারায়।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে, এই সব ঘটনা আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে দৃশ্যমান হচ্ছে, যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আনজিপড টুইট করেছে যে, রোলিং স্টোন পত্রিকা এই বিষয়টিকে তুলে এনেছে। এই ঘটনার উপর প্রকাশিত সংবাদের উপর একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে [5]যা গ্লোবাল ভয়েসেস-এর ককেশাস এলাকার সম্পাদকের তোলা।

ছবি©অননিক ক্রিকোরিয়ান-এর

এখন রোলিং স্টোন পত্রিকা ইমোর উপর পুনরায় অভিযান চালানোর বিষয়টি #আর্মেনিয়ায় পোস্ট করেছে, পুলিশ প্রধানের সিদ্ধান্ত বিচিত্র[…] @রাইটপুডিং-এর মাধ্যমে পাওয়া [6]

এছাড়া, যদিও আর্মেনিয়াতে সংখ্যায় অনেক কম ইমোস সদস্য রয়েছে, সেখানে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে, এর নাম ইইউনাইটেড ইমোস অফ আর্মেনিয়া [7], তাদের সমর্থনে এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এখানে লেখা প্রথম দিকের একটি পোস্টে আনজিপড উল্লেখ করেছে যে, কিছু স্থানীয় ব্লগার, তাদের নিজস্ব প্রচারণা “আই এম ইমো” চালু করেছে। সম্ভবত সবচেয়ে সৃষ্টিশীল পোস্ট এসেছে আলখাইমিক-এর কাছ থেকে [রুশ ভাষায়]

এক ব্লগার, যাকে তার ন্যাড়া মাথার কারণে তাৎক্ষনিক ভাবে চেনা সম্ভব, সে নিজের ছবিতে খানিকটা পরিবর্তন এনে, নিজেকে ইমো হিসেবে উপস্থাপন করে নিজের ছবি পোস্ট করেছে।

Господин главный млица Армении решил, что ему отныне нечем заняться, посему надо начать отлавливать эмо. Вот здесь — предыстория, группа в фейсбуке. Комитет защиты эм в ярости!

Отвали от детишек, мужик!

Или и меня задержи, и с побоями увези в кутузку, ибо

Я — ЭМО!

আধা সামরিক বাহিনীর প্রধান সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তার আর করার কিছুই নেই। তাই সে ইমোসের পেছনে লেগেছ। এখানে ফেসবুকের একটি গ্রুপ, এর পেছনের ঘটনা তুলে ধরছে। ইমো রক্ষা কমিটিকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। “বাচ্চা ছেলেরা” হাত উত্তোলন করুন। অথবা আমাকে গ্রেফতার করুন এবং মারতে মারতে থানায় নিয়ে যান, কারণ আমিও একজন ইমো!

সংবাদ সূত্রানুযায়ী, আর্মেনিয়ার পুলিশ প্রধান বলেছেন যে, তিনি ইমোসকে বিপজ্জনক বলে মনে করেন। এমনকি, যদি অনেকে মনে করে যে, এই দেশে ইমোসের সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র, তারপরেও তারা আর্মেনিয়ার জীন পুল (ঐতিহ্য) নষ্ট করছে।

এর উত্তরে, এবং কি ভাবে আর্মেনিয়া একজন ভিন্ন চিন্তাধারা পোষণ করা ব্যক্তিকে সাধারণত খারাপ ভাবে দেখা হয়, তা উল্লেখ করার জন্য, কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী একটি ইউটিউব ভিডিওর গান পোস্ট করেছে, যা এক পপ-পাঙ্ক কিশোর কেড গেয়েছে, গানের শিরোনাম “এস এমো চেম (আমি ইমো নই)”।