তিউনিশিয়া: বেকার এক যুবকের আত্মহত্যার প্রচেষ্টা দাঙ্গার সূত্রপাত করেছে

বেকারত্বের প্রতিবাদে এক তিউনিশীয় নাগরিক নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনা বেশ কিছু দাঙ্গার সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক প্রচার মাধ্যমে এই ঘটনায় সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং এর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।

তিউনিশিয়ার দক্ষিণের শহর সিদি বোউজিদের ২৬ বছর বয়স্ক নাগরিক মোহামেদ বোয়াজিজির ভাগ্যে সর্বশেষ কি ঘটেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তিউনিশিয়ার নেট নাগরিকরা, যথেষ্ট কর্মস্থানের অভাব, দুর্নীতি এবং দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য এই ঘটনাকে বেছে নিয়েছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগে মোহামেদ এর সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করে। মোহামেদ বোয়াজিজি কয়েক বছর আগে মাহদিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। কিন্তু তিনি কোন চাকুরী পাননি। পারিবারের একমাত্র রুটি রোজীর যোগান দাতা হিসেবে তিনি জীবন যাত্রা নির্বাহের জন্য অর্থ উপার্জনের সিদ্ধান্ত নেন এবং পরিবারের সাহায্যে তিনি রাস্তার পাশের এক ছোট্ট দোকানে ফল এবং সব্জী বিক্রি করা শুরু করেন। তার এই ব্যবসা থেকে খুব সামান্যই অর্থ আসত, তবে তা পারিবারিক মর্যাদা প্রদানের জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষের নজরে আসে এবং তারা বেশ কয়েকবার তার পণ্য জব্দ করে নেয়। তিনি কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তিনি ইচ্ছা করে এই কাজ করছেন না, বরঞ্চ বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে এই কাজ করছেন। তবে তারপরেও প্রতিবারই তার পণ্য জব্দ করে নেওয়া হয়েছিল, এছাড়াও তাকে অপমান করা হয় এবং পৌরসভার এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হয়। শেষবার যখন এই একই ঘটনা ঘটে, তখন মোহামেদ তার সব আশা হারিয়ে ফেলে এবং নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। জনাব রাষ্ট্রপতি তিউনিশিয়ার নাগরিকরা নিজেদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে (আরবী ভাষায়), এ রকম একটি গ্রুপ। তৈরি করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই গ্রুপটি ২৫০০ জন সদস্যের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এবং আজ পর্যন্ত তা ১০,০০০ জন সমর্থক লাভ করেছে। এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ এটিকে নিষিদ্ধ করে, যারা তাদের লৌহ মুষ্টি দিয়ে নাগরিকদের ইন্টারনেটে প্রবেশকে দমন করে রাখে।

এখানে দুটি স্ক্রিন ইমেজ বা ছবি রয়েছে, দ্বিতীয়টি প্রদর্শন করছে যে, যখন তিউনিশিয়ার নাগরিকরা এই সাইটে প্রবেশ এবং তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করছে, তখন তারা আসলে কি দেখে:
.

কয়েকজন ব্লগার এখানে কি ঘটেছে সে সম্বন্ধে লিখেছে এবং তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তিউনিশিয়া আঞ্চলিক ভাষায় বোউকাচেন এর লেখা পোস্টের শিরোনাম, সিদি বোউজিদ-এর গণহত্যা:

الحكاية يا جماعة ميش جديدة، عندها سنين حالة المناطق الداخلية ميزيريا تتحد في تسليطها على الناس الظروف المناخية و تهميش هالمناطق بكل لامبالاة و فرح دائم و طحين مستمر. اما الحكاية ما تاقفش هنا، لأنو الاعلام المنحط متاع بلاد العم بوكشان يمارس تعتيم كامل عالحكاية،…

এখানে যা ঘটেছে তা নতুন কিছু নয়। অনেক দুর্গম এলাকায় এই অবর্ণনীয় পরিস্থতি অনেক বছর ধরে চলে আসছে। এটা এই সমস্ত এলাকার জলবায়ু জনিত শর্তাবলি এবং প্রান্তিকীকরণের ফল, যা এক উদাসীনতার কারণে (কর্তৃপক্ষের) ঘটেছে। কিন্তু এখানে এই সব ঘটনার কখনোই পরিসমাপ্তি ঘটবে না, কারণ অবদমিত প্রচার মাধ্যম এই ঘটনার কোন সংবাদই প্রকাশ করেনি।

তিউনিশিয়ান গার্ল এর সাথে যোগ করেছে:

Dernièrement , les immolations par le feu se sont multipliées en Tunisie .Les acteurs de ces actions sont généralement des citoyens tunisiens qui ont perdu tout espoir en une vie descente . Chômage et pauvreté sont au rendez-vous et ont envenimé leur existence.

তিউনিশীয় সরকার এই সমস্যার অন্য কোন ভাবে সমাধান করতে না পেরে, কিন্তু এই কাহিনী যেন সব জায়গায় ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য সরকার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে এবং সিদি বোউজিদ শহরে প্রবেশের উপর প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, যেখানে লোকজন রাস্তায় নেমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

টুইটারে, এই বিষযে আলাপ চলছে, #সিদিবোউজিদ হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে তা তিউনিশীয় ব্যবহারকারীদের কাছে এক ধারায় পরিণত হয়েছে।

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .