কয়েকদিন আগে, মালয়েশিয়ার সংসদ, বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের সংসদ সদস্য পদ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ‘এক মালয়েশিয়াকে’ নামক ধারণাকে ‘এক ইজরায়েলের’ নামক ধারণার সাথে যুক্ত করার জন্য তাকে এই শাস্তি প্রদান করা হয়। ইব্রাহিম একই সাথে অভিযোগ করেছিল যে, এ্যাপকো ওয়ার্ল্ডওয়াইড নামক যে প্রতিষ্ঠান বিশ্বজুড়ে গণ সংযোগের কাজ করে, উভয় প্রচারণা পেছনে তারাই কাজ করছে।
একদিকে এমন অনেকে রয়েছেন, যারা মনে করছেন যে আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথে অন্য যে তিনজন সংসদ সদস্যদের (সংসদের শৃঙ্খলা বিষয়ক অনুসন্ধান-এর সমালোচনা করার পর যাদের সদস্য পদ বাতিল করা হয়) এই রকম ভাবে সাময়িক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে, তা অন্যায়।
গোহকক বলছে:
এটা ৫৩ বছর ধরে চলে আসা একদলীয় শাসনের ফল। এটি উদ্ধত ভাব তৈরি করে এবং দমনের মত ঘটনার জন্ম দিতে থাকে। জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত বৈধ সাংসদদের প্রতি এখানে কোন শ্রদ্ধা নেই। এবং তারা এক বৈধ বিষয়কে সংসদে উত্থাপন করেছিল (যেখানে এই বিষয়টি উত্থাপন করা উচিত)।
খো কায় পেং একই সাথে বিশ্বাস করেন যে এটা এমন এক সিদ্ধান্ত যা দেশটির জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না:
বিরোধী সাংসদ আনোয়ার ইব্রাহিম, কারপাল সিং, শিবরাশা এবং আজমিন আলিকে ছয় মাসের জন্য সংসদ থেকে বহিষ্কার করার বিষয়টি, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভের কারণে ক্ষমতার অপব্যহারের অন্যতম এক উদাহরণ।
এই কাজটি কোন ধরনের বাঁধা ছাড়াই বারিসান ন্যাশনাল নামক দলটির একক সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে সংসদে পাশ হয়ে যাবে। এর প্রভাব হবে ভয়াবহ, এবং এটি আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য এক দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হবে।
এই বিশাল সংসদ এখন পেরাক নামক রোগের দ্বারা আক্রান্ত হবে যা এখন এখানকার সকল সভায় এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। কল্পনা করুন সারা দিনের এক সংসদ সম্মেলনে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা বাজেটের সিদ্ধান্তে সংসদীয় আলোচনা কি করতে পারে? কিছুই না।
তবে এ রকম এক আবেগ রয়েছে যে বিরোধী দল (পাকাতান রাকায়াত ) নামক দলটি সরকারে থাকা বারিসান নাসিওনাল সরকারের চেয়ে আলাদা কিছু নয়, যেমনটা চার্লস হেক্টর জানাচ্ছেন।
কাউকে বরখাস্ত (সংসদ সদস্য) করার মধ্য দিয়ে, আপনি এক বিশেষ এলাকার জনগণের সংসদের/রাষ্ট্রীয় আইন পরিষদের কার্যবিবরণীর মধ্যে তাদের প্রবেশের অধিকারকে অস্বীকার করলেন…..
পাকতান রাকায়তের নামক দলটি, বিএন (বারিসান নাসিওনাল) নামক দলে চেয়ে ভালো হওয়া উচিত-কিন্তু হায়, কিন্তু তারা সেলাঙ্গর প্রদেশের আইন পরিষদের প্রাদেশিক সদস্যদের (বিএন আডুনস) সংসদের কার্য প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।
ব্লগার বিগগাম ডগমানমানস্টেইনবার্গ কয়েকটি মতামত প্রদর্শন করছে।
বাস্তবতা হচ্ছে: ক্ষমতা অপব্যবহারের প্রাক্তণ শিকার আনোয়ার, “নাটকীয়তার রাজা” ইব্রাহিমকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল যাতে সে সংসদে তার উত্থাপিত অভিযোগ এ্যাপকো-গেট দাবীর সাপেক্ষে সংসদীয় অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সামনে প্রমাণ এবং উপাত্ত উপস্থাপন করতে পারে। আনোয়ার ইব্রাহিম প্রবলভাবে তা করতে অস্বীকার করে। তার প্রতি যে জোরাল সন্দেহ, তা তার অতীতের ১৫ মাসের প্রথাগত “ঘৃণার রাজনীতি” কৌশলের প্রতি দিক নির্দেশ করে; যার ফলে তার প্রতি এক ভিত্তিহীন অভিযোগ তৈরি করা হয় এবং এটিকে চাঞ্চল্যকর সংবাদে পরিণত করা হয় এবং যখনই কোন অভিযোগের কারণে তাকে শাস্তি প্রদান করা হয়, তখনই পশ্চিমা ভিত্তিক প্রচার মাধ্যমের দ্বারা এটিকে বিতর্কিত করা হয় এই বলে যে, তিনি নেতৃত্বের লড়াইয়ের এক শিকার।
এ সব আসলে নতুন কিছুই না। এর আগে আমরা এমন সব দেখে এসেছি।
বিরোধীরা এই বরখাস্তের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার মানবাধিকার সংস্থার দপ্তরের দিকে যাত্রা করে এবং এই বিষয়ে তারা এক বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা দাবির পরিকল্পনার করছে।