দক্ষিণ কোরিয়া: বিনামূল্যে স্কুলে খাদ্য পরিবেশন নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে ছিল বিনামূল্যে স্কুলে খাদ্য দেয়ার ব্যবস্থা নিয়ে ঘোরতর বিতর্ক, যখন সংখ্যালঘু বিরোধী দল সমর্থ হয় সংসদে একটি আইন পাশ করাতে যা স্কুলে বিনামূল্যে খাদ্য পরিবেশনের আওতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্ষমতাসীন গ্রান্ড ন্যাশনাল দল এই আইনকে জনপ্রিয়তা লাভের নীতি হিসাবে তিরস্কার করেছে। কোরিয়ার জনগণ, যারা বেশ কয়েক মাস আগে এই ধারনাকে সমর্থন করেছিলেন, দ্রুত এই বিলের বিপরীতে গিয়েছেন যেহেতু তারা বুঝতে পেরেছেন যে বিনামূল্যের খাদ্যের মানে হলো বাড়তি সরকারী খরচ।

কোন রাজনীতিবিদ হয়তো নেই যিনি ক্ষুধার্থ ছাত্রদের খাওয়ানোতে না বলবেন, অন্তত ভোটারদের সামনে। কিন্তু সমস্যা দেখা দিচ্ছে এই ধারনাতে যে বাধ্যতামূলক বিশ্বব্যাপী বিনামূল্যের খাদ্য পদ্ধতিতে যার ফলে স্কুলের সকল বাচ্চা বিনামূল্যে খাওয়ার পাবে, যার মধ্যে খাবার কেনার সামর্থ আছে এমন ছাত্ররাও পড়ে। সিউলের মেয়র ওহ সে-হুন এই ব্যাপারে তার ব্লগে লিখেছেন এই ধারনাকে তিরস্কার করে যে এটা ‘জনপ্রিয়তা পাওয়ার ধারনা যা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে’, আর তিনি বিরোধী সাংসদদের উন্মুক্ত বিতর্কে আহ্বান জানিয়েছেন।

민주당 시의원들의 이 망국적인 포퓰리즘 전략을 어떻게 막아낼 수 있을지 정치인으로서의 책임감으로 가슴은 점점 더 답답해져 갔습니다…선거 때 ‘무상급식'이 달콤한 반짝 효과를 거뒀을지는 몰라도 성숙한 우리 사회는 이제 부자 아이들에게까지 지급되는 전면 무상급식에 반대하는 데 힘을 실어주고 있습니다[…]무상급식은 결국 세금급식이요, 부자급식이며, 보편적복지가 아닌 무차별적 복지입니다. 게다가 아직 서울시의 많은 학교는 무상급식을 할만한 물적, 인적 조직이 전혀 갖춰져있지 않습니다.

আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সাংসদ হিসাবে বিশাল এই দায়িত্ব নিতে। আমি যখন পথ খোঁজার চেষ্টা করছি এই জাতি ধ্বংসকারী, তোষক পদক্ষেপ থামানোর জন্য যা গণতান্ত্রিক দলের নগর কাউন্সিল প্রস্তাব করেছেন…’ বিনামূল্যের খাদ্য’ কার্ড হয়তো অল্প সময়ের জন্য গ্রীষ্মের নির্বাচনের আগে কাজে দিয়েছে, কিন্তু পরিপক্ক কোরিয়ান সমাজ ঝুঁকে পড়ছেন পুরো দস্তুর বিনামূল্যের খাদ্য প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য যাতে ধনী বাচ্চাদের ও খাওয়ানো হয়। বিনামূল্যের এই খাওয়ার আসলে ‘কর- খাওয়া’ আর ‘ধনী- খাওয়া’। [এটার উল্লেখ করে যে এই খাদ্যের অর্থ দেয়া হচ্ছে মানুষের কর থেকে আর এটা ধনী বাচ্চাদের ও দেয়া হচ্ছে] এটা সামগ্রিক খেয়াল করা না, বরং লাগামহীন কল্যান। এছাড়া সিউলের অনেক স্কুল এটার জন্য প্রস্তুত না ভৌত কাঠামো আর লোকবলের দিক থেকে।

ছবি রাস্পবেরী সিটকমের সৌজন্যে – অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত

ব্লগার রাস্পবেরি সিটকম কোরিয়ার এই ঘটনাকে অন্যান্য উন্নত দেশ যেমন ফিনল্যান্ড আর ডেনমার্কের সাথে তুলনা করে যারা তাদের উন্নতমানের কল্যান ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। তিনি তর্ক করেছেন যে যদিও তিনি একটা সর্বাত্মক কল্যান ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, বর্তমান ব্যবস্থাকে ঠিক করতে হবে। বর্তমানের বাছাই করা বিনামূল্যের খাদ্যের ব্যবস্থার মধ্যে, দরিদ্র শিশু যারা স্কুলের খাদ্য কিনতে অসমর্থ, যারা প্রায় খাওয়া বাদ দেয় পুরো ক্লাসের সামনে অসম্মানজনক অবস্থায় পড়ার থেকে, যেহেতু তাদেরকে তাদের কম আয়ের প্রমান হিসাবে কাগজ জমা দিতে হয় শিক্ষকের কাছে বিনামূল্যের খাদ্যের জন্য আবেদন করতে হলে।

우리나라에서 무상 급식의 비율은 전체의 17% 수준이다. 이는 선진국의 비율에 비하면 현저하게 낮은 수치이다. 그렇다고 이것을 한 번에 100%가까이 끌어올리는 무상 급식을 당장 시행하기에는 우리나라의 실정을 고려하지 못한 이념에 치우친 주장이 될 수밖에 없다[…]저소득층만 대상으로 급식비를 지원하는 것이 더 타당해 보일 수 있다. 하지만 현재까지 이루어져왔던 저소득층 시혜적 복지는 아이들의 자존감을 지켜주지 못했다. 스스로 가난을 증명해야만 가난을 인정하는 현실은 안타까울 뿐이다[…]시혜 대상자를 선별하려고 하다가 교묘한 틈새로 빠져나가 형편이 되는데도 급식지원을 받았다거나, 실제 어려운 상황임에도 급식 지원을 받지 못해 밥을 먹지 못하는 상황인 아이들도 있다.

বর্তমান অবস্থার সাথে কোন চিন্তা না করে বর্তমানের শতকরা ১৭ ভাগ থেকে একবারে ১০০ ভাগে বিনামূল্যের খাদ্যের হার বাড়ানো বেশ দূরের ব্যাপার। যদিও মনে হয় যে কম আয়ের পরিবারের বাচ্চাদের বিনামূল্যে খাদ্য দেয়া অনেক বেশী যুক্তিসংগত কথা, বর্তমান ব্যবস্থা বাচ্চাদের সম্মান রক্ষা করতে অসমর্থ হয়েছে। এটা কষ্ট লাগে দেখতে যে বাচ্চারা নিজেরা কাগজ জমা দিচ্ছে নিজেদের দরিদ্র প্রমান করার জন্য। বাছাই এর সময়ে, বিনামূল্যের খাদ্য প্রায় তাদের কাছে যায় যারা বিভিন্ন ফাঁক ব্যবহার করেন এই খাবার পাওয়ার জন্য, আর এর ফলে যেসব বাচ্চাদের প্রয়োজন তারা এটা পায়না।

মানুষ যা চিন্তিত হচ্ছে তা হলো বিশাল বাজেটের খরচ যা বিনামূল্যের খাদ্য দেয়ার সাথে সম্পৃক্ত। ধারনা করা হচ্ছে সকলকে খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ৭০ বিলিয়ন কোরিয়ান ওন (১ মিলিয়ন ইউএস ডলার) যা সিউল শহরের বাৎসরিক বাজেটের শতকরা ০.৪ ভাগ এর সমান । নাভের প্রশ্ন উত্তর ফোরামে নেটিজেন আইডি: আ সিডাব্লুজে ৮৮৪২ মন্তব্য করেছেন:

무조건적인 무상급식은 한편으로는 평등이라는 면에서 보면 옳은 것으로 보일 수 있으나, 이는 오히려 평등이라는 이름하에 불평등을 초래할 수 있다고 생각됩니다, 민주당에서 무조건적이고 전면적인 무상급식을 의결하는 것은 현실을 무시한, 정말로 사회주의를 꿈꾸는 몰상식한 처사라고 생각됩니다, 무상급식을 의결한 당신들이 먼저 의정활동비란 명목으로 받아 가는 돈을(물론 의원으로 일하는 동안의 돈이죠) 모두 무상급식비로 기부(?)하는 모습으로 모범을 한번 보여주시죠.

বিনা শর্তের বিনামূল্যের খাদ্যের ব্যবস্থা ভালো মনে হতে পারে সমতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে। কিন্তু সমতার বিশাল নামের আড়ালে এটা অসমতা বাড়াচ্ছে। গণতান্ত্রিক দলের বিনা শর্তে, সব বিনামূল্যের খাওয়ার দেয়ার আইন পাশ করা একটা অদ্ভুত বাম্পন্থী পদক্ষেপ যার সাথে বাস্তবতার কোন সম্পর্ক নেই। যারা এই আইনের সমর্থন জানিয়েছেন [রাজনীতিবিদদের প্রতি] তাদের উচিত ভালো একটা উদাহরণ স্থাপন করা এই আইন পাশের জন্য যতো অর্থ পেয়েছেন তা এটাকে কার্যকর করার জন্য দান করে।

ছবি রাস্পবেরী সিটকমের সৌজন্যে – অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত

টুইটার ব্যবহারকারী @ কেনেডিয়ান৩ ডাউমস আগোরা ব্লগে জোর দিয়ে বলেছেন যে এই ধারনা জনপ্রিয় না, কিন্তু একটা পদক্ষেপ যেটা পরবর্তী প্রজন্মকে সাহায্য করবে।

(의무급식은) 우리 아이들의 위화감과 정서적 상처도 줄일 수 있습니다. 실제로 제 트위터에는 지방에서 교사로 계신 분이 아이들의 3분의 1만 급식지원을 받는데, 일부 부모들이 아이가 낙인 찍힐까봐 급식지원 신청을 하지 않는다고 소식을 전해주셨습니다. 그리고 친환경 식단으로 우리 아이들 건강을 지켜서 장기적으로 각종 성인병 예방해서 미래의 의료비용, 즉 복지비용 지출을 줄일 수 있습니다[…]그런 면에서 의무급식을 잘 운용하면 오시장이 걱정하는 과도한 복지 지출이 추후 발생할 소지를 오히려 현저히 줄일 수 있습니다.

[বাধ্যতামূলক বিনামূল্যের খাদ্য ব্যবস্থা] কমাতে পারে অসামঞ্জস্যের বোধ আর মানসিক ক্ষত যা আমদের বাচ্চাদের সাথে থাকে। টুইটারের মাধ্যমে একটা অঞ্চলের শিক্ষক আমাকে জানিয়েছিলেন যে মাত্র এক তৃতীয়াংশ বাচ্চারা বিনামূল্যে খাদ্য স্কুল থেকে পাচ্ছে। আর কিছু বাবা মা এই খাবারের জন্য আবেদন করেন না এই কারনে যে তাদের সন্তানরা কোন হীনমন্যতায় ভোগে (দরিদ্র হওয়ার জন্য)। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা যদি আমাদের সন্তানদের সুস্থ খাদ্যাভাস দিতে পারি, আমরা বাচ্চাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে পারি আর ভয়ঙ্কর ভাবে মোটা হওয়া থেকে থামাতে পারি, আর এরই ফলে খাদ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট খরচ ভবিষ্যতে কমাতে পারি। যদি সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হয় আমরা তাহলে অতিরিক্ত বাজেটের খরচ কমাতে পারি যা নিয়ে মেয়র ওহ চিন্তা করেন।

কেনেডিয়ানস৩ পরে জানিয়েছেন যে কোরিয়ানদের যা নিয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত তা হলো ‘কল্যান খাতে জনপ্রিয়তা‘ না বরং ‘উন্নয়ন খাতে জনপ্রিয়তা’। নগর সরকারের বিশাল সব স্টেডিয়াম তৈরির ব্যায়ের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে যেটাতে জনগণ ঢুকতে পারেনা, স্থানীয় বিমানবন্দর যেটা কেউ ব্যবহার করে না আর বিশাল সব সরকারী ভবন তৈরি করা কোন কারন ছাড়াই।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .