উইকিলিকস, থাইলিকস, ইন্দোলিকস এবং পিনয়লিকস

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় উইকিলিকস এর অনুরূপ কয়েকটি সাইট চালু হয়েছে; এগুলো হচ্ছে থাইল্যান্ডের থাইলিকস, ইন্দোনেশিয়ার ইন্দোলিকস আর ফিলিপাইনসের পিনয়লিকস। এই মাসে সমস্ত ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা/চালু হয়েছে। উইকিলিকস যে সমস্ত কাজ করা শুরু করেছে, সেগুলোকে সমর্থন করার এবং নিজ নিজ দেশের সরকারের গোপন বিষয় উন্মোচন করার লক্ষ্য এসব সাইট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
থাইলিকস নামক ওয়েব সাইট থাইল্যান্ডে উইকিলিকসকে আবার জাগিয়ে তুলেছে, কারণ থাইল্যান্ড সরকার উইকিলিকস সাইটটি বন্ধ করে রেখেছে।

কোন এক অজানা কারণে থাই সরকার সে দেশে উইকিলিকসের সাইটে প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এর মানে হল থাইল্যান্ডের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এবং ওয়েব ব্যবহারকারীরা বর্তমান নেটভিত্তিক এই স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিতে পারছে না। বিশ্বের যে কোন প্রান্তেই এটা গ্রহণযোগ্য নয়। যার ফলে আমরা উইকিলিকসে থাইল্যান্ড সংক্রান্ত যত নথি রয়েছে সেগুলোকে সহজে নামানোর ব্যবস্থা করেছি।

বিশেষ তথ্য-এই লেখাটি থাই রাষ্ট্র বা রাজ পরিবারের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করে লেখা হয়নি। এটা তথ্য স্বাধীনতাকে অবাধ করার এক উদ্যোগ।

উইকিলিকসে থাইল্যান্ড সংক্রান্ত যে সব নথি প্রকাশ হয়েছে, থাইকেবলস সেই সব নথি প্রকাশ করেছে।

ব্যাংককে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রায় ৩০০০ কেবল বা নথি, যেগুলো মূলত ২০০৫ সাল থেকে ফ্রেব্রুয়ারি- ২০১০ সাল-এর মধ্যে পাঠনো হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। এমআইএসটিরি দ্বারা উইকিলিকসে প্রকাশিত নথিপত্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা তৈরির বিষয়টি হবে কেবল এক সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আমরা সেন্সরশিপের বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি যে, উইকিলিকস সহ ইন্টারনেটে যে সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়, তাতে থাইল্যান্ডের সকল নাগরিকের প্রবেশের অধিকার থাকা উচিত। এই কারণে এই ব্লগের উৎপত্তি।


১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উদযাপন দিনটিতে ইন্দোলিকস চালু করা হয়। এর ট্যাগলাইন (মূল বাণী) হচ্ছে “সেবাবা ইনফরমাসি আদালাহ হাক আসিস”, বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে “কারণ তথ্যের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার”।

আত্মপ্রকাশের দুদিন পরই, ইন্দোলিকস-এর কর্তারা জানাচ্ছে যে, এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা লোকজন প্রায় ১০০,০০০ টি নথি নামিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় এক মিলিয়ন ব্যক্তি এই সাইটে প্রবেশ করে।

এখন পর্যন্ত এটা একটিভিস্ট মুনীর হত্যাকাণ্ড, সিডোয়ারজোর ভূমিধস, এবং ইন্দোনেশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের এক আলাপচারিতার অনুবাদকৃত সরকারি নথি প্রকাশ করেছ। এই আলোচনার বিষয়টি ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুর এলাকায় ইন্দোনেশিয়ার আক্রমণের আগে দুটি দেশের নেতাদের ইন্দোনেশিয়ার নীতি নিয়ে আলোচনা।

ইন্দোলিকস-এর গতি লাভের ব্যাপারে আপারকেইস ব্লগ বলছে:

এটি ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের মতামত প্রদান ছাড়াই, মূল নথিপত্র জমা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, কারো নাম উল্লেখ না করেই এই সব নথি প্রকাশ করা হচ্ছে। এই সাইট কোন ব্যাংকের বিস্তারিত হিসাবপত্র, মধ্যবর্তী কোন ঘটনার বর্ণনা বা অন্য কোন ব্যক্তিগত নথি প্রকাশ করছে না।

একই সাথে এই ওয়েবসাইটের ত্রুটি সম্বন্ধে তারা লিখেছে:

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইন্দোলিকসের কাজে কিছুটা অপেশাদারিত্ব মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যেমন তারা গুগল ডকসের মত গণ সাইটে নথিপত্র প্রকাশ করেছে এবং সাইটের মালিক এক জিমেইলের ঠিকানা ব্যবহার করেছে, এ কারণে যে সমস্ত নথিপত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং নাম প্রকাশ না করার মধ্যে যে সমস্ত যোগাযোগ তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এই মুহূর্তে, সাইটের কর্মকর্তারা, যাতে সাইটির সংকেত ভাঙ্গা যাতে না যায়, না তার ব্যবস্থা করেছে, এবং না তারা সাইটে প্রবেশ করা করা ব্যক্তিদের কি ভাবে ইন্টারনেটে নাম গোপন রাখা যায় সে ব্যাপারে কোন উপদেশ প্রদান করছে। আর যারা সাইটে প্রবেশ করছে বা কোন তথ্য প্রদান করছে, তাদের পরিচয় গোপন রাখার বা তাদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।


১ ফ্রেব্রুয়ারি ,২০১১ সাল থেকে পিনয়লিকস নামক সাইটটি ফিলিপাইনসের দুর্নীতির ঘটনার নথিপত্র প্রকাশিত করা শুরু করবে।

পিনয়লিকস একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা ফিলিপাইনের জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ করার জন্য নিবেদিত। তারা ব্লগ জগৎে নানান দুর্নীতির প্রমাণ জমা করছে। এই সাইট জানাচ্ছে, নাম গোপন রেখে যারা তথ্য প্রদান করতে চায়, সেই সমস্ত আওয়াজ সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের জন্য আমরা নিশ্চিত এবং নিরাপদ এক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

পিনয়লিকস হচ্ছে অনেকটাই উইকিলিকসের মত, তবে এর ব্যতিক্রমী দিক হচ্ছে এটি কেবল দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ করার উপর মনোযোগ প্রদান করে থাকে। এই সাইট কেবল ফিলিপাইনসের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং পিনয়লিকস ঐতিহ্যবাহী প্রচার মাধ্যমের বদলে কেবল ব্লগারদের মঝে দুর্নীতির সংবাদ ছড়িয়ে দেবে।

পিনয়লিকস স্পষ্ট করছে যে, উইকিলিকসের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই

আমরা এই বিষয়ে মনোযোগ প্রদান করতে চাই, আমরা উইকিলিকস প্রবেশ করার চেষ্টা করছি, সেখানে প্রবেশ করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে উইকিলিকসের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।

ফিলিপাইনসকে দুর্নীতি এবং এবং দারিদ্রমুক্ত তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্র থেকে উন্নত এক জাতীর রাষ্ট্রে রুপান্তরিত করার ক্ষেত্রে পিনয়লিকস যাতে ভূমিকা পালন করতে পারে, তার জন্য দয়া করে সাইটটিকে সাহায্য করুন।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .