ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র: শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ৪% দাবি করা হচ্ছে

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে গত নভেম্বর থেকে শিক্ষার মান নিয়ে একটি বিতর্ক চলছে। বিতর্ক মূলত ছিল সাধারণ শিক্ষা আইনের একটি বিশেষ বিষয়ের ব্যাপারে যেখানে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থের কথা বলা ছিল যা বাৎসরিক শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। কার্যত ৬৬-৯৭ নম্বর আইনের ১৯৭ ধারায় আছে যে বাৎসরিক শিক্ষা খাতে সরকারের ব্যয় গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট এর ৪% হতে হবে, কিন্তু আসলে এটা মাঝে মাঝে ২% এর কম হয়েছে।

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র প্রায় শিক্ষার ক্ষেত্রে ল্যাটিন আমেরিকাতে সর্বনিম্ন স্থান দখল করে রাখে। তাই কোয়ালিসিওন পোর উনা এডূকাশিওন ডিগ্না (যোগ্য শিক্ষার জোট) নামে অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান এই ব্যাপারে জোর দিয়েছিল শিক্ষাকে খরচ না বিবেচনা করে বিনিয়োগ হিসাবে দেখতে বলেছে। ফল হয়েছে যে নভেম্বরের প্রথম দিন হতে দেশের বেশ কিছু স্থানে বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রথমটা রাজধানী সান্টা ডোমিঙ্গোতে, যেখানে প্রেসিডেন্ট আর কংগ্রেস অবস্থিত।

এই বির্তক সংবাদপত্র, টেলিভিশন আর রেডিওতে সব থেকে প্রধান খবর হয়ে আছে। ওয়েব ২.০ তেও এর প্রভাব পরেছে যেখানে ব্লগ আর সামাজিক নেটওয়ার্কের সাইট বিশেষ করে টুইটার আর ফেসবুকে ‘শিক্ষায় জিডিপির ৪%’ এর সমর্থনে সবাই সোচ্চার হয়েছে। নিউইয়র্ক আর মাদ্রিদে বাস করা ডোমিনিকানরাও এই পদক্ষেপের ব্যাপারে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন এই বিবেচনায় যে ভালো শিক্ষা ভবিষ্যৎের উন্নয়ন আর সাফল্যের জন্য প্রয়োজন। পোন্টে নিস্তিদো ব্লগ মাদ্রিদের বিক্ষোভের কথা সংক্ষেপে জানিয়েছে:

El movimiento dominicano del 4% llego a las tierras madrileñas donde dominicanos tambien exigieron al gobierno el 4% a la educacion, lo hicieron frente a la Embajada Dominicana en Madrid.

ডোমিনিকার ৪% এর জন্য আন্দোলন‘ মাদ্রিদ শহরে এসে পৌঁছেছে যেখানে ডোমিনিকানরা তাদের সরকারের কাছে দাবি করছে ৪% শিক্ষার জন্য, মাদ্রিদে ডোমিনিকোর দূতাবাসের সামনে তাদের দাবি উপস্থাপন করে।

এই আন্দোলনের দাবি ৪% এর জন্য আসলে নভেম্বরের আরো আগে আরম্ভ হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে, ইন্টারনেটে একটা ভিডিও দেখা গেছে যা ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র শিক্ষার বাস্তবতা তুলে ধরেছে, আর এর সাথে অন্যান্য দেশের তুলনা করেছে।এই ভিডিও, যা টেলিভিশনেও দেখানো হয়েছিল, আরো তুলে ধরেছে খারাপ শিক্ষা ব্যবস্থা আর উচ্চ মাত্রার ধনী আর দারিদ্রের মধ্যকার সম্পর্ক। অক্টোবরের শেষের দিকে এই আন্দোলন কেবলমাত্র গতি পাচ্ছিল আর নভেম্বরের শেষের দিকে অনেক টুপি, ছাতা, শার্ট আর স্টিকার দেখা যাচ্ছিল যারা শিক্ষায় ৪% ব্যয়ের দাবি করছে।

হলুদ রঙ প্রচারণার প্রতীক হিসাবে নির্ধারিত হয়েছে, এমনভাবে যে ডিসেম্বরে বেশ কিছু লুনেস আমারিলোস (হলুদ সোমবার) কর্মসূচী নেয়া হয়েছে: কংগ্রেসের সামনে আর অন্যান্য কৌশলগত স্থানের সামনে বিক্ষোভ করা হয়েছে শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনের দাবি পূরণের জন্য। ৬ তারিখ থেকে হলুদ সোমবার শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে, প্রতিনিধিদের চেম্বার একটা সেশন করেছেন ২০১১ এর প্রস্তাবিত বাজেটে সম্মতি জানানোর জন্য, কিন্তু আগের মতোই তারা শিক্ষার জন্য জিডিপির ৪% এর বেশ কম বরাদ্দ দিয়েছেন। অন্য কথায়, এটা ৪% এর ম্যান্ডেট না মানার ধারার ব্যত্যয় ছিল না। সেশনের শেষের দিকে, বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা খোলাখুলিভাবে ৪% এর সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন, আর বাজেটে তা পাশ হয়নি। বিশেষ একটা কমিশনে এটা পাঠানো হয় দেখার জন্য যে বাজেটটি আইন অনুযায়ী কিনা।

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ২০১১ সালে বাজেটের বিষয়গুলো ঠিক করে দেয়ার পরে, সরকার লাগাতার বলে যাচ্ছেন যে তারা ৪% এর হিসাব রাখতে পারবেন না কারন অর্থ দেয়ার মতো যথেষ্ট সামর্থ তাদের নেই। এর পরেও আর সম্ভবত চাপের কারনে এই ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট যোগ্য শিক্ষার জোটের সাথে আর সামাজিক আর শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্যদের সাথেও একটি সভা করেন। সভা শেষে রাষ্ট্র প্রধান শিক্ষার জন্য বাজেট ১০ মিলিয়ন ডমিনিকান পেসোতে বাড়ানোর (প্রায় ২৭১ মিলিয়ন ইউএস ডলার) একটা পরিকল্পনা দিয়েছেন, যার ফলে বিনিয়োগ করা মোট অংক জিডিপির প্রায় ২.৭৫% পর্যন্ত বাড়বে। একই ভাবে বেশ কয়েক বছর ধরে লাগাতার একটা বৃদ্ধি হবে। তবে এই প্রস্তাব যেসব দল ৪% চাচ্ছেন তারা নাকচ করে দিয়েছেন।

৪% প্রচারণা নিয়ে অবশ্য ভিন্ন মতও রয়েছে। যদিও সব থেকে ভালো হতো যদি বেশীরভাগ মানুষ একমত হতো, কেউ কেউ আছেন যারা মনে করেন যে একদল বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদ এর পিছনে আছে। আর বেশ কিছু মন্তব্যকারী প্রেসিডেন্টের সাথে একমত যখন তিনি বলেন যে শিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থের থেকে আরও ভালো কিছু রয়েছে আর এর অনেক প্রমান আছে। পিসা রিপোর্ট আর গ্রেট ব্রিটেনের পরিস্থিতির উল্লেখ করা হয়েছে যা দেখাচ্ছে যে শিক্ষার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বেশ বেড়ে গেছে কিন্তু শিক্ষার মানের দিকে এর অবস্থান এখনো ইউরোপের সব থেকে নিম্ন মানের ধরা হচ্ছে। অন্যরা যেমন আহিকোপ্রেন্ডে থেকে জোসে আরনেস্তো দেভারেজ ব্লগ স্বীকার করেন যে এই ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ঠিক, কিন্তু তারপরেও দেশের বর্তমান শিক্ষার অবস্থাকে তিরস্কার করেছেন:

Sin embargo, en algo sí estoy de acuerdo con el Dr. Fernández: a la hora de encarar la problemática de nuestro sistema educativo, el dinero no lo es todo. Barnizar con fondos la actual situación sin previamente definir una estrategia a seguir sería un error monumental. Sería como buscar extinguir un incendio utilizando el personal, los equipos, el camión, y los agentes incorrectos. La situación se agrava si no disponemos de un plan definido. Esto solo me suena a un potencial despilfarro de dinero…

তবে, কিছু ব্যাপারে, হ্যাঁ, আমি ডঃ ফার্নান্ডেজের সাথে একমত: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যার সম্মুখীন আমরা যখন হই, অর্থ তার কোন সমাধান একেবারেই না। বর্তমান পরিস্থিতিকে ঢেকে রাখলে বা আগে কোন কৌশল না ঠিক করে আরো বেশী পেসো দিয়ে রঙ চড়ালে খুব বড় ভুল হবে। এটা ভুল লোক, যন্ত্র, ট্রাক আর এজেন্ট ব্যবহার করে আগুন নেভানোর মতো হবে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে আমরা যদি নিজেদের একটা সঠিক পরিকল্পনা না দেই। এটা ভালোভাবে অর্থ নষ্ট করা হবে বলে মনে হচ্ছে…

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .